বিহারে বিপুল আসনে এগিয়ে রয়েছে এনডিএ। যদিও ভোটের শতাংশে বিরাট ফারাক দেখা যাচ্ছে না।
বিকেল চারটেয় বিজেপি এগিয়ে ৯৫ আসনে, জেডিইউ এগিয়ে ৮১ আসনে, জয়ী আরও ৪টিতে। সেই সঙ্গে লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) এগিয়ে ১৯ আসনে। এই এলজেপি-কে ২৯ আসন ছাড়া নিয়ে জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারের আপত্তি ছিল।
ভোট শতাংশে এনডিএ’র মধ্যে বিজেপি ২০.৭৮ শতাংশ, জেডিইউ ১৮.৮৮ শতাংশ।
বিরোধী মহাগঠবন্ধনে আরজেডি’র ভোটের হার ২২.৭১ শতাংশ, কংগ্রেসের ৮.৬৮ শতাংশ।
বিজেপি এবং জেডিইউ ১০১টি করে আসনে লড়লেও আরজেডি লড়েছিল, কিছু বেশি, ১৪১ আসনে। ফলে ভোটের শতাংশ লক্ষ্যণীয় হলেও আরজেডি মাত্র ২৪ আসনে কেন এগিয়ে, রাঘপুরে কেন্দ্রেও দলের নেতা তেজস্বী যাদবকে কেন দিনভর টানটানির মধ্যে পড়তে হলো তা নিয়ে কৌতুহল রয়েছে। চারটে নাগাদ তেজস্বী প্রায় ৫ হাজার ভোটে এগিয়েছেন তেজস্বী।
উল্লেখ্য, মুসলিম জনসংখ্যা বেশি এমন এলাকা সীমাঞ্চলে এআইএমআইএম ৫ আসনে এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু সীমাঞ্চল সহ সংলগ্ন অঞ্চলে এনডিএ জোটের ফলও ভালো হয়েছে।
বিহারে প্রচারে এসে অনুপ্রবেশকে আশ্রয় করে টানা বিভাজনের প্রচার করেছেন বিজেপি’র দুই শীর্ষ নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। এসআইআর-এ বিরোধী সমর্থকদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ ছিলই। বিজেপি নেতা এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও সরাসরি বিভাজনের প্রচার চালিয়েছেন। এই এলাকায় এনডিএ’র আসন জয়ের হারও বেশি।
সে কারণে মহিলা ভোটের পাশাপাশি বিভাজনের রাজনীতির প্রভাব বিহারের ভোটে পড়ার সম্ভাবনা দেখছে বড় অংশ। ২০২০’র ভোটে লোক জনশক্তি পার্টির নেতা চিরাগ পাসোয়ান এনডিএ জোটে ছিলেন না। এলজেপি প্রার্থী দিয়েছিল নীতীশ কুমারের জেডিইউ’র বিরুদ্ধেই। নীতীশকে কোণঠাসা করতে বিজেপি’র ঘুঁটি ছিল এলজেপি। এবার এলজেপি এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহা দু’জনেই এনডিএ-তে ফিরে আসায় গতবারের তুলনায় এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা এনডিএ’র ছিলই। উল্লেখ্য, ২০২৪ লোকসভায় ৫টি আসনে জয় পেয়েছিল লোক জনশক্তি পার্টি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ দাবি করছেন শুধুই মহিলাদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া এনডিএ মূল চালিকশক্তি হয়নি, এর পিছনে রয়েছে মেরুকরণ ও বিভাজনের রাজনীতি। ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির পাশাপাশি জাত বিন্যাসকে সূক্ষ্মভাবে কাজে লাগিয়েছে এনডিএ। নীতীশের সমর্থকরাই বলেন যে তাঁদের প্রধান ভরসা মহিলা, অত্যন্ত পিছড়ে বর্গ বা ইবিসি এবং মহাদলিত। এই অংশ ফের সমর্থন জানিয়েছে।
বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের দাবি, মহিলা সব সব অংশে নীতীশ কুমারের পাশাপশি নরেন্দ্র মোদীর পরিকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগও ভোটে প্রভাব ফেলেছে।
এদিন গণনার গোড়া থেকেই এগিয়ে ছিল এনডিএ। মোকমায় জয়ী বাহুবলী প্রার্থী অনন্ত সিংহ। ভোটের সময়েই জনসূরয পার্টির এক নেতাকে খুনে অভিযুক্ত হয়ে তিনি জেলে।
তেজস্বী এবং মহাগঠবন্ধনের শরিক কংগ্রেস ও বামপন্থীরা প্রধান এজেন্ডা করেছিল শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানকে। সামনে আনা হয় বেকারত্বের প্রশ্নকে। তেজস্বী বারবারই বলেছেন, বিহারের যুবসমাজ ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য পরিবর্তন চেয়েছে। নির্বাচনী জনসভায় তেজস্বী সহ বিরোধী জোটের নেতাদের সভায় বেনজির জমায়েত লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তেজস্বীকে ঘিরে উন্মাদনাও কারও নজর এড়ায়নি। তাঁর দলের আসনের হিসেবের সঙ্গে মাটির অভিজ্ঞতাকে মেলাতে পারছে না বহু অংশ।
Bihar Assembly Elections
বিভাজনের প্রচার, সামাজিক বিন্যাসও প্রভাব ফেলছে বিহারের ফলে
×
Comments :0