সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস দিয়ে বন্ধ হয়ে গেল হাওড়া জুট মিল। রাতারাতি কাজ হারালেন প্রায় ১ হাজার ৪০০ শ্রমিক। দুশিন্তায় শ্রমিক ও তাদের পরিবার। শনিবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে মিল বন্ধের নোটিশ দেখে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে মিলের গেটে। মিল বন্ধের খবর পেয়েই মিলের গেটে জড়ো হতে থাকেন শ্রমিকেরা। মিল বন্ধের প্রতিবাদে গেটে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। 
২০২২ সালে ১১ মাস বন্ধ থাকার পর ডি এল সি-র মধ্যস্ততায় হাওড়া জুট মিল খোলে। মিল শ্রমিকদের সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে মিল কর্তপক্ষের এই আশ্বাসে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন। দীর্ঘ দুই বছর কেটে গেলেও শ্রমিকেরা তাদের বকেয়া কোন টাকা না পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার মিল কর্তপক্ষের সাথে দেখা করে ডেপুটেশন দেন হাওড়া জুট মিলের ছয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল। ডেপুটেশন চলাকালীন সময়ে একটি ইউনিয়নের একজন প্রতিনিধি মিল কর্তপক্ষকে হুমকি দিয়েছেন এই অভিযোগে শনিবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের মিল বন্ধ করার নোটিশ দেন মিল কর্তপক্ষ। মিল কর্তপক্ষের এই মিথ্যা অভিযোগে মিল বন্ধ করার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শ্রমিকেরা। তারা জানান বহুবার ডি এল সি অফিস এবং রাজ্যের শ্রম মন্ত্রীর সাথে দেখা করে অসুবিধার কথা জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। 
হাওড়া জুট মিলের শ্রমিকেরা জানান ২০২২ সালে ডি এল সি অফিসে শ্রমিকদের সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে এই বলে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছিল মিল কর্তপক্ষ। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক বছর কেটে গেলেও কোন বকেয়া টাকা পান নি মিলের শ্রমিকেরা। তারা আরও জানান শ্রমিকেরা অবসর নেওয়ার পর পেনশন ও পিএফ’র কোন টাকা পাচ্ছেন না। যে সকল শ্রমিকেরা ২০১৫ সাল থেকে যারা অবসর নিয়েছেন তারা পেনশনের কোন সুবিধা পাচ্ছেন না। শ্রমিকদের অভিযোগ তাদের মাইনে থেকে ইএসআই এবং পিএফ বাবদ টাকা কেটে নেওয়া হলেও সেই টাকা সরকারি দপ্তরে জমা পড়ছে না। ফলে চরম অসুবিধায় পড়েছেন শ্রমিকেরা। মিলের শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে তিনটি সিফটের বদলে দুইটি সিফটে কাজ করানো হচ্ছে শ্রমিকদের দিয়ে। তাদের আরও অভিযোগ মিলের গেট সহ মিলের সর্বত্র হাওড়া জুট মিল লেখা মুছে দেওয়া হয়েছে। বেআইনিভাবে বন্ধ করে দেওয়া মিল অবিলম্বে খোলার দাবিতে বিক্ষোভে সামিল হন শ্রমিকেরা। বেঙ্গল চটকল মজদুর ইউনিয়নের নেতা রবি দাস বলেন অবিলম্বে জুট মিল খুলতে হবে মিল কর্তপক্ষকে এবং মিল শ্রমিকদের সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে।