SSC PROTEST

এসএসসির প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলকাতায় পথে চাকরিহারারা

রাজ্য কলকাতা

ডোরিনা ক্রসিং অবরোধে চাকরিহারারা।

‘যারা যোগ্য, তাদের চাকরিতে বহাল রাখতে হবে।’ এই দাবি তুলে শিয়াদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের চাকরিহারারা মিছিল করেন। শিয়ালদহ থেকে মৌলালী হয়ে মিছিল ধর্মতলায় যাওয়ার কথা থাকলেও পুলিশ রাস্তা বদল করে। মিছিল শিয়াদহ, বহুবাজার হয়ে ধর্মতলায় যায় মিছিল।

এদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যোগ্য চাকরিহারারা মিছিলে যোগদান করেন। কলকাতার রাজপথে তারা স্লোগান তোলেন অবিলম্বে যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে এসএসসিকে। কসবার ডিআই অফিসে চাকরিহারাদের ওপর পুলিশের যেই আক্রমণ তার সমালোচনাও করেছেন আন্দোলনকারিরা। মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রীকে ধিক্কার জানিয়ে স্লোগান তোলেন তারা।

হাবড়ার প্রফুল্ল নগর স্কুলের চাকরিহারা শিক্ষক সাগর মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি নিজে নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছিলাম আমাদের কি হবে, উনি বলেন স্বেচ্ছা শ্রম দিতে হবে। কেন, আমরা পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছি। দুর্নীতির দায় সরকারকে নিতে হবে।’’

আর এক চাকরিহারা শিক্ষিকা রূপা ব্যানার্জি বলেন, ‘‘আমাদের দাবি একটাই ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশ করতে হবে। যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা কেন প্রকাশ করতে পারছে না সরকার? অবিলম্বে সেই তালিকা সরকার এবং এসএসসিকে প্রকাশ করতে হবে।’’

গতকাল কসবা ডিআই অফিসে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে পুলিশের কাছে মার খেতে হয়েছে অমিত কুমার ভুঁইয়াকে। গায়ে পুলিশের লাঠির দাগ নিয়ে মিছিলে পা মেলান তিনি। চাকরিহারা অমিত বলেন, ‘‘আমরা যোগ্য আমাদের চাকরি চলে গিয়েছে। আমরা কাল ডিআই অফিসে গিয়েছিলাম স্মারকলিপি দিতে, সেখানে গিয়ে আমাদের লাঠি, লাথি জুটেছে। আমি মার খেয়েছি, আমাদের অনেক সহকর্মী মার খেয়েছে। কোনদিন এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে ভাবতে পারিনি।’’

চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা এদিন সাধারণ নাগরিকদেরও আহ্বান জানান তাদের এই প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হওয়ার জন্য। চাকরিহারাদের এই লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানিয়ে মিছিল পা মেলান বহু শিক্ষকও, ছিলেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র, জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দেবাশীষ হালদার, আসফাকুল্লা নাইয়া। 

দেবাশীষ বলেন, ‘‘একজন নাগরিক হিসাবে এই প্রতিষ্ঠানিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে পথে নেমেছি। জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট এই আন্দোলনের পাশে আছে। আমরা আজ এই আন্দোলনে কোন চিকিৎসক হিসাবে আসিনি একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে এসেছি। আমাদের লড়াই যেমন বিচারের জন্য এদেরও লড়াই বিচারের জন্যই।’’

মিছিল ধর্মতলা মোড়ে এলে কিছুক্ষণের জন্য ডোরিনা ক্রসিং অবরোধ করেন আন্দোলনকারিরা। চলে সংক্ষিপ্ত সভা। শতান্দী দাস, যিনি পেশায় একজন শিক্ষিক সভায় বলেন, ‘‘সরকারের মদতে দুর্নীতি। সরকারের মাথায় যে আছে সে সব জানে। এর আগে স্কুল গুলো শেষ করেছে, এখন শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভবিষৎ শেষ করছেন।’’ তিনি দাবি করেন নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী যেই কথা গুলো বলেছেন আশ্বাস হিসাবে তাতে কোন আইনি দিক নেই।’’ শতাব্দী দাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছে পুষিয়ে দেবেন এটা কোন কথা নয়। যারা যোগ্য তারা কি সিভিক হয়ে থাকবে? আমি আবেদন করবো কেউ আন্দোলন থেকে সড়ে যাবেন না।’’ 

ওই শিক্ষিকা আরও বলেন, ‘‘পুলিশের মার আসবে, কেস দেওয়া হবে এর সাথে অভ্যস্থ হতে হবে আমাদের। মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’’ 

Comments :0

Login to leave a comment