৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এক দফাতেই হবে নির্বাচন। আজ থেকেই জারি আচরন বিধি। বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজীব সিনহা নির্বাচনের ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল থেকেই মনোনয়ন পত্র দাখিল করা যাবে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ১৫ জুন পর্যন্ত চলবে মনোনয়ন দাখিল করার প্রক্রিয়া। ২০ জুন মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন বলে জানিয়েছে কমিশন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানিয়েছেন, ১০ জুলাই ফল প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০১৮ সালে মে মাসে নির্বাচন হলেও বিভিন্ন জায়গায় পঞ্চায়েত গঠন করতে প্রায় আগস্ট মাস পর্যন্ত সময় গড়িয়েছিল। সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ বছরের মধ্যে নির্বাচন করতেই হবে। সেই মতো জুলাই মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে নির্বাচন প্রক্রিয়া।
কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট পরিচালন করা হবে কি না তা এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে কমিশনের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়নি। রাজীব সিনহা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
গতবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে একাধিক জায়গায় বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে দেওয়া হয়নি শাসক দলের পক্ষ থেকে। মনোনয়ন জমা করতে গেলে বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। আক্রমণ হয়েছে বিরোধীদের ওপর। আবার কোথাও মনোনয়ন জমা করা হলেও ভয় দেখিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে।
২০১৮ সালে ১৪ মে এক দফায় পঞ্চায়ের নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অশান্তির ছবি ধরা পড়ে। ভোট লুঠ, বিরোধী প্রার্থী এবং এজেন্টদের ওপর হামলা, ব্যালট বাক্স জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে ওই নির্বাচনে। প্রাণ যায় ২৫ জন মানুষের। একাধিক পঞ্চায়েত গায়ের জোড়ে দখল করে তৃণমূল। প্রতিটা ঘটনায় অভিযোগের তীর ছিল তৃণমূলের দিকে। ২০১৩ সালে আদালত থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবি আদায় করে আনে। কিন্তু গত বার সেই ঘটনা ঘটেনি। রাজ্য পুলিশের দ্বারা পরিচালিত হয় পঞ্চায়েত নির্বাচন।
উল্লেখ্য গতকাল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্বভার নিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা।
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম একাধিকবার দাবি করেছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করার। তৃণমূলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, চ্যালেঞ্জ নাও। পঞ্চায়েতের তারিখ দাও।’’ গত কয়েক মাসে গ্রাম জাগাও, নজরে পঞ্চায়েতের মতো একাধিক কর্মসূচির মাধ্যমে পঞ্চায়েত স্তরে তৃণমূলের জেই দুর্নীতি তা মানুষের সামনে তুলে ধরেছে সিপিআই(এম)। আবাস যোজনায় যেই ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে তাতে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় সাংগঠিন প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সিপিআই(এম)। কর্মী সভা থেকে শুরু করে হাট সভার আয়োজন করা হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে। প্রার্থীর নাম খালি রেখে দেওয়াল লিখনের কাজও শুরু হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ন হবে কি না তা এখনই বলা যাবে না। তবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশেষত তৃণমূলের নেতাদের বাড়ি থেকে যেই পরিমানে বিষ্ফোরক উদ্ধার হচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে ২০১৮ সালের রাস্তায় হাঁটতে চাইবে শাসক দল।
Comments :0