JOINT PARLIAMENTARY COMMITTEE

মানব বন্ধনে বিরোধীরা, দূরে রইল তৃণমূল

জাতীয়

parliament congress cpim bjp tmc indian politics bengali news সংসদ ভবনের সামনে মানব বন্ধনে বিরোধীরা। যোগ দিল না তৃণমূল। ছবি: সংগৃহীত।

এবার সংসদ চত্বরে হাতে হাত ধরে প্রতিবাদে শামিল হলেন বিরোধী সদস্যরা। বুধবার আদানি নিয়ে তদন্তের দাবিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) দপ্তর অভিযান সংসদ থেকে বেরনোর মুখেই আটকে দিয়েছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাই সংসদের অধিবেশন মুলতবি হয়ে যাওয়ার পরেই মানব বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সরব হলেন আদানি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবিতে। যথারীতি এদিনও বিরোধীদের প্রতিবাদে শামিল হলেন না তৃণমূলের সাংসদরা।

হাতে প্ল্যাকার্ড এবং মুখে স্লোগান দিয়ে আদানির কেলেঙ্কারি নিয়ে সোচ্চার হলেন বিরোধী সাংসদরা। কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে, ডিএমকে’র টি আর বালু, সামজাবাদী পার্টির রামগোপাল যাদব, ন্যাশনাল কনফারেন্স’র ফারুক আবদুল্লা, শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী)-র প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী যেমন ছিলেন তেমনই সিপিআই(এম)’র এলামারাম করিম, এ এ রহিম সহ সিপিআই, আপ, জনতা দল (ইউ), জেএমএম, আরজেডি, ভিসিকে, এমডিএমকে এবং আইইউএমএল সাংসদরাও শামিল হন বিক্ষোভে। 

লোকসভায় কংগ্রেসের ডেপুটি নেতা গৌরব গগৈ অভিযোগ করেন, সংসদের ভেতরে বিরোধীদের কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই আমরা সংসদ চত্বরে মানব বন্ধনে শামিল হয় আমাদের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের একটাই দাবি, আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কারচুপি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে হবে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বন্ধু গৌতম আদানিকে বাঁচাতে তৎপর। এদিন সকালে বিরোধীদের বৈঠকেই মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে বুধবার বিরোধীদের মিছিলের পথরোধ করে দিল্লির পুলিশ। বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন, ২০০ সাংসদের মিছিল আটকাতে ২ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। বিজয় চকে ১৪৪ ধারা জারি থাকার অজুহাত দেখিয়ে পুলিশ তাঁদের ফিরিয়ে দেন। 

পুলিশের বাধায় আটকে যাওয়ায় সাংবাদিকদের কাছে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ওইদিন অভিযোগ করেন, ‘‘১৮টি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা মিছিল করে ইডি দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দিতে যাচ্ছিলেন। ওই স্মারকলিপিতে আদানির বিরুদ্ধে ওঠা বেশ কয়েকটি অভিযোগ কথা উল্লেখ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানানো হয়েছিল।’’ অবশ্য তাঁদের আটকে দিলেও প্রতিবাদ থেমে থাকবে না সেকথা জোর গলায় জানিয়ে দেন মিছিল অংশগ্রহণকারী সাংসদরা।

শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী)-র সাংসদ সঞ্জয় রাউথ জানিয়ে দেন, ‘‘আমাদের এগিয়ে যাওয়া কেউ থামাতে পারবে না। আমাদের প্রতিবাদ মিছিল চলবেই।’’ এদিনের বিরোধী মিছিল আটকে দেওয়ার ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করে ইয়েচুরি টুইটে বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি এবং মোদী সরকার কোনোভাবেই সংসদে আলোচনা চালাতে দিচ্ছে না এবং দায় এড়াতে অচলাবস্থা তৈরি করছে ইচ্ছাকৃতভাবে। এভাবেই দিনের আলোয় গণতন্ত্রকে খুন করা হলো।’’

এদিন সকালে বিরোধীরা সংসদে আগামী দিনের কর্মপন্থা ঠিক করতে বৈঠকে বসেছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গের ঘরে। সেখানে সকলে একবাক্যে স্বীকার করেন যে, সংসদে যাতে অচলাবস্থা তৈরি হয় সেই প্ররোচনা দেওবা হচ্ছে সরকারপক্ষ থেকে। নাহলে নজিরবিহীনভাবে মন্ত্রীরা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতেন না। কোনোভাবেই সংসদে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইবেন না রাহুল গান্ধী, সেকথা এদিন জানিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। 

ওই বৈঠকেই সংসদ চত্বরে গান্ধী মূর্তির সামনে মানব বন্ধন কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিরোধীরা এই বার্তাও দিতে চান যে, গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব তাঁদেরই কাঁধে তুলে নিতে হবে। এই বৈঠকে সমমনোভাবাপন্ন বিরোধী দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেস ছিল না বা থাকছেও না বিরোধের প্রতিবাদে।


আদানিদের কারচুপি আলোচনা এবং জেপিসি গঠনের দাবিতে সংসদের উভয়কক্ষেই বেশ কয়েকটি নোটিস দাখিল করেছেন কংগ্রেস, সিপিআই(এম) সহ বিরোধী দলের সাংসদরা। কিন্তু সংসদে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় এগুলি নিয়ে আলোচনার সুযোগ ঘটছে না। একই সঙ্গে সরকারও আদানি নিয়ে জেপিসি গঠনে রাজি হচ্ছে না।

 

Comments :0

Login to leave a comment