TRIPURA ASSEMBLY ELECTION CANDIDATE LIST

ত্রিপুরায় ৪৬ আসনে লড়বে বামফ্রন্ট

জাতীয়

TRIPURA ASSEMBLY ELECTION 2013 BJP CPIM CONGRESS TIPRA MOTHA BENGALI NEWS

বিজেপি’কে পরাস্ত করার আহ্বানে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করলো বামফ্রন্ট। বুধবার সন্ধ্যায় আগরতলায় দশরথ দেব ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন রাজ্য বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ কর এবং সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরি। রাজ্যে বিজেপি বিরোধী সমস্ত ভোট একত্র করার আহ্বান জানানো হয়েছে সাংবাদিক বৈঠক থেকে। রাজ্যে নির্বাচনী আসন সমঝোতা হয়েছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের। সেই মোতাবেক ৬০ আসনের আসনের বিধানসভায় কংগ্রেসের জন্য ১৩টি আসন ছাড়া হয়েছে। আগরতলার রামনগর কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামফ্রন্ট। বাকি ৪৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বামফ্রন্ট। 


বুধবার সেই ৪৬টি আসনের মধ্যে ৪৫টি আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। এরমধ্যে সিপিআই (এম) ৪৩টি আসনে, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি একটি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ফরওয়ার্ড ব্লক বাধারঘাট আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবার। সেই আসনের প্রার্থী ফরওয়ার্ড ব্লক পরে ঘোষণা করবে। ত্রিপুরাতে বামফ্রন্টই প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলো। শাসক দল বিজেপি বা অন্য দলগুলি এদিন পর্যন্ত প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি। 


ত্রিপুরায় ৬০ আসনের বিধানসভায় ২০টি আসন তফসিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। ১০টি আসন তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত ২০টি আসনের মধ্যে ৩টি আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে বাকি ১৭ আসনে প্রার্থী দিয়েছে বামফ্রন্ট। ১০টি তফসিলি সংরক্ষিত আসনের সবগুলিতেই প্রার্থী থাকবে বামফ্রন্টের। বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকায় ২৪ জন নতুন প্রার্থী রয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ প্রজন্মের। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন না।

সাংবাদিক বৈঠকে বামফ্রন্ট আহ্বায়ক নারায়ণ কর জানিয়েছেন, তিনি গোটা রাজ্যের নির্বাচনে নেতৃত্ব দেবেন। একইভাবে রাজ্যের সিপিআই (এম)’র প্রবীণ নেতারা অধিকাংশই নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এদের মধ্যে আছেন বাদল চৌধুরি, ভানুলাল সাহা, তপন চক্রবর্তী, সহীদ চৌধুরি, নারায়ণ চন্দ্র চৌধুরি, যশবীর ত্রিপুরা। 

এছাড়াও কৈলাসহর আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়ায় সেখানের বর্তমান বিধায়ক মবস্বর আলিও প্রার্থী হননি। বামফ্রন্টের বর্তমান বিধায়কদের মধ্যে এবার ৮ জন প্রার্থী হচ্ছেন না। পার্টি নেতা অঘোর দেববর্মা এবং মানিক দে ফের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরি সাব্রুমের সাধারণ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

