রুহুল আমিন
ফের বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে বীরভূম জেলার মুরারই, পাইকর ও নলহাটি থানার ১৩ জন পরিযায়ী শ্রমিক হেনস্থার শিকার হলেন উত্তর প্রদেশের পুলিশের হাতে। তাঁদের সকলকেই থানায় আটক করে হেনস্থা করা রবিবার গভীর রাতে। এমনি অভিযোগ আটক পরিযায়ী শ্রমিকদের। রাজ্যসভার সাংসদের হস্তক্ষেপে তাঁদের সোমবার ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পাইকর থানার বোনহা গ্রামের রাহিম শেখ একজন লোহার পাতের ড্রাম তৈরির মিস্ত্রী। তিনি সহ ১৩জন শ্রমিক তাঁর কারখানায় কাজ করে উত্তর প্রদেশের বেহেরায় জেলায়। সেখানে ড্রাম তৈরির কারখানা আছে ১২ বছর ধরে। তিনি অভিযোগ করে জানান, বৈধ কাগজপত্র সহ একটি পিকআপ ভ্যানে তাঁরা ওই জেলায় ড্রাম ফেরি করে বিক্রি করেন। তিনি জানান, "রবিবার রাতে উত্তর প্রদেশের সিদ্ধার্থ নগর থানার জাতীয় সড়কে রাত ১২ টা নাগাদ উত্তর প্রদেশ পুলিশ আমাদের গাড়ি আটক করে। ওই গাড়িতে ছিলাম আমি সহ গাড়ি চলাক নিপেন মাল, কদম রসুল, কাবুল সেখ, সম্রাট সেখ, জাকির মোমিন,মাঞ্ছারুল মোমিন,জিকির সেখ, বিনোদ মাল, জাকির সেখ, আশরাফ সেখ, আশরাফ মোমিন ও কাজল সেখ। এদের বাড়ি পাইকর থানার বোনহা, কালিকাপুর, রুদ্রনগর, মুরারই থানার আম্ভুয়া ও নলহাটি থানার কয়থা গ্রামে। আমরা সবাই বাড়ি ফিরছিলাম।"
সোমবার পুলিশ তাঁদের ছেড়ে দেয়। বাড়ি ফিরে আসেন রাহিম শেখ, নিপেন মাল, কাবুল শেখ সহ চারজন। বাকিরা সেখানে থেকে গেছে। মঙ্গলবার বোনহা গ্রামের রাহিম সেখ অভিযোগ জানান, "রবিবার রাতে বাড়ি আসার সময় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আমাদের ১৩ জনকে আটক করে সিদ্ধার্থ থানায় নিয়ে আসেন। সেখানে পুলিশ আধিকারিক আমাদের জিজ্ঞাসা করেন তেরা নাম মোকাম কাঁহা? এই ভাবে এক এক করে সবাইকে জিজ্ঞাসা করার পর যখন জানতে পারে আমাদের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে এবং আমরা সংখ্যালঘু তখন পুলিশ বলে, জুতো দেখেছিস? সোজা করে দেব। তারপর নোংরা ভাষায় কথা বলে সারা রাত থানার হাজতে আটকে রাখে। আমাদের অপরাধ আমরা বাংলাভাষী। আমরা আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সব প্রমান দেখালেও পুলিশ বলে তোরা বাংলাদশী ঘুসপেটিয়া।"
তিনি আরও জানান, "পরে সকালে চা খাওয়ার জন্য একটি দোকানে যেতে দেয় এবং ফোন গুলি সব কেড়ে নেয় পুলিশ। সেই দোকানির ফোন থেকে লুকিয়ে বোনহা গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যকে সমস্ত ঘটনা ফোনে জানাই। পরে পরিয়াযী শ্রমিক কল্যান সমিতির রাজ্য চেয়ারম্যান ও রাজ্যসভার সাংসদের হস্তক্ষেপে পুলিশ আমাদের ছেড়ে দেয়। আমরা ১২ বছর ধরে সেখানে গাড়িতে করে ড্রাম ফেরি করে বিক্রি করি। কোনও দিন এই রকম পরিস্থির শিকার কখনো হয়নি
মন্তব্যসমূহ :0