Adibasi protest

মন্ত্রী ঢুকতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ল আদিবাসী গ্রাম

রাজ্য

গ্রামে ঢুকতেই মন্ত্রীকে গ্রামের মানুষ সোজাসুজি জানিয়ে দিলেন কিছুই পাননি তাঁরা। স্পষ্ট বললেন, জল নেই, রেশন কার্ড নেই, ঘরও পাইনি। ‘চলো গ্রামে যাই’— এই কর্মসূচিতে জামালপুরে গ্রামের আদিবাসী মানুষের কাছে গিয়ে এমন ধাক্কা খেতে হবে, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য তো বটেই, তৃণমূল দলও বুঝতে পারেনি। বৃহস্পতিবার জামালপুর থানার জৌগ্রাম আমড়ায় একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে সভা করার পর এন এইচ-২-এর বিপরীত দিকে ছোট্ট আদিবাসী গ্রাম খাগড়াগড়ে মন্ত্রীকে ছাড়াও সভাধিপতি শম্পা ধারাকে গ্রামের মানুষ স্পষ্ট শুনিয়ে দিলেন, তাঁরা কিছুই পাননি। 
তৃণমূলের ১১ বছরে গ্রামে পঞ্চায়েতে যে শুধু লুট হয়েছে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন এদিন গ্রামের মানুষ। মন্ত্রীকে আদিবাসীরা শোনাতে ভোলেননি যে কিছুই দেয়নি তৃণমূলের সরকার। জল নেই, রেশন কার্ড নেই, শুধু কাটমানি আর কাটমানি। বাড়ি  তৈরির টাকা থেকেও কাটমানি তুলেছে তৃণমূলের নেতারা, সেই উদাহরণ সামনে এনেছেন গ্রামবাসীরা। গোটা জৌগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতকেই কাঠগড়ায় চড়িয়েছেন গ্রামের মানুষ। মন্ত্রীকে দেখা মাত্রই যাবতীয় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তাঁরা। 
মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এদিন ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই আদিবাসী পাড়ায় ঢুকে জিজ্ঞাসা করেছেন, আপনারা সব ঠিকঠাক পাচ্ছেন তো? তার উত্তরে এক আদিবাসী মহিলা মন্ত্রীর মুখের উপরেই বলে দিয়েছেন, কিছুই পাইনি। রেশনকার্ড নেই পরিবারের অনেকেরই। তার উত্তরে মন্ত্রী বলেছেন, নিশ্চয়ই দেরি করে জমা দিয়েছেন তাই রেশন কার্ড হয়নি। উত্তরে মহিলারা স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, মন্ত্রীকে ৩-৪ বছর আগে জমা দিয়েও রেশন কার্ড হয়নি। এরপর মন্ত্রী বলেছেন, দুয়ারে সরকারে যাননি? উত্তরে মহিলারা বলেছেন, অনেকবার জমা দিয়েছি দুয়ারে সরকারে, কার্ড মেলেনি। 
খাগড়াগড় গ্রামে ঢোকামাত্র আদিবাসী মহিলাদের কাছে এমন ধাক্কা খেয়ে আর এগননি মন্ত্রী, সোজা গাড়ি চেপে কলকাতার দিকে রওনা দেন। ভোটের রাজনীতি করতেই কি গ্রামে গিয়েছিলেন মন্ত্রী ও তাঁর দলের লোকজন? জিজ্ঞাস্য মানুষের। গ্রামে পৌঁছে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বললেই জানতে পারা যায় তৃণমূলের চুরি, দুর্নীতির কথা। গ্রামবাসীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘রেশন কার্ড নেই, ঘরও পাইনি, দুয়ারে সরকারে বহুবার গিয়েও কাজ হয়নি। মন্ত্রীকে সেই কথা আমরা বলেছি। মন্ত্রী যে ভাল ভাল কথা বলছে সেটা ভোট এসেছে বলে। ওঁরা গাঁয়ে এসেছে বটে কিন্তু আগে ওঁদের কোনোদিন দেখিনি।’ 
এই জৌগ্রাম এলাকায় চুরি, দুর্নীতি হয়েছে দেদার। সব গ্রাম পঞ্চায়েতের মতো এখানেও লাগামছাড়া দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগের পর অভিযোগ। ১০০ দিনের কাজের টাকা, সামাজিক উন্নয়নের টাকা, প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার ঘর থেকেও গরিব মানুষের কাছ থেকে কাটমানি নিয়েছে তৃণমূল। ক্ষোভে ফুঁসছেন এই গ্রামপঞ্চায়েতের মানুষ। তৃণমূলের চুরির কারণেই গাঁয়ে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গাঁয়ে কাজ নেই, এখানকার মানুষ কাজের সন্ধানে অন্যরাজ্যে চলে যাচ্ছেন। গ্রামের গরিব মানুষের বক্তব্য, যে সরকার ধান রোয়া বা ধান কাটার কাজ দিতে পারে না তাদের মুখে উন্নয়নের কথা মানায় না। 
 

Comments :0

Login to leave a comment