মহুয়া মৈত্রের প্রশ্ন তোলার পদ্ধতি অন্যায্য ছিল কিনা পরের কথা। প্রথম কথা হলো যে বিষয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন তার তদন্ত করা। আদানি গোষ্ঠীকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অন্যায্য সুবিধা দিয়ে চলেছেন কিনা, দেশের সম্পদ হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কেন, তার তদন্ত আগে জরুরি। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত প্রসঙ্গে এই দাবি তুললেন রাজ্যসভায় সিপিআই(এম) সাংসদ এবং আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য।
ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘কাকে দিয়ে প্রশ্ন করিয়েছেন, দুবাই থেকে প্রশ্ন করেছেন না লণ্ডন থেকে পরের কথা। প্রথম কথা হলো যে বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেছেন তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে না কেন? তদন্ত করে যদি দেখা যায় মহুয়া উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভিত্তিহীন প্রশ্ন করেছেন তখন নিশ্চয় তা নিয়ে তদন্ত হবে। কিন্তু প্রথমে তো আদানিকে নিয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করতে হবে। সারা দেশের বহু মানুষ এই প্রশ্ন তুলছেন।’’
আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্ক নিয়ে সংসদে প্রশ্ন উঠছে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার অনেক আগে থেকেই। দেশের মধ্যে বন্দর থেকে বিমানবন্দর বা সড়ক প্রকল্পের মতো বড় বিনিয়োগের প্রতিটি প্রকল্পের বরাত একটিই গোষ্ঠীর হাতে যাচ্ছে কী করে, জানতে চেয়েছেন বিরোধীরা।
এই দাবি তীব্র হয় হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসায়। বিরোধীদের দাবি সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী জবাব দেননি। উলটে লোকসভায় প্রশ্ন তোলার পর অন্য একটি মামলায় সাময়িকভাবে আদালতের রায়ে খারিজ হয়ে যায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সদস্যপদ। সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্তের দাবিতে বিরোধীরা সরব হলেও কানে তুলতে নারাজ নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই দাবি থেকে যদিও তৃণমূল দূরে থেকেছে।
ভট্টচার্য বলেছেন, ‘‘মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে রাজনৈতিক মতপার্থক্য আছে। তিনি যে দল করেন তারা আদানিকে সমর্থন করে। কিন্তু তার মধ্যেও তিনি যে প্রশ্ন তুলে গিয়েছেন তা ইতিবাচক।’’
তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই তদন্ত হোক, কিন্তু তদন্তের পরিধি বাড়াতে বলব। কী করে মোদী এবং আদানির সঙ্গে দেশের সম্পদের প্রশ্ন জড়িত, কিভাবে বিদেশেও আদানির সম্পদ বাড়াতে মোদী ভূমিকা নিয়েছেন তা নিয়ে তদন্ত হোক। মূল বিষয়ে তদন্ত হোক। মহুয়ার অন্য কাউকে দিয়ে প্রশ্ন করিয়েছেন কিনা এটা একেবারেই নিছক দ্বিতীয় স্তরের বিষয়।’’
বিকাশ ভট্টাচার্য এদিন বলেছেন, ‘‘প্রাথমিক বিষয়ে তদন্ত না করে দ্বিতীয় স্তরের বিষয়ে তদন্ত করে ভারতবর্ষে ক্ষমতাসীন লোকেদের ব্যাপক দুর্নীতি আড়াল করার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’
Comments :0