Price rise

সবজির পাইকারি দাম বেড়েছে ৪০%

জাতীয়

নয়াদিল্লি, ১৪ অক্টোবর— পাইকারি মূল্যসূচকে সেপ্টেম্বর মাসে তরিতরকারির দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্যেই জানানো হয়েছে, আগস্টে সবজির মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল ২২.২৯ শতাংশ হারে। সেপ্টেম্বরে তা বেড়েছে ৩৯.৬৬ শতাংশ। এর মধ্যে আলুর দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। 
বুধবার প্রকাশিত হয়েছিল খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার। দু’দিনের ব্যবধানে পাইকারি মূল্যসূচকের সঙ্গে তার ফারাক লক্ষণীয়। খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হিসাবে জানানো হয়েছিল, তরিতরকারির দাম জুলাইয়ের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে সেপ্টেম্বরে। জুলাইয়ে বৃদ্ধির হার ছিল ১০.৯ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে হয়েছে ১৮.০৫ শতাংশ। শহরের ক্ষেত্রে ২০.০৫ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে পাইকারি দামের বৃদ্ধি তারও দু’গুণ। বাস্তবের বাজারে সবজির দাম নজিরবিহীন হারে বাড়ছে। 
শুক্রবার প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরে পাইকারি মূল্যসূচক বৃদ্ধির হার ১০.৭০ শতাংশ। আগস্টের তুলনায় একটু কম। যদিও গত ১৮ মাস ধরে এই বৃদ্ধির হার দু’অঙ্কের বেশি। একেই ‘স্বাভাবিক’ বলে এখন ধরে নেওয়া হচ্ছে। খাদ্যপণ্যের পাইকারি দামের বৃদ্ধি একটু কমেছে। সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ১১.০৩ শতাংশ হারে। বাণিজ্য মন্ত্রকের দাবি, গম, ডাল, ফলের দাম কমেছে। ডালের দাম কমেছে ০.২৮ শতাংশ। গমের দামও কমেছে ১ শতাংশ। যার বাস্তবে কোনও মূল্যই নেই। বুধবার জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস জানিয়েছিল, খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার আগস্টে ছিল ৭ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে তা দাঁড়িয়েছে ৭.৪১ শতাংশ। গত ছ’মাসে সর্বোচ্চ। খাদ্যপণ্যের দামই বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। আগস্টের ৭.৬২ শতাংশ থেকে বেড়ে তা সেপ্টেম্বরে হয়েছে ৮.৬ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, সরকারি হিসাবে খুচরোর তুলনায় পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার বেশি। 
খাদ্যপণ্যের মধ্যে চালের দাম একমাসে ৫.৭৯ শতাংশ বেড়েছে। দানাশস্যের দাম বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। দুধের দাম বেড়েছে ৫.৫৫ শতাংশ। দানাশস্যের ক্ষেত্রে পাইকারি ও খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার প্রায় একই। খুচরো মূল্যবৃদ্ধির সূচকে দানাশস্যের দাম বেড়েছে ১১.৫৩ শতাংশ। মৌলিক খাদ্যপণ্যের দামই এভাবে বেড়ে চলায় নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্দশা ক্রমে বাড়ছে। 
একদিকে দানাশস্যের দাম ২০১৩-র পরে সর্বোচ্চ অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মজুত ভাণ্ডারে দানাশস্যের মজুত পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন। ফুড কর্পোরেশনের হিসাব অনুযায়ী, ১ অক্টোবরে গম ও চালের মজুত রয়েছে ৫১১.৪ লক্ষ টন। এক বছর আগে ছিল ৮১৬ লক্ষ টন। পাঁচ বছরে এটিই সবচেয়ে কম মজুত। গমের মজুতের অবস্থা শোচনীয়। অক্টোবরের প্রথম দিন তা ছিল ২২৭.৫ লক্ষ টন। এটি ছ’বছরে সবচেয়ে কম। জরুরি বাফার মজুত থাকার কথা ২০৫.২ লক্ষ টন। চালের ক্ষেত্রে জরুরি মজুতের থেকে খানিকটা বেশিই রয়েছে। গমের ক্ষেত্রে উদ্বেগ বেশি। দেখা যাচ্ছে রেশন-বহির্ভূত গম ও আটার দাম সেপ্টেম্বরে ১৭ শতাংশেরও বেশি। একদিকে হুহু করে দাম বাড়ছে অন্যদিকে সরকারি মজুত কমছে। 
সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি মন্তব্য করেছেন, ডাল, আটা, চাল সাধারণ মানুষের নাগালের বারে চলে যাচ্ছে। ৯ বছরে এই মাত্রায় কখনও দাম বড়েনি। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় শস্যভাণ্ডারে মজুত কমছে। দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর মাথায় নির্বাচন ছাড়া কিছু আছে কি? 
======================== 
সেপ্টেম্বরে পাইকারি মূল্যসূচক বৃদ্ধির হার ১০.৭০ %
একটানা ১৮ মাস মূল্যবৃদ্ধি ১০ শতাংশের বেশি
কেন্দ্রীয় মজুত ভাণ্ডারে চাল-গম পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন
‘দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা’, বললেন ইয়েচুরি 
===============================
 

Comments :0

Login to leave a comment