বার্মার রাখাইনে ‘মানবিক করিডোর’নীতি ফিরে গভীর বিতর্ক শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। অন্তবর্তী সরকার বার্মার রাখাইন প্রদেশে ত্রাণ দেওয়ার জন্য এই করিডোরে সম্মতি দিয়েছে।
কোনও রাজনৈতিক সঙ্গে আলোচনা না করে এই নীতি ঘোষণা দেশের নিরাপত্তার পক্ষে ঝুঁকির হতে পারে বলে ক্ষোভ জানিয়েছে একাধিৌক রাজনৈতিক দল। সার্বভৌমত্বের পক্ষেও বিপদের আশঙ্কা জানানো হবেছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিও এই চুক্তি ঘিরে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার, বিতর্কের মাঝে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন যে করডোর নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সঙ্গে কোনও আনষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে রাষ্ট্রসঙ্ঘ চাইলে বাংলাদেশ সরকার ত্রাণ সরবরাহে সরঞ্জাম সরবরাহ করতে নীতিগতভাবে সম্মত।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে একাধিক সমস্যার কথা উঠেছে এসেছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো বিবৃতিতে বলেছে, মার্কিন যুদ্ধবাদী নীতির অংশীদার হয়ে আরাকানে মানবিক করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের পক্ষে বিপদ হয়ে দেখা দেবে। বার্মার গৃহযুদ্ধকে বাংলাদেশের সীমান্তে আহবান করা হবে। বার্মার গৃহযুদ্ধের অভিঘাতেই রোহিঙ্গা সঙ্কট।
ওয়ার্কার্স পার্টির বক্তব্য, মার্কিন যুদ্ধবাদী নীতি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে ন্যাটো সম্প্রসারণের লক্ষে কাজ করছে। বাংলাদেশে ঘন ঘন মার্কিন সামরিক জেনারেলসহ নীতি নির্ধারকদের আগমন, সরকারের সঙ্গে বৈঠক ইত্যাদি প্রমাণ করে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার মার্কিন নীতির অনুগামী হচ্ছে। বঙ্গোপসাগর-ভারত মহাসাগরকে ঘিরে বিদেশী শক্তির জন্য ভূ-রাজনীতির খবরদারি প্রদর্শনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সরকারের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়েছে বিএনপি সহ একাধিক রাজনৈতিক দল। বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছে, "আরাকানে মানবিক করিডোর প্রদানের সিদ্ধান্ত একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এ ধরণের সিদ্ধান্তের সাথে দেশের নিরাপত্তা, সামরিক ঝুঁকি, সার্বভৌমত্ব, এ অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর এ বিষয়ে অবস্থান - ইত্যাদি অনেকগুলো বিষয় যুক্ত এবং প্রত্যেকটিই গভীর পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের দাবি রাখে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে ঐক্যমত্য ছাড়া এবং সরকারের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট করে উপস্থাপন করা ছাড়া এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে সরকার একক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা। এ ছাড়াও এই ধরনের অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদসহ সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর যুদ্ধ চক্রান্তের শিকার হতে পারে বাংলাদেশ।"
বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভা বুধবার হয়েছে। বামজোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লিগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স সহ নেতৃবৃন্দ।
সভায় চট্রগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টারমিনাল হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্ব বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
Bangladesh Rakhine Corridor
আরাকান ‘মানবিক করিডোর’ ঘিরে বিতর্ক তীব্র বাংলাদেশে, উদ্বেগ ওয়ার্কাস পার্টিরও

×
Comments :0