Teesta Satellite Image

বদলাচ্ছে তিস্তা, উপগ্রহ চিত্র পেতে ইসরোকে চিঠি সেচ দপ্তরের

জেলা

তিস্তার গতিপথের বদল বুঝতে উপগ্রহ চিত্র চাইছে