MD SALIM EXTENDED MEET

অধিকারের লড়াইয়ে শক্তি বাড়াতে বর্ধিত অধিবেশন, বললেন সেলিম

রাজ্য

বৃহস্পতিবার মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে মহম্মদ সেলিম।

গতিশীল সময়ে শক্তিশালী সংগঠন দরকার। বিশ্ব, দেশ বা রাজ্যের পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। সিপিআই(এম) রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। তার পর্যালোচনা হবে রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনে।

বৃহস্পতিবার কলকাতায় সিপিআই(এম) রাজ্য দপ্তর মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে এ কথা বলেছেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ৩-৫ নভেম্বর হাওড়ার শরৎ সদনে রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন হচ্ছে। রাজ্য কমিটির সদস্যদের নিয়ে প্রায় চারশো প্রতিনধি অংশ নেবেন বর্ধিত অধিবেশনে। শুক্রবার এই অধিবেশনের উদ্বোধন করবেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। 

সেলিম বলেছেন, ‘‘বামপন্থীদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়াসও চালিয়েছে পার্টি। বামফ্রন্টের বাইরে বামপন্থী দলগুলির সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি হয়েছে। স্থানীয় সমস্যার সঙ্গে জীবিন জীবিকা, পরিবেশ, দুর্নীতি, কর্মসংস্থান, ডেঙ্গু বা রাস্তার মতো জনজীবনের সঙ্গে জড়িত বিষয়ে রাস্তায় নামার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু আরও বেশি উদ্যোগ জরুরি। জরুরি আরও বেশি মানুষকে সমবেত করা। বর্ধিত অধিবেশনে সেই লক্ষ্য নিয়েও আলোচনা হবে।’’

সেলিম জানিয়েছেন যে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখবে সিপিআই(এম)।  বর্ধিত অধিবেশনে আলোচনা হবে রণকৌশল নিয়ে। তিনি বলেছেন, ‘‘বর্ধিত অধিবেশনের পরই বিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী শক্তিগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে।’’ 

দেশ এবং রাজ্যের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূল দুই শক্তিই গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে চায়। মানুষের প্রতিবাদের অধিকার কেড়ে নিতে চায়। কেন্দ্রের সরকার উমর খালিদের মতো প্রতিবাদীদের জেলে বন্ধ করে রেখেছে। রাজ্যে আমরা দেখেছি বারো বছর ধরে লাগাতার মিথ্যা মামলা, জরিমানা দিয়ে প্রতিবাদকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলেছে। বিজেপি এবং তৃণমূল দুই শক্তিই চায় রাজনৈতিক পরিসরকে বিরোধীশূন্য করতে। তার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই।’’

তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘কেন্দ্রে বিজেপি সরকার জানে দুর্নীতি হচ্ছে বেনিয়ম হচ্ছে। তাই প্রতিবাদের অধিকার কেড়ে নিতে চায়। এ রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীও জানতেন দুর্নীতি হচ্ছে। তাই মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন লাগাতার।’’

সেলিম বলেছেন, ‘‘বামপন্থীরা বারবার পথে নেমেছে। আন্দোলন সংগঠিত করেছে। রাজ্য সম্মেলনের পর রাজ্য কমিটিতে নিয়মিত আলোচনা হয়েছে। রাজ্য সম্মেলনের প্রায় ১৮ মাস পর আমরা পর্যালোচনা করতে চাইছি সম্মেলনে যে যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল সেদিকে কতটা এগতে পেরেছি।’’ 

রেশন দুর্নীতির দায় পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের ঘাড়ে চাপাতে সচেষ্ট মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেলিম বলেছেন, ‘‘একেবারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতো কায়দা। উনি বিপাকে পড়লেও জওহরলাল নেহরু থেকে ৭০ বছরের প্রসঙ্গ টানেন। আর মমতা টানেন বামফ্রন্টের প্রসঙ্গ। আমরা বারবার ডেপুটেশন থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছে রেশনে বেনিয়ম নিয়ে। একমাত্র ‘গণশক্তি’ পত্রিকা খবর ছেপেছে। আর সোশাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছে। অন্য সংবাদমাধ্যম দিনের পর দিন তার খবর করেনি।’’

সেলিম মনে করিয়ে দেন যে দুর্নীতি নিয়ে বহু কথা হওয়ায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে খাদ্য দপ্তর থেকে সরাতে হয়। কিন্তু বনমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েও তাঁকে অত্যাবশ্যকীয় পণ সরবরাহ নিগমের চেয়ারম্যান আজও করে রেখেছেন মমতা ব্যানার্জি। সেলিম বলেছেন, ‘‘ব্যবসায় ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবস্থার মতো, কালীঘাটে ৭৫ শতাংশ ভাগ দিতে হবে। তা’হলে নিজের নিজের জায়গায় লুটে খেতে সমস্যা নেই। সাইনবোর্ড ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। সে কারণে দুর্নীতিগ্রস্ত, ধর্ষক, খুনিদের পক্ষ নেন মমতা।’’  

সেলিম বলেছেন, কেন্দ্র ফুড কর্পোরেশন তুলে দিয়েছে। আর রাজ্য পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। দুয়ারে সরকারের নামে দুয়ারে দুর্নীতি নিয়ে গিয়েছে। 

Comments :0

Login to leave a comment