DYFI INSAAF YATRA

ইনসাফ চাইতে ‘ইনসাফ যাত্রায়’ কেতুগ্রামের মানুষ

রাজ্য

নতুন ভোর, নতুন অভিজ্ঞতা! যে মাটিতে গণতন্ত্রকে পদপিষ্ট করেছে শাসকের দুষ্কৃতীরা সেই কেতুগ্রাম-১ অঞ্চলের মানুষই যেন ইনসাফ চাইতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন। তৃণমূল এই সময়ে ১৪জন সিপিআই(এম) কর্মীকে খুন করেছে। সেই সব শহীদ পরিবার  ইনসাফ পায়নি। শুধু তায় নয় গত ১২ বছরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে খুন হয়েছে শাসকের দলীয় নেতা ২০-২২জন। তারাও ইনসাফ পায়নি। ৩৬ জন তৃণমূলের নেতা, কর্মীকে গাঁজা কেস দিয়ে জেলে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলকোটে খুন হয় ফাল্গুনী মুখার্জি, শিশির চ্যাটার্জি, গোপেশ্বর পাল, হরপ্রসাদ গোস্বামী। এছাড়াও কাটোয়াতে খুন হয়েছেন সিপিআই(এম) নেতা কার্তিক মন্ডল। এই বধ্যভূমিতে আইন বলে কিছু নেই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনো বিরোধীদল মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। লুঠ হয়েছে শুধু ভোট নয়, পঞ্চাবেত, জনগনের অর্থও। তানা হলে দিনের আলোতে বাস থেকে নামিয়ে কেতুগ্রামের হাটতলায় সিপিআই(এম) কর্মী বানেশ্বর ও লক্ষ্মী মাজিকে খুন করে?  তারপর সেই একইভাবে খুন হন সিপিআই(এম)’র আর এক কর্মী মালেক শেখ’কেও হত্যা করা হয়। সেই খুনের বিচার চায়ছে কেতুগ্রামের মানুষ। বৃহস্পতিবার সকালেই গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছে যে মাটিতে সেই কেতুগ্রামের কচুটিয়া গ্রাম থেকে মর্তুজা শেখ’রা শামিল হয়েছেন ইনসাফ যাত্রাতে। প্রশ্ন করে ছিলাম মিছিলে হাঁটছেন শাসকের রোষে পড়বেন তো? এই খেতমজুর বলেছেন আর ভয় পায় না। মরবো তো একবার কিন্তু বাঁচার জন্য ইনসাফ যাত্রায় এসেছি। এত ক্ষোভ কেন শাসকের বিরুদ্ধে? এই প্রশ্নের উত্তর ছিল চটজলদি গ্রামে ভোট হয়না, পঞ্চায়েতে সব লুট করে খায় তৃণমূল। এমনই কাদরা’র দাস পাড়ার দলে দলে গরিব খেতমজুর রাস্তায় নেমে ইনসাফ যাত্রার সামনে এসে ফুল দিয়ে সংবর্ধিত করেছেন। কাদরা’র আহ্লাদি মাজি, যোগমায়া মাজিরা গাঁদা ফুলে মালা তৈরি করে প্রতিনিধিদের গলায় পড়িয়ে দিতে গিয়ে  চোখের জল ফেলেছেন, তোমরা লড়ে যদি আমাদের কাজের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারো। ২বছর ধরে কাজ নেই, ১০০ দিনের কাজ চাইতে গেলে পঞ্চায়েত থেকে তাড়িয়ে দেয়। 
কেতুগ্রামের কাদরা ও কোমরপুরে দলে দলে মানুষ রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে ইনসাফ যাত্রাকে স্বাগত জানিয়েছেন। মাঝ পথেই প্রতিবন্ধী শিক্ষিত যুবক বরকত মোল্লা ইনসাফ যাত্রায় হাঁটার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁকেও নেওয়া হয়। জিয়োগ্রাফিতে এম এ এই বেকার যুবক কাজ না পেয়ে শামিল এই মিছিলে। মঙ্গলকোটের কৈচর ও ভাতার, বলগোনাতে ব্যাপক মানুষের জমায়েত ইনসাফ যাত্রার প্রতিনিধিদের মনোবল আরো বাড়িয়েছে।
এদিন কেতুগ্রামে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে খুন হন সিপিআই(এম) কর্মী কমরেড পুলক সরকার তাঁর বাড়িতে যান মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, অয়নাংশু সরকার ও অমিত মন্ডল। তাঁরা এই পরিবারের পাশে থাকার বার্তা বার্তা দিয়েছেন। শহীদ পুলক সরকারের স্ত্রী বলেছেন আমার স্বামীর হত্যার বিচার চায় আমরা। তাঁর মেয়েও বলেছেন, আর যেন কোন মেয়ে তাঁর বাবাকে অকালে না হারায়। মীনাক্ষী মুখার্জিও বলেছেন তাঁদের লড়ায়ে শেষ পর্যন্ত থাকবে ডিওয়াইএফআই। এদিন পুলক সরকারের প্রতিকৃতি নিয়ে তাঁর স্ত্রী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। খুনীরা যাতে কোনভাবেই ছাড়া না পায় তার জন্য তাঁরাও লড়াই করার শপথ নিয়েছেন।

Comments :0

Login to leave a comment