জনজীবনের প্রয়োজনীয় বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে মোদী সরকার দেশের নাম নিয়ে টানাটানি করছে বিজেপি। ‘ইন্ডিয়া’ বিতর্কে মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক এবং পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম।
জি-টোয়েন্টি গোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে রাষ্ট্রপতি ‘ইন্ডিয়া’ বাদ দিয়ে ‘ভারত’-র উল্লেখ করেছেন। সে সম্পর্কে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে সেলিম বলেছেন, ‘‘বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হতে দেখে দেশের নামকেও ভয় পাচ্ছে বিজেপি! কী লজ্জার কথা! বিরোধীরা গণতন্ত্র রক্ষায় জনমত গড়ে তোলার অভিযানে নেমেছে দেখে মোদী সরকার জনগণের আলোচ্য বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে। মহম্মদ বিন তুঘলককেও হার মানিয়ে দেশের নামই পালটাতে চাইছে, কিন্তু দেশবাসী কখনই তা মানবেন না।’’
এদিন কলকাতায় মুজফ্ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের সংবিধানে লেখাই আছে, ‘ইন্ডিয়া দ্যাট ইজ ভারত’। এটা আমাদের গর্বের বিষয়। এই নিয়ে কোনও বিতর্কও নেই। ইন্ডিয়ান রেলওয়েকে আমরা ভারতীয় রেলও বলি। কিন্তু স্বাভাবিক বিষয়টিকে আরএসএস তাদের ফ্যাসিস্ট মনোভাবে, ‘এক দেশ, এক জাতি, এক ভাষা’ নীতি দিয়ে গুলিয়ে দিতে চাইছে। ‘ইন্ডিয়ান অয়েল’-কে কেউ ‘ভারতীয় তেল’ বলে? ‘কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড’-কে ‘কয়লা ভারত’ বলা হয়? আসল কথা লোকসভা নির্বাচনের আগে জনগণের ইস্যুগুলির থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে। কর্ণাটকে হারার পরে দক্ষিণ ভারত থেকে বিজেপি সাফ হয়ে গেছে। এখন হিন্দি বনাম অ-হিন্দি সংঘাত লাগাতে চাইছে।
দিল্লিতে জি-২০ বৈঠকের জন্য মোদী সরকার নিরাপত্তার নামে এমন ব্যবস্থা করেছে যে মেট্রো রেল থেকে অটো চলাচল বন্ধ করেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতের উল্লেখ করে সেলিম বলেন, জি-২০’র মতো আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলি পৃথিবীর যেখানেই হয় সেখানেই স্থানীয় বামপন্থীরা, নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা, শিশু অধিকার রক্ষার আন্দোলনের কর্মীরা, পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা এবং প্রগতিশীল অংশের মানুষজন নানা প্রাসঙ্গিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করে থাকেন। দিল্লিতে মানুষের কন্ঠস্বরকে ওরা এতই ভয় পাচ্ছে যে নিরাপত্তার নামে সব বন্ধ করে দিচ্ছে। সারা বিশ্বের চোখে ভারতে গণতন্ত্রের মান এতে বাড়ছে নাকি কমছে, বিচার করা দরকার।
Comments :0