শনিবার সেলিম বলেন, ‘‘হেমন্ত বিশ্বশর্মা যে ভাবে উচ্ছেদ করছে বুলডোজার চালিয়ে তা এরাজ্যেও তাই হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে বলা আছে পূনর্বাসন ছাড়া একজন ব্যক্তিকেও বাসস্থান বা জীবিকার জায়গা থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। এই উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বামপন্থীরা সর্বশক্তি নিয়ে নামবে।’’
আলিপুরদুয়ারের গণবস্তি থেকে বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করছে সরকার, পরিবেশ রক্ষার নাম করে। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেন, গণবস্তির মানুষদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। মাথার ছাদ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘‘পরিবেশ রক্ষা করতে হবে এই কথা বামপন্থীরা প্রথম থেকে বলে আসছে। কিন্তু মমতার সরকার পরিবেশ রক্ষার নাম করে ডুয়ার্স থেকে তরাই জমি লুঠ করছে। রিসর্ট তৈরি হচ্ছে তৃণমূলের মদতে। উল্টো দিকে গরিব আদিবাসীদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে।’’
সৌন্দর্যানের নাম করে রাজ্য জুড়ে হকার উচ্ছেদেও নেমেছে রাজ্য সরকার। কলকাতা সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে ফুটপাতে থাকা দোকান। কোনও জায়গায় কিন্তু তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে।
এদিন সেলিম বলেন, ‘‘আইন আছে ভেন্ডিং কমিটি তৈরি করে তাতে হকারদের প্রতিনিধি রেখে হকারদের জন্য জায়গা করে দিতে হবে। বড় বড় মল বাঁচাতে মমতা এই কাজ করছে। মানুষ যাতে অনলাইনে কেনা কাটা করে, মলে যায় তার জন্য এই কাজ করছে মমতা ব্যানার্জির সরকার।’’ তিনি বলেন, ‘‘বলছে চপ ভাজতে , চপের দোকান তো রাস্তাতেই হয়। মলে তো কোনও চপের দোকান হয় না। জবর দখল তুলতে গেলে আগে তৃণমূলের বেআইনি সব অফিস ভাঙতে হবে।’’
নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘সব দপ্তরে নিয়োগ দুর্নীতি হচ্ছে। কোথাও নিয়োগ হচ্ছে না কেন্দ্র এবং রাজ্যের। ভোটের আগে ভুয়ো নিয়োগ পত্র বিলি করেছে মমতা এবং মোদী। যারা দুর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, কেন আজ পর্যন্ত কোন বিচার হলো না? ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে এই চাকরি দেওয়ার, তাহলে কেন মুখ্যমন্ত্রীকে তলব করা হলো না?’’
গত একমাস রাজ্য জুড়ে দলবদ্ধ মারের ঘটনা প্রতিদিন প্রায় শোনা যাচ্ছে। কোথাও চোর সন্দেহে বা কোথাও ছেলে ধরা সন্দেহে। আবার কোথাও টাকা না দেওয়ায় মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে।
সেলিম বলেন, ‘‘২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে দলবদ্ধ মার শুরু হয়। কখনও ধর্মের নামে কখনও জাতের নামে। আইনের শাসন না থাকলে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। স্বৈরশাসনের মনোভাব এটা। ক্ষমতার দম্ভের যে রাজনীতি তা জায়গা করে নিচ্ছে। সাধারণ প্রশাসন যখন অকেজো হয় যায়, টাকায় বিক্রি হয়ে যায়, তখন যারা এদের কিনে নিয়েছে তারা তখন তালেবর হয়ে ওঠে।’’
আশঙ্কা প্রকাশ করে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেন, ’’পুলিশ গত ১০ বছর সিপিআই(এম)-কে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল তৃণমূলের কথায়। এখন সবাই আক্রান্ত। ভবিষ্যতে কারো মানবাধিকার থাকবে না।’’
মালদহের একটি স্কুলে মিড ডে মিল নিয়ে দুর্নীতি সামনে এসেছে। সেলিম বলেন, ‘‘মিড ডে মিলের বরাদ্দ বাড়াচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। এখানে ভোটের আগে খাবারের তালিকা দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। সেখানে মাংস, ডিমের কথা থাকে। কিন্তু বাস্তবে হলুদ, নুন দেওয়া ভাত খাওয়াচ্ছে ছেলে মেয়েদের।’’ তিনি বলেন, ‘‘পিছিয়ে পড়া অংশের ছেলে মেয়েদের পুষ্টির জন্য এই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। যাতে তারা স্কুলে এসে লেখা পড়ার সাথে পুষ্টি পায়। আমরা দেখেছি আলিপুরদুয়ারে পিছিয়ে পড়া পরিবার গুলির অপুষ্টি বাড়ছে।’’
Comments :0