চিন্ময় কর- ঝাড়গ্রাম

চাকরি চুরির সমস্ত দায় মুখ্যমন্ত্রীর। উনিই সিস্টেমকে কলুষিত করেছেন। এই সরকারের দুর্নীতির কারণেই আমাদের চাকরি গেছে। শনিবার চাকরি চোরদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলো ঝাড়গ্রামের আদিবাসী সমাজ। ঝাড়গ্রাম শহরের রাজপথে হয় বিক্ষোভ মিছিল। শ্লোগান ওঠে ‘চোর হঠাও বাংলা বাঁচাও।’ শালতলা মোড় থেকে সুভাষ মোড় হয়ে পাঁচমাথার মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ সাত কিলোমিটার চলে বিক্ষোভ মিছিল। রাজ্য সরকারকে ধিক্কার জানিয়ে পাঁচমাথা মোড়ে হয় বিক্ষোভ সভা প্রায় তিনঘন্টা চলে পথ অবরোধ।
আদিবাসী জনজাতির যোগ্য শিক্ষক শিক্ষাকর্মীরা বলেন, ‘‘আমাদের বেশীর ভাগ পরিবার ক্ষেতমজুর পরিবারের। বহু পরিশ্রম করে সহায় সম্বলহীন বহু পরিবার। যোগ্যতার সাথে চাকরি পেয়ে ঋণ নিয়ে ঘরবাড়ি করেছি। আজ আমরা সমাজের চোখে ‘অপরাধি’ রাজ্য সরকারের দুর্নীতির কারণে। প্রশ্ন তোলেন কেনো ওএমআর শিট প্রকাশ করলো না সরকার।’’ বিক্ষোভ মিছিল থেকে শিক্ষক শিক্ষাকর্মীরা বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অনুন্নোয়নের নাম করে জঙ্গলমহলকে এক সময় রক্তাক্ত করেছে। আবার উন্নয়নের নাম করে ধাপ্পাবাজি করেছে। আমারা নিরপরাধ এবং যোগ্য। দুর্নীতি করেছে সরকার। আর সেই দুর্নীতির দায়  আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে চাকরি চোরদের আড়াল করেছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আমাদের বারে বারে কিছু হবেনা বলে আশ্বাস দিয়ে ধোঁকা দিয়েছেন।’’ ক্ষোভের সঙ্গে তাঁরা বলেছেন, ‘‘এই জঙ্গল মহল থেকেই শুরু হবে ধোঁকাবাজ, ঠগবাজ সরকারকে হঠানোর তোড়জোর চলবে বিক্ষোভও।’’  শিক্ষক সমাজ প্রশ্ন তুলেছেন সিবিআই’য়ের তদন্ত নিয়েও। বলেছেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থা কেন এই দুর্নীতির তদন্তে ব্যার্থ। কেন পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সদর্থক পদক্ষেপ নিতে পারলো না। তার দায় কেনো সুপ্রিম  কোর্ট শুধু আমাদের উপর চাপিয়ে দিলো। 
এদিন চাকরিহারাদের এই আন্দোলনে সামিল হন জঙ্গলমহলের আদিবাসী সমাজ। অপরাধীদের শাস্তি, শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ দেখান। সেই সঙ্গে যোগ্য শিক্ষক  শিক্ষাকর্মীদের চাকরিতে বহাল রাখার দাবিও জানান। ঝাড়গ্রাম শহরে আদিবাসী যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী অধিকার মঞ্চ এই বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়। বিক্ষোভ ,মিছিলে স্লোগান ওঠে ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের সসম্মানে সবেতনে সপদে ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্য সরকারকেই নিতে হবে।’ ‘এক চাকরির জন্য দ্বিতীয়বার পরীক্ষা নেওয়া চলবে না।’ ‘নির্দোষ, যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মীদের জীবনের অধিকার লঙ্ঘন করা চলবেনা।’ ‘ যোগ্য ও অযোগ্য তালিকা প্রকাশ করে আমাদেরকে চাকরি সসম্মানে ফিরিয়ে দিতে হবে।’ দুর্নীতিতে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা।