আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি এই আবেদন বৃহস্পতিবার জানান শীর্ষ আদালতে। বড় কর্পোরেট সংস্থাকে ব্যাঙ্কের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট নিয়মবিধি নজরদারিতে আনার আবেদন জানান তিনি।
সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীরা সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি তুলেছে। সংসদেও এই দাবি উঠেছে। বিরোধী দলগুলির তরফে অন্তত যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্তের দাবিও তোলা হয়েছে। কোনও দাবি মানতেই রাজি হয়নি সরকার।
তবে সংসদের দুই কক্ষে বুধ এবং বৃহস্পতিবার, পরপর দু’দিনের ভাষণে আদানি কাণ্ড নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উলটে লোকসভায় বিজেপি স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস এনেছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে। লোকসভার অধ্যক্ষ রাহুলের বক্তব্যে কিছু অংশ নথি থেকে বাতিলও করেছেন। গান্ধী সরাসরি প্রশ্ন তোলেন আদানি গোষ্ঠীর প্রধানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক কী।
তিওয়ারি এদিন সুপ্রিম কোর্টে সওয়ালে বলেন, শুক্রবারই আরেকটি আবেদনের শুনানি রয়েছে শীর্ষ আদালতে। সেখানে বলা হয়েছে আদানির শেয়ার ধস এবং হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট নিয়ে শোরগোল তুলে দেশের সম্মান নষ্ট করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। সেই আবেদনকারীদের বক্তব্য, দেশের সম্মান যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নিক শীর্ষ আদালত।
‘দেশের সম্মান নষ্ট’, ‘বিদেশি সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টকে কেন গুরুত্ব দেওয়া হবে’- বিজেপি এবং মন্ত্রীরা এই মর্মেই সওয়াল করে চলছে। বিরোধীরা বলছেন, ‘সেবি’ বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন প্রয়োজনীয় নজরদারি করেনি এতদিন, সরকারকে তার জবাব দিতে হবে।
আইনজীবী তিওয়ারি তাঁর সওয়ালে বলেছেন, ‘‘হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট এবং তার জেরে আদানির শেয়ারে ধস কেবল বাণিজ্যের বিষয় নয়। এই আদানি গোষ্ঠীকে বিপুল ঋণ দিয়ে স্টেট ব্যাঙ্ক। বিনিয়োগ করেছে এলআইসি। যেখানে দেশের কোটি কোটি মানুষ সঞ্চয় জমা রাখেন। এই বিপর্যয়ে আতঙ্কে রয়েছেন দেশবাসী।
তিওয়ারির সওয়াল, কোনও কর্পোরেট সংস্থাকে ৫০০ কোটি টাকা বা এমন বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়ার আগে সবদিক যাচাই করা হচ্ছে কিনা আদালতের বিবেচনা করা উচিত।
স্টেট ব্যাঙ্ক এবং এলআইসি’র টাকা আদানি গোষ্ঠীতে যাওয়ার পিছনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রভাব খাটানোর অভিযোগ সর্বত্র। বারবার তাঁর বিদেশ সফরে সঙ্গী হয়েছেন গৌতম আদানি। তারপরই মিলেছে বিদেশে বরাত। রাষ্ট্রায়ত্ত বন্দর, বিমানবন্দর, খনি একের পর এক চলে গিয়েছে এই সংস্থার হাতে। সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারই।
শুক্রবার শুনানিতে এই সব প্রসঙ্গ উঠবে কিনা জানতে আগ্রহী সব মহলই।
Comments :0