MD SELIM

ঐক্যবদ্ধ লড়াই আমাদের মূল হাতিয়ার: সেলিম

জেলা রাজ্য

রাজু ভট্টাচার্য- শিলিগুড়ি

পশ্চিমবঙ্গে ২৬শের বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি ও তৃণমূল মানুষের মধ্যে বিষাক্ত পরিবেশ তৈরী করতে চাইছে,যেখানে জাত-পাত-বর্ণ-ধর্মের নামে মানুষকে বিভাজিত করা হবে। সেই বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সমস্ত বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে এক করে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঐকবদ্ধ লড়াই করতে হবে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, "পাহাড় থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত বামফ্রন্টের বাইরে বৃহত্তর বামশক্তি ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে এককাট্টা হতে হবে। এখনও যারা বাইরে আছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সকলকে একসাথে নিয়ে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আমরা কয়েক দিন আগে দেখেছি মাটিগাড়ায় মাংস নিয়ে যাওয়ার সময় বজরঙ দল কি রকম আচরণ করেছে।সেখানে একটা দাঙ্গার পরিবেশ তৈরী করলো সংঘ পরিবার। এদের সঙ্গে এক শ্রেণির সংবাদ মাধ্যম মানুষের মনের মধ্যে বিষ ঢুকিয়ে দেওয়ার কাজ করছে। মহেশতলা, মোথাবাড়ি, ধুলিয়ান, পহেলগাওঁয়ের ঘটনা দেখেছি। অপারেশন সিঁদুর দেখেছি। কিছু চ্যানেল একটি মিথ্যা খবরকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে পরিবেশন করে মানুষের মনকে বিষাক্ত করে তুলছে। এর বিরুদ্ধে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে  আমাদের এককাট্টা হতে হবে।ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।"
সেলিম আরও বলেন, "কসবায় আইন কলেজের ছাত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত তৃণমূলের কালীঘাটের খাস লোক। আবার টিএমসিপির ছাত্র নেতাও সে, তাকেও কর্মচারী করে দেওয়া হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে,কলেজের ছাত্রীরা,প্রাক্তনীরা বলছেন কলেজের ভেতর সেই নেতার ইচ্ছাই শেষ কথা ছিল। কলেজের পরিচালক মণ্ডলী,প্রিন্সিপাল কোন গুরুত্ব পেত না। যখন অভয়া কান্ড হয়েছিল, তখন মেডিকেল কলেজ গুলোতে থ্রেট কালচারের কথা শোনা গিয়েছিল। এই ভাবে সাধারণ কলেজ, প্রফেশনাল কলেজ সহ সমস্ত কলেজ প্রতিষ্ঠান গুলোতে তোলাবাজি, গুন্ডামী, ধর্ষণরাজ কায়েম করার জন্য তৃণমূল যে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিয়েছে তাঁরই এটা অঙ্গ। এর বিরুদ্ধে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বামপন্থীরা রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ সংগঠিত করেছে। তিনি বলেন,তামান্নাকে যে ভাবে খুন করা হলো। ভোটের আগে যে ভাবে মানুষকে শাসানো হয়। চারিদিকে ড্রাম ড্রাম বোমা উদ্ধার হচ্ছে, অথচ পুলিশ এখনো সেরকম ভাবে কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি। রাজ্যে সিপিআই(এম) করলে তৃণমূলের শাসানি দেখেছে গ্রামবাসীরা। রাজ্যে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে শাসক দল তৃণমূল। অথচ যারা এই নির্বাচন পরিচালনা করবেন সেই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নির্বাচন দপ্তর বিজেপি ও তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে।

সেলিম বলেন, "এখন ভোটার লিস্ট নিয়ে পরেছে। বাংলাভাষী মানুষ যদি অন্য রাজ্যে থাকেন, তাদের বাংলাদেশী বলে চালান দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা দেখেছি ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, আমাদের রাজ্যেও একই ঘটনা ঘটেছে। হরিশ্চন্দ্রপুরে ১৯ জনকে আটকে রেখে ছিল। গতকাল তারা মুক্ত হয়েছে। এখন বলছে ভোটার লিস্টে সন্দেহজনক ভোটার বের করবে। আসামে যেটা হয়েছিল। কেন্দ্রের সরকার ও রাজ্যের সরকার মিলে মানুষকে অধিকার তো দিচ্ছেই না। উল্টে অধিকার সংকুচিত করেছে। সেই যায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা আরও আন্দোলন সংগ্রামকে তীব্রতর করছি।যাই হোক না কেন আমরা সেখানে দ্রুত হস্তক্ষেপ করছি। মানুষেরও ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছি। সামনের তিনমাস ধরে গোটা রাজ্যে এই সবের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে। আগামী নির্বাচনে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই হবে আমাদের মূল হাতিয়ার।"

মঙ্গলবার অনিল বিশ্বাস ভবনের রতনলাল ব্রাহ্মণ্ সভা কক্ষে এক সভায়, মাদুরাইয়ে অনুষ্ঠিত ২৪ তম পার্টি কংগ্রেসের রিপোর্ট রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম পেশ করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সমন পাঠক। এদিন সিপিআইএম দার্জিলিং জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সমন পাঠক, গৌতম ঘোষ, নুরুল ইসলাম, দিলীপ সিং, সচিন খ্যাতি, কেবি ওয়াতার, ঝরেন রায়, জয় চক্রবর্তী ও সুষমা লাকড়াকে নিয়ে নয় জনের নতুন জেলা সম্পাদক মণ্ডলী গঠন করা হয়।

Comments :0

Login to leave a comment