ভোটের দিন সন্ত্রাস, ভোট লুট দেখেছিল হিঙ্গলগঞ্জের লোনা মাটি। ভোট গণনার দিন গণনা কেন্দ্রের ভিতরেও ভেসে উঠলো তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের তান্ডবের নিদারুণ ছবি। যার প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়লো হাসনাবাদ নেবুখালি রোডের হিঙ্গলগঞ্জ আই টি আই কলেজের সামনে।
এই কলেজেই ছিল হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের দশম ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট গণনা। অনেক গড়িমসির পর সকাল ন'টায় ভোট। গণনা শুরু হয় ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬৫টি আসনের।
কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের ঘেরাটোপে শান্তিপূর্ণভাবে গণনার চলছিল। প্রথম রাউন্ড শেষ হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে বামফ্রন্ট সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী আসমা বিবি ১৭৪ ভোটে তখন এগিয়ে। হার নিশ্চিত জেনে গণনা কেন্দ্রে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী ঝাপিয়ে পড়ে আসমা বিবি এবং তার এজেন্ট জাফর সরদারের উপর।
আসমা বিবি বলেছেন, ‘‘দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে আমি যখন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সেলিনা খাতুনের থেকে ১৭৪ ভোটে এগিয়ে তখন তৃণমূলের গুন্ডারা আমার এবং আমার নির্বাচনী এজেন্ট জাফর সরদারকে মারতে মারতে বের করে দিল। থানার বড়বাবু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন কিন্তু, কিচ্ছুটি বললেন না।’’
তিনিই জানালেন, ‘‘জাফর সরদারের একটা চোখ বোধহয় নষ্ট হয়ে যাবে। এমন মার মেরেছে। সে এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। আমরা এর বিচার চাই।’’
প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তার বেষ্টনী থাকা সত্ত্বেও বহিরাগত তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী গণনা কেন্দ্রে ঢুকলো কী ভাবে? কেন থানার বড়বাবু নিশ্চুপ থাকলেন?প্রশ্ন তুললেন ১১০ নম্বর বুথের সাহাপুরের সিপিআই(এম)'র কর্মী, সমর্থক সিদ্দিক গাজি, আশরাফ গাজিরা।
আসমা বিবি দিনরাত এক করে বামফ্রন্টের কর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। হিঙ্গলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ রায় দিতে আসমা বিবির পাশে এসে দাঁড়ায়েছিল। তাঁরা ভোটের দিন উজাড় করে ভোট দিয়েছিল বঞ্চনা থেকে মুক্তির আশায়। পুলিশকে সাথে নিয়ে সেই আশায় জল ঢেলে দিল তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। 'আমরা এর বিচার চাই' বলে বিক্ষোভে ফেটে সাহাপুরের বাসিন্দারা।তাঁরা রাস্তা অবরোধ করে থানার বড়বাবুর কাছে বিচার চাইতে গেলে থানার বড়বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। মেজাজ হারিয়ে এক পুলিশ কর্মচারীর হাত থেকে লাঠি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন সিপিআই(এম)'র কর্মীদের উপর। বেশ কয়েকজন লাঠির আঘাতে আহত হন। বিক্ষোভের আঁচ বাড়তে থাকে।পুলিশ সাময়িক পিছু হটে।
এরপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর আসাম রাইফেলসের বিরাট বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। বিক্ষোভকারী সিপিআই(এম) কর্মীদের বিশেষ অনুরোধ করে পিছু হটতে। তারই মধ্যে বিক্ষোভকারী সিপিআই(এম)’র এক মহিলা কর্মী অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান।
Comments :0