Durgapur

সিপিআই(এম) দপ্তরে বোমা, মিছিলে হামলার প্রতিবাদে জনস্রোত দুর্গাপুরে

রাজ্য

শুক্রবার সিপিআই(এম) পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির ডাকে প্রতিবাদ মিছিল দুর্গাপুরে।

শহীদ বিমল দাশগুপ্ত ভবনে হামলা ঠেকায়নি পুলিশ। ছাত্র-যুব-মহিলা মিছিলে সশস্ত্র হামলাও ঠেকায়নি। অথচ এই পুলিশই বৃহস্পতিবার বাধা দিল সিপিআই(এম)’র ডাকা প্রতিবাদ মিছিলে। রুষে ওঠা জনস্রোতে যদিও ভেসে গিয়েছে সেই বাধা। মিছিল হয়েছে গান্ধী মোড় থেকে সিটি সেন্টার পর্যন্তই।

বুধবার তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ভাঙচুর করেছে, আগুন লাগিয়েছে দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের সিপিআই(এম) দপ্তরে। বোমা ছুঁড়েছিল। সশস্ত্র হামলা চলে ছাত্র-যুব-মহিলা মিছিলে। আর জি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ হত্যার প্রতিবাদে বেরিয়েছিল সেই মিছিল। কলকাতায় তার কিছুক্ষণ আগে দলের কর্মীদের ‘ফোঁস’ করতে বলেছিলেন তৃণমূল প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। আর তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা নেমেছিল সশস্ত্র হামলায়।

এদিনই মিছিলে ছিলেন ছাত্র-যুব এবং মহিলা নেতৃবৃন্দ। ছিলেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। প্রতিবাদ মিছিলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের উদ্দেশ্যে, আর জি কর হাসপাতালে যগণ্য অপরাধের বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই। বিচার চাইতে নামা হবে রাস্তায় হুমকি-হামলা দিয়ে এই প্রতিবাদ ঠেকানো যাবে না।

মিছিলে অংশ নেন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সভাপতি জাহানারা খান, ডিওয়াইএফআই’র রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি, সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে, সভাপতি প্রণয় কার্য্যী। অংশ নেন সিআইটিইউ রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু, পার্টি নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী, পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জি, পার্টিনেতা পার্থ মুখার্জি, প্রাক্তন বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়, বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীও।  

এদিন মিছিলের আগেই মনোভাব জানিয়ে দেন মীনাক্ষী। শহীদ বিমল দাশগুপ্ত ভবনে তিনি বলেন,, ‘‘শাসক দল যদি ভাবে যে তারা ভয় দেখিয়ে আর জি কর নিয়ে মানুষের প্রতিবাদকে দমিয়ে দেবে, তারা ভুল ভাবছে। সারা রাজ্য জুড়েই এই ঘটনার প্রতিবাদ চলবে। রাজ্য জুড়ে আরও বাড়বে এই প্রতিবাদ।’’ তিনি বলেন, ‘‘মানুষ প্রতিবাদে নেমেছে বলেই মুখ্যমন্ত্রী ভয় পাচ্ছেন। পুলিশ মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। যারা এই ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের না ধরে প্রতিবাদীদের পিছন পিছন ঘুরছে পুলিশ।’’

পুলিশের সামনেই শাসকদলের গুন্ডাবাহিনী হামলা চালিয়েছিল বুধবার। সাত মহিলা সহ ২১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একাধিক মহিলা রক্তাক্ত হয়েছেন। পুলিশের সামনেই চলে বোমাবাজি। প্রতিবাদী মিছিলকে আটকে রেখে দুষ্কৃতী বাহিনীকে জায়গা করে দেয় পুলিশ। রক্তাক্ত করে, হামলা চালিয়েও শেষ পর্যন্ত মিছিল ঠেকাতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। সাময়িকভাবে ছত্রখান হলেও ফের ছাত্র-যুব-মহিলারা দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে মিছিল করে সিটি সেন্টারে পুলিশের ‘ইনভেস্টিগশন সেন্টার’র সামনে জড়ো হন বুধবার। রাতেই থানায় হামলাকারী তৃণমূলীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

প্রথম দফায় মিছিলে পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে দ্বিতীয় দফায় ফের হামলা চালানো হয় শহীদ বিমল দাশগুপ্ত ট্রাস্ট ভবনে। ভবনের সামনে থাকা একাধিক মোটরবাইকে ভাঙচুর চালানো হয়। রাস্তা থেকে ভবনের ভিতর বোমা ছোঁড়া হয়। ইট ছুঁড়ে জানলার কাচ ভাঙা হয়। প্রতিবাদ মিছিলে এমন হামলায় দুর্গাপুরবাসীরাও রীতিমতো উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্গাপুরে এমন হামলার ঘটেনি। সাধারণ বাসিন্দারাও ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক আরও বলেন, ‘‘দুর্গাপুরকে লুঠের জায়গায় পরিনত করেছে তৃণমূল। বামফ্রন্ট সরকারের সময় দূর্গাপুর ছিল কর্মসংস্থানের জায়গা।’’

Comments :0

Login to leave a comment