CESC MD SALIM

সিইএসসি’র মালিকের মদতে তৃণমূলের শাসানি, সরব সেলিম

রাজ্য

বিদ্যুৎ সংস্থা সিইএসসি-তে শাসানির সংস্কৃতি চালাচ্ছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীবাহিনী। এই বাহিনীকে পুষছেন সংস্থার মালিকই। বিপদে পড়ছেন গ্রাহকরা, কর্মী-আধিকারিকরা।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগে সরব হয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। 
সম্প্রতি একাধিক ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের বাহিনী কাজে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে কর্মীদের। এক মহিলা কর্মী সংস্থায় দীর্ঘদিনের ‘থ্রেট কালচারের’ বিরুদ্ধে সরব হয়ে ভিডিও-তে বক্তব্য জানিয়েছিলেন। সরাসরি তৃণমূলের নেতাদের দেখা গিয়েছে হুমকি দিতে। 
সেলিম বলেন, ‘‘সিইএসসি-তে থ্রেট কালচার চলছে। তৃণমূলের গুণ্ডারা করছে। এরাই শাসাচ্ছে আধিকারিকদেরও। মেডিক্যাল কলেজে করেনি অধ্যক্ষকে ঘিরে? কিন্তু সিইএসসি’র মালিক কী বলছেন? যাঁর টাকায় মমতা ব্যানার্জি শহীদ দিবস করেন, পুলিশ নির্দেশ দেয় জমায়েত আটকাতে। তৃণমূলকে কাজে লাগিয়ে টাকা বাড়িয়েছেন। মাশুল বাড়িয়েছেন বিদ্যুতের। তৃণমূলের গুন্ডা পুষছেন সিইএসসি’র মালিক। পিষ্ট হচ্ছে গ্রাহকরা, কর্মী-আধিকারিকরা।’’
এদিন ধর্মতলায় এসএফআই, ডিওয়াইএফআই, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সমাবেশ ছিল। সেখানে বারবার বাধা সৃষ্টি কররেছে পুলিশ। সেলিম বলেন, ‘‘পুলিশের নতুন দায়িত্ব হয়ে উঠেছে যে করেই হোক সিইএসসি’র দপ্তর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে জমায়েত বন্ধ করতে হবে। আর আরেকদিকে আমরা দেখছি কিভাবে সিইএসসি’র মধ্যে ‘থ্রেট কালচার’ চলছে। পুলিশের ভয়, এই সমাবেশ যাতে ভিক্টোরিয়া হাউসের দিকে না চলে যায়। একদিকে মাশুলের চাপে মানুষের ত্রাহি ত্রাহি রব। আরেকদিকে সিইএসসি-তে কোনও প্রতিবাদ করা যাবে না, ট্রেড ইউনিয়ন করা যাবে না। আর জি করে ধর্ষণ-খুনে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বলে কাজে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে কর্মীদের। তাঁদেরকে তৃণমূল শাসাচ্ছে।’’ 
ধর্মতলায় দুর্যোগের মধ্যে বিপুল জমায়েত, বিচারের জন্য প্রতিবাদে শামিল হলেন, তাঁদের সংহতি, অভিনন্দন জানিয়েছেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবাদ না হয় তার জন্য নানা কায়দা কানুন হচ্ছে। ন্যায় সংহিতা যবে থেকে চালু হয়েছে তবে থেকে অন্যায়ের পাহারাদার এবং ন্যায় যারা চাইছে তাদের বাধা তৈরি করা হচ্ছে বেশি। বাইপাসে ফুটবল প্রেমীদের প্রতিবাদের সময়ও মিথ্যা ভাষ্য ছড়িয়ে এমন বাধা দেওয়া হয়েছে। সেই কায়দাই বজায় রাখলেন নতুন পুলিশ কমিশনার।’’
কলকাতা পুলিশ ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পুজোর সময় আর জি কর কাণ্ড ঘিরে প্রতিবাদের ন্যূনতম স্বরকেও বন্ধ করতে তৎপর হয়েছে।
সেলিম বলেন, ‘‘ভিক্টোরিয়া হাউসে জমায়েত করতে না দিয়ে ধর্ণার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ধর্ণায় আসীনরাও সহযোগিতা করেছেন। পুলিশ ক্রমাগত বাধা দিয়েছে। কাল শুনানি হাইকোর্টে। সর্বত্র হল সভাতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। হলও দিচ্ছে না। কিন্তু এসবে কি প্রতিবাদ আটকাবে?’’
তিনি বলেন, ‘‘ সরকার বলছে পুজো উৎসবের ধারেপাশে যেন স্লোগান না হয়। পুলিশও দেখব বলছে। অঘোষিত জরুরি অবস্থা। সংবাদমাধ্যম, ছোট-মাঝারি, চাপ দেওয়া হচ্ছে।’’ 
তিনি বলেন, ‘‘এই ‘থ্রেট কালচারের’ বিরুদ্ধে পুলিশ তো আগে ব্যবস্থা নেয়নি। বরং, আশিস পাণ্ডে মাথা ফাটিয়েছে চিকিৎসক পবিত্র গোস্বামীর। আশিস পাণ্ডের নামে এফআইআর দায়ের হয়েছে। আজ পর্যন্ত পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’
এদিন কংগ্রেস কর্মীরা ধর্মতলায় বসেছিলেন ধর্ণায়। সহযোগিতার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানান ছাত্র-যুব-মহিলারাও। সমাবেশ জানিয়েছে প্রতিবাদ চলবে। সিবিআই’র নজরে রয়েছে আশিস পাণ্ডে। স্টুডেন্টস হেলথ হোমের সম্পাদক চিকিৎসক প্রতিবাদী পবিত্র গোস্বামীর মাথা ফাটানোর জন্য তাকে দায়ী করেন সেলিম।
সেলিম বলেন, ‘‘১৪ আগস্ট যারা আর জি করে ভাঙচুর করেছে তাদের নামধাম সব দিয়েছি। পুলিশ ধরেনি। বরং বাম কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরপাকড় করেছে। অপরাধীদের না ধরে প্রতিবাদীদের হেনস্তা করছে। আমরা তা প্রতিহত করার ডাক দিচ্ছি।’’

Comments :0

Login to leave a comment