Dhupguri By-Election

গানের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার ঈশ্বর চন্দ্র রায়ের

রাজ্য

Dhupguri By-Election

সঞ্জিত দে - ধূপগুড়ি


শুক্রবার ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। বামফ্রন্ট কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়। ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁর নাম ঘোষণার পরেই নিজের বাঁধা গান গেয়ে ভোট প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। 
আইসো বন্ধু আইসোরে/হামার কথা শুনিয়া যান। এভাবেই গ্রামের মানুষকে কাছে ডেকে ভাওয়াইয়া গানের সুরে মনের  কথা বলছেন। সিপিআই(এম) ছাড়া বাঁচার কুনো পথ নাই। কেন পথ নাই? তৃণমূল বিজেপির শাসনে এ রাজ্যের এ দেশের মানুষ কিভাবে দিন যাপন করছেন সেই যন্ত্রণার কথা, প্রতিবাদ, প্রতিরোধের কথা উল্লেখ করেছেন গানের প্রতিটি লাইনে। এ রাজ্যে তৃণমূল আর কেন্দ্রে বিজেপি সরকার মানুষকে তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। মানুষকে তাঁর অধিকার ফিরিয়ে দিতে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন তিনি।


ধূপগুড়ি বিধান সভার আসন্ন উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী ঈশ্বর চন্দ্র রায় প্রচার শুরু করেছেন তাঁর গান দিয়েই। গলায় ঝুলিয়ে নিয়েছেন অত্যন্ত প্রিয় বাদ্যযন্ত্র দোতরা। তিনি প্রচুর গান লিখেছেন সাম্প্রদায়িকতা বিচ্ছিন্নতা বিভেদ বিভাজনের বিরুদ্ধে। বাংলা ভাগ করে উত্তরবঙ্গকে ভাগ করে কামতাপুর রাজ্যের দাবিদারদের হিংস্র রক্তক্ষয়ী আন্দোলন শুরুর সময় থেকে ঈশ্বর চন্দ্র রায় তাঁর গানকে হাতিয়ার করে প্রচার করেছেন। এখন তিনি বিজেপির  জাত পাত ধর্মের বিভাজনের বিরুদ্ধে গান গাইছেন। তৃণমূল ক্ষমতা দখলের পর কি ভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করে মানুষের  অধিকার কেড়ে  নিয়েছে। শিক্ষা বালি কয়লা গরু পাচার বিক্রি করে লুট করছে সে কথাও আছে ঈশ্বর চন্দ্র রায়ের গানে। শুক্রবার বিকালে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু নাম ঘোষণা করার সাথে সাথে প্রার্থী চলে আসেন ধূপগুড়ি শহরের পার্টি অফিসে। এখানে কর্মী সভায় বক্তব্য রাখেন। শনিবার খুব ভোরে উঠে নিজের গ্রাম বারঘরিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের দক্ষিণ ডাঙ্গা পাড়ার সব বাড়িতে ঘুরে দেখা করেন। 


ঈশ্বর রায়ের বাড়ির ঢোকার রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে জলঢাকা নদী। সুন্দর এক গ্রাম। রাজবংশী মুসলিম জনজাতির কৃষি জীবি মানুষ বসবাস বেশি। সকালে এলাকার কয়েকজন সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নয়ারহাট পাটকি দহ  গ্রামে প্রচার করেন। পাশের গ্রামের বাসিন্দা পার্টির দক্ষিণ পূর্ব এরিয়া কমিটির সম্পাদক রাজকুমার রায় আরও কয়েকজন  বৈদ্য আশ্রম মনের ডাঙ্গা গালের ডাঙ্গা গ্রামে প্রচার করেন। বিকালে ঈশ্বর চন্দ্র রায় প্রচার করেন মাগুর মারি ২ গ্রামপঞ্চায়েতের দক্ষিণ আলতা গ্রামে। এই গ্রামের আলতাফ মাস্টারের বাড়ির বাইরের উঠানে চেয়ার টেবিল পেতে বসে গ্রামের মানুষকে গান শুনিয়ে বলেন কেন লাল ঝান্ডা কে দরকার এই বাংলার মানুষের।


প্রথম  দিনের প্রচারেই ঈশ্বর রায়  যে ভালোবাসা  সমর্থন  পেলেন তাতে তিনি খুশি বলে জানালেন। অনেক তৃনমুল বিজেপির  কর্মী জানিয়েছেন  এই উপনির্বাচনে  তারা সি পি আই( এম)  প্রার্থী কেই ভোট  দেবেন। যতীন রায় আকবর আলিদের মত কিছু মানুষ জানালেন তৃনমুল বিজেপির দিকে আমরা থাকলেও গ্রামের মাস্টার ভাওয়াইয়া গানের শিল্পীকে এবার ভোট দেব। কারণ এই দল সততার সাথে নীতি আদর্শ বজায় রেখে চলছে। যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদএরাই করে। বারঘরিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের পাটকিদহ হাই মাদ্রাসা স্কুলের শিক্ষক ছিলেন ঈশ্বর চন্দ্র রায়। অবসর নিয়েছেন তিনি। সংখ্যালঘু মানুষের প্রায় সব ঘরে তিনি পরিচিত মুখ। গানকে তিনি অন্তর থেকে  ভালোবাসেন। উত্তর বঙ্গের সব জেলায় তিনি পরিচিত নাম। বেতারের নিয়মিত লোক শিল্পী দূরদর্শনেও তাঁর অনুষ্ঠান অনেক বার সম্প্রচার হয়েছে। ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তাঁর গানের এলব্যাম ছড়িয়েছে। ধূপগুড়ি বিধান সভা এলাকায় এবং শহরের মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যে  সিপিআই( এম)  প্রার্থীর নাম ছড়িয়ে পরতেই বহু মানুষ ঈশ্বর চন্দ্র রায়কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। শনিবার সকাল থেকে  শহরের বিভিন্ন স্থানে দেওয়াল লেখা শুরু হয়েছে। সদর এরিয়া কমিটির সম্পাদক জয়ন্ত মজুমদার বলেন, ঈশ্বর চন্দ্র রায়কে সামনে নিয়ে আমাদের পার্টি কর্মীরা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত আছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মত ভোট লুট ছাপ্পা ভোট বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিরোধে নামবেন। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। ফল ঘোষণা ৮ সেপ্টেম্বর। উল্লেখ্য দুই ফুলের শিবির এখনো তাদের প্রার্থীর নাম জানাতে পারেনি। দুই দলে দাবিদারের সংখ্যা অনেক, কোন্দল সামলাতে হিমশিম দলের নেতারা। প্রকাশ্যে চলছে গোষ্ঠী কোন্দল। 

Comments :0

Login to leave a comment