TMC alliance

ফের একলা লড়ার ঘোষণা তৃণমূলের

কলকাতা

সেই বিজেপিকে সুবিধে পাইয়ে দিতে বিরোধী জোটে থাকবে না বলেই বার্তা দিল তৃণমূল। কলকাতায় শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায় ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সাংবাদিক সম্মেলনে তারা বলেছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি বিরোধী জোটে নাম লেখাবে না তৃণমূল কংগ্রেস। এ রাজ্যে একলাই ভোটে লড়বে তৃণমূল। সর্বভারতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়ায় যাবে না দল।


এই ঘোষণা যদিও সাগরদিঘির উপনির্বাচনের ফল বেরনোর কিছু পরে করে দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে আসন ছাড়বে এমন সম্ভাবনাও নেই। জাতীয় স্তরে কোনও নির্বাচনী জোট বিরোধীদের আলোচনার স্তরে নেই। তা’হলে বারবার মমতা ব্যানার্জির এমন ঘোষণা কেন সে প্রশ্ন রয়েছে। 
জাতীয় স্তরে শুক্রবারই সংসদ পণ্ড করেছে বিজেপি নিজেই। বক্তব্য রাখতে চেয়েও পারেননি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সেদিনই বিজেপি’র তুলনায় আক্রমণের জন্য কংগ্রেস এবং রাজ্যে বামপন্থীদের বেছে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। 
এর আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় প্রাক্তন বিজেপি যশোবন্ত সিন্‌হাকে প্রার্থী করেন মমতা। তখন সমর্থনের জন্য বিরোধী ঐক্যের পক্ষে প্রচার করেন দিল্লিতে বিরোধী নেতাদের বৈঠকে। এরপরই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে প্রার্থী করে বিজেপি। ফের বিরোধীদের থেকে দূরত্ব তৈরি করে তৃণমূল। ধনকরের বিরোধিতা করে ভোট দেয়নি মমতা ব্যানার্জির দল। 
এদিকে শুক্রবার সকালে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করেন সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব। পরে সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ২০২৪’র আগে ধর্মনিরপেক্ষ জোটের পক্ষে হানিকর কিছু করা উচিত নয়। তাঁর সংযোজন, ইডি এবং সিবিআই’কে অতীতে কংগ্রেস ব্যবহার করেছে। দিল্লি থেকে সরে যেতে হয়েছে কংগ্রেসকে।


২০১৯’র লোকসভা নির্বাচনে আগে মমতা ব্যানার্জি ফেডারাল ফ্রন্ট গঠনের ডাক দিয়েছিলেন। তবে ভোটে বিজেপি ফের জয়ী হওয়ার পর জাতীয় স্তরে ফ্রন্টের আর কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি মমতাকে। ২০২৪’র নির্বাচনের আগে ফের তাঁর এই সক্রিয়তা আসলে দেশে বিরোধীদের মধ্যে অনৈক্যের বার্তা প্রচার বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহলে বড় অংশ। সংসদের চলতি অধিবেশনে, আপ বা তেলেঙ্গানার বিআরএস কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলির সঙ্গে যৌথ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে। আদানিকাণ্ডে সরব বিরোধীদের থেকে দূরে সরে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসই।  
আগামী সপ্তাহেই ওডিশায় উড়ে যাচ্ছেন মমতা ব্যানার্জি। সেখানে নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।


রাজনৈতিক মহলের বড় অংশই মনে করছে যে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী জোটে এরকম আড়াআড়ি বিভাজনের প্রচার আসলে বিজেপি’কে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। তাঁরা মনে করাচ্ছেন যে তৃণমূল ও বিজেডি দু’টি দলই অতীতে বিজেপি’র জোট সঙ্গী ছিল। 
সমাজবাদী পার্টি কখনও বিজেপি’র জোটসঙ্গী হয়নি। তবে মুলায়াম সিং যাদবের হাত থেকে দায়িত্ব এখন অখিলেশের হাতে। তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি বিরোধিতার মাত্রা কমেছে বলে অভিযোগ রয়েছে সমাজবাদী পার্টির মধ্যেই।

Comments :0

Login to leave a comment