 
বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা জানানো হয়েছে সিমনা (তউ) কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন কুমুদ দেববর্মা, বামুটিয়া (তজা) নয়ন সরকার, বড়জলায় (তজা) সুদীপ সরকার, খয়েরপুরে পবিত্র কর, মজলিশপুরে মানিক দে, মান্দাই নগর (তউ) রাধাচরণ দেববর্মা, টাকারজলা (তউ) শ্যামল দেববর্মা, প্রতাপগড় (তজা) রামু দাস, কমলাসাগর হিরন্ময় নারায়ণ দেবনাথ, বিশালগড় পার্থপ্রতিম দেবনাথ, গোলাঘাটি (তউ) বৃন্দা দেববর্মা, বক্সনগর শামসুল হক, নলছর (তজা) তপন দাস, সোনামুড়া শ্যামল চক্রবর্তী, ধনপুর কৌশিক চন্দ, রামচন্দ্রঘাট (তউ) রঞ্জিত দেববর্মা, খোয়াই নির্মল বিশ্বাস, আশারামবাড়ি (তউ) অঘোর দেববর্মা, কল্যাণপুর-প্রমোদনগর মণীন্দ্র দাশ (তজা), কৃষ্ণপুর (তউ) ষষ্ঠী দেববর্মা, বাগমা (তউ) নরেশ জমাতিয়া, রাধাকিশোরপুর শ্রীকান্ত দত্ত (আরএসপি), কাকরাবন-শালগড়া (তজা) রতন কুমার ভৌমিক, রাজনগর (তজা) সুধন দাস, বিলোনিয়া দীপঙ্কর সেন, শান্তিরবাজার (তউ) সত্যজিৎ রিয়াঙ (সিপিআই), হৃষ্যমুখ অশোক মিত্র, জোলাইবাড়ি (তউ) দেবেন্দ্র ত্রিপুরা, মনু (তউ) প্রভাত চৌধুরি, সাব্রুম জীতেন্দ্র চৌধুরি, অম্পিনগর (তউ) পরীক্ষিত কলই, অমরপুর পরিমল দেবনাথ, করবুক (তউ) প্রিয়মণি দেববর্মা, রাইমাভ্যালি (তউ) পবিন ত্রিপুরা, সুরমা (তজা) অঞ্জন দাস, আমবাসা (তউ) অমলেন্দু দেববর্মা, ছামনু (তউ) জীবনমোহন ত্রিপুরা, পাবিয়াছড়া (তজা) সমীরণ মালাকার, ফটিকরায় (তজা) সুব্রত দাস, চণ্ডীপুর কৃষ্ণেন্দু চৌধুরি, কদমতলা-কুর্তি ইসলাম উদ্দিন, বাগপাসা বিজিতা নাথ, যুবরাজনগর শৈলেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, পানিসাগর শীতল দাস, কাঞ্চনপুর (তউ) রাজেন্দ্র রিয়াঙ। 

এছাড়া রামনগর কেন্দ্রে আইনজীবী পুরুষোত্তম রায়বর্মণ নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। মানবাধিকার লড়াইয়ের এই কর্মীকে বামফ্রন্ট সমর্থনের কথা জানিয়েছে। 
কংগ্রেস মোহনপুর, আগরতলা, টাউন বড়দোয়ালি, বনমালিপুর, সূর্যমণিনগর, চড়িলাম (তউ), তেলিয়ামুড়া, মাতাবাড়ি, কমলপুর, করমছড়া (তউ), কৈলাসহর, ধর্মনগর এবং পেচারথল (তউ) কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। দিল্লি থেকে এআইসিসি কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে। 


এদিন সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরি ত্রিপা মথার সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জানান, গ্রেটার ত্রিপ্রাল্যান্ডের অর্থ বা উদ্দেশ্য যদি ত্রিপুরার উপজাতি মানুষের আর্থ -সামাজিক সাংস্কৃতিক এবং ভাষাগত উন্নয়নের প্রশ্ন হয়, তাহলে বামফ্রন্ট তাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। তিনি জানান, মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে ত্রিপ্রা মথার প্রধান প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য দেববর্মণের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি তাঁকে বলেছেন, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে এডিসি এলাকাকে আরও গ্রেটার অটোনমি কিভাবে দেওয়া যায় সেই বিষয়ে বামফ্রন্ট ও মথা একসঙ্গে যৌথ কমিটি বানিয়ে কাজ করতে পারে। সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও তাঁকে দেওয়া হয়েছে বলে জীতেন্দ্র চৌধুরি জানান। কিন্তু মথা প্রধান তারপর আর কিছু জানাননি বলে মন্তব্য করেন সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক।

এরসঙ্গেই তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, এখনও আমরা খোলা মনে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। কংগ্রেসকে যে ১৩টি আসন দেওয়া হয়েছে, সেটা বাদ দিয়ে বামফ্রন্ট প্রার্থী দিয়ে দিলেও বাকি আসন নিয়ে ত্রিপ্রা মথা চাইলে এখনও বামফ্রন্ট আলোচনায় রাজি। জীতেন্দ্র চৌধুরিকে প্রশ্ন করা হয়, কংগ্রেস ১৩টি আসনে সমঝোতা মেনে নিয়েছে কি না? জবাবে তিনি জানান প্রাথমিকভাবে কংগ্রেসের জন্য ১২টি আসন ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু এদিন সকালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা এবং অজয় কুমার অনুরোধ করেন ধর্মনগর আসনটি নিয়ে বিবেচনা করতে। সেই আসনটিও বামফ্রন্ট কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছে।


 

Comments :0

Login to leave a comment