SSC TET

৩২২৯ টেট উত্তীর্ণকেই নিয়োগের নির্দেশ বহাল

রাজ্য

SSC TET RECRUITMENT SCAM WEST BENGAL

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দেওয়া তথ্যে মান্যতা দিয়ে ৩৯২৯ জনকে শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশ বহাল রাখলো কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিসন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রেখেছে। এই নির্দেশের ফলে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ মেধা তালিকায় রয়েছেন এমন প্রায় চার হাজার প্রার্থীকে শিক্ষক পদে নিয়োগ করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এই নিয়োগ করবে।  


টেট প্রাথমিকে মেধা তালিকায় নাম আছে এমন প্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। ১১ নভেম্বর মামলাটির পরবর্তী শুনানির জন্য  রাখা হয়েছিল। সিঙ্গেল বেঞ্চের এই নির্দেশের বিরোধিতা করে ডিভিসন বেঞ্চে মামলা করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। শুক্রবার ডিভিসন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখার ফলে মেধা তালিকায় রয়েছেন অথচ দুর্নীতির কারণে যাঁরা নিয়োগপত্র পাননি এমন প্রায় চার হাজার প্রার্থী স্বস্তি পেলেন। এই সংখ্যার মধ্যে ২৫২ জন প্রার্থী যাঁরা নথি জমা দিয়ে আদালতের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁদের পৃথকভাবে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গেল বেঞ্চ। 


শুক্রবার ডিভিসন বেঞ্চ এই ২৫২ জন প্রার্থীকে একই সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাখতে বলেছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আগেই তাঁদের হলফনামায় হাইকোর্টকে জানিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষক পদে ৩৯২৯টি পদ শূন্য রয়েছে। টেটে সফল, মেধা তালিকায় নাম রয়েছে এমন কমবেশি ৪ হাজার প্রার্থীকে নিয়োগ করতে হবে। এই প্রার্থীদের বয়সের হিসাব হবে টেটে’র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে।


২০১৪ সালে টেট বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর প্রায় ২৩ লক্ষ প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। এঁদের মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছিলেন ২১ লক্ষ। এই বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষাকতার চাকরি পেয়েছেন ৬০ হাজার। এই শিক্ষাকদের নিয়োগ নিয়েই টেট দুর্নীতি সামনে এসেছে। ২০১৪ সালের পরীক্ষার পর প্রথম নিয়োগ হয় ২০১৬ সালে। প্রথম পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নিয়োগ করেছিল ৪২ হাজার ৯৪৯ জনকে। এরপর ফের নিয়োগ শুরু হয় ২০২০ সালে। এই বছর নিয়োগ হয়েছিল ১৬ হাজার ৫০০ শিক্ষক। দু’দফায় মোট শিক্ষক নিয়োগ হয় ৫৯ হাজার ৪৪৯ জন। এই নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে বহু মামলা দায়ের হয়েছে। এই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দিয়েছে আদালত। 
 

২০২০ সালে নিয়োগ নোটিস জারি করার পরই কোভিড সংক্রমণের কারণে সমস্ত কাজই বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। কিন্তু এই কোভিড সংক্রমণের সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তার নিয়োগের কাজ চালিয়ে গিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে ২৫২ জন প্রার্থী তাঁদের আবেদনে সমস্ত নথি জমা দিয়ে জানান, তাঁরা যোগ্য প্রার্থী হিসাবে বিবেচিত হলেও ২০২০ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়ার চাকরির চিঠি পাননি। আদালত এই ২৫২জনকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। শুক্রবার ডিভিসন বেঞ্চ এই নিয়োগের নির্দেশ বহাল রেখেছে। তবে সমস্ত নিয়োগ একই সঙ্গে করার কথা বলেছে। আবেদনকারীদের পক্ষে আদালতে রয়েছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, বিক্রম ব্যানার্জি, ফিরদৌস সামিম, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত।

 

 

Comments :0

Login to leave a comment