শুভ্রজ্যোতি মজুমদার
পিসি মুখ্যমন্ত্রী বলে ভাইপো লুটে খাবে। আর আমাদের ছেলেমেয়েরা হন্যে হয়ে একমুঠো ভাতের আশায় ছুটে বেড়াবে এমনটা চলতে পারে না।
ষ্টেশন থেকে কয়েক পা এগোতেই এইভাবেই নিজের মনোভাব জানালেন এক বৃদ্ধ বাসিন্দা।
চাকরি বিক্রি, তুমুল লুট সেই সঙ্গে চাযের সঙ্কটে সরব জনতা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। হুগলী জেলার গ্রামে গ্রামে নির্বাচনের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। পিছিয়ে নেই হরিপাল ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলি। প্রত্যয় নিয়েই তৃণমূলের অপশাসনের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে প্রতিরোধের বার্তা দিচ্ছেন হরিপালের মানুষ।
নালিকুল স্টেশন থেকে কয়েক পা এগোতেই তৃণমূলের কোন একটি সভা ছিল। সেই দিকে আঙুল তুলেই বৃদ্ধ তার ক্ষোভ উগরে দেন। হরিপাল ব্লকে ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। তৃণমূলের প্রতিবাদে সর্বত্রই সরব হয়েছেন মানুষ। প্রত্যয় নিয়েছেন লালঝান্ডার পাশেই থাকবেন।
এক চুরি থেকে আরেক চুরিতে হাত পাকিয়েছে তৃণমূল এমন ভাবেই ক্ষোভ উগরে দিলেন চিটফান্ড দুর্নীতিতে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত নালিকুল নপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ললিতা সাধুখাঁ। তিনি বলেন, "সব মিলিয়ে ১৫০০০ টাকার কাছাকাছি রেখেছিলাম। আমার সেই সর্বস্ব চলে গেলো।"
বৃদ্ধ কাশিনাথ ঘোষ বলেন, "এখানে বোড়ো ধান চাষে জল আসে না। এখানে সেচের জল আগে আসতো কানা নদী হয়ে। আগে আমরা বলতুম খালের জলে কৃষি ফসলের উপকার হয়। এখন মিনি ডিপ হয়ে গেছে। তাই খালের ওপর নির্ভরশীলতা কমেছে। গত বছরের ভাদ্র মাসের চার তারিখে সরকার জল দিয়েছিলো। আষাঢ়-শ্রাবণে ধান রোঁয়া হয়ে গেছে। তাই পয়সা দিয়ে মিনিডিপের জল কিনে সেচ দিতে আমরা বাধ্য হয়েছি।"
বেকার যুবক রাজা বাগ বলেন, " ৫-৬ বার চাকরির পরীক্ষায় বসেছি। চাকরি তো বিক্রি হচ্ছে। আমরা কি যোগ্যতার বিচারে চাকরির সুযোগ পাবো না?"
সিপিআই(এম) মনোনীত বামফ্রন্ট প্রার্থীদের প্রচারে পার্টিকর্মীরা যে বাড়িতেই পৌঁছেছেন সেখানেই সাধারণ গ্রামীণ মানুষ তাদের যন্ত্রণার কথা বলেছেন। লাল ঝান্ডার পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন মানুষ।
পার্টির হুগলী জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মিন্টু বেরা জানান," গ্রাম জাগছে, যত মানুষ বুঝতে শিখেছে তৃণমূলের তত মানুষ তৃণমূলকে উৎখাত করার জন্য একজোট হচ্ছেন। এইবারের নির্বাচনী লড়াই প্রত্যয়ের ঘুরে দাঁড়ানোর। মানুষ যখন নিজে থেকেই প্রতিরোধের বার্তা দিচ্ছেন তখন আমরা আশাবাদী গ্রাম থেকে আমরা এই দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলের ঘুঘুর বাসা সরাতে পারবো।"
Comments :0