আড়াই বছর ধরে চলা বার্মার গৃহযুদ্ধে বড়সড় সাফল্য পেল সেদেশের বিদ্রোহীরা। বৃটিশ সংবাদসংস্থা বিবিসি জানাচ্ছে, চীন সীমান্ত লাগোয়া চীনশিওয়েহাও শহরের দখল নিয়েছেন বিদ্রোহীরা। এই শহরের স্থলবন্দর দিয়েই চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চালায় বার্মা। বার্মার সামরিক প্রশাসনের মুখপাত্র ঝাও মিন টুন জানিয়েছেন, চীনশিওয়েহাও শহরের সম্পূর্ণ দখল নিয়েছে বিদ্রোহীরা। শহর থেকে সমস্ত স্তরের সরকারি কর্মী এবং পুলিশ ও সেনা বাহিনীর সদস্যদের সরিয়ে আনা হয়েছে।
বার্মার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ২৭ অক্টোবর থেকে বার্মার তিনটি বিদ্রোহী সংগঠন একযোগে সেনার বিরুদ্ধে অভিযানে নামে। চীনশিওয়েহাও শহরের দখল নেওয়ার পাশাপাশি বার্মার সেনার কয়েক ডজন ঘাঁটি এবং সেনা ছাউনিরও দখল নিয়েছে তাঁরা। শতাধিক সেনা জওয়ান বিদ্রোহীদের হাতে বন্দী হয়েছেন।
বার্মার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, এই তিনটি বিদ্রোহী সংগঠন হল মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি, টা’ঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি। এই যৌথ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন ১০২৭।
সেনার এই ব্যর্থতায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বার্মার রাষ্ট্রপতি মিন্ট সোয়ে। ২০২১ সালে গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুৎ করে ক্ষমতা দখল করে বার্মার সেনা। সেনা বাহিনীর তৎকালীন জেনারেল মিন্ট সোয়ে’কে রাষ্ট্রপতির পদে বসায় সামরিক বাহিনী।
বিবিসি জানাচ্ছেন, এই পরাজয়ের পরে সামরিক বাহিনীর মিলিটারি কাউন্সিলের তরফে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে সোয়ে বলেছেন, বিদ্রোহীদের গতি রোধ করতে না পারলে দেশের অখণ্ডতা রক্ষা করা কঠিন হবে। তিনি সামরিক বাহিনীকে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৫ মে বার্মার দখল নেয় সেদেশের সেনা। তারপর থেকেই বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে। আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের দাবি, বার্মার ৩৩০টি শহরের মধ্যে ৭২ থেকে ২২০টি শহরের দখল রয়েছে সেদেশের সেনার হাতে। বাকিগুলি নিয়ন্ত্রণ করছে বিদ্রোহীরা। যদিও দেশের সমস্ত বড় শহরের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সেনার হাতেই। অপরদিকে গ্রামাঞ্চলের ৪০ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে বার্মার সেনাবাহিনী।
Comments :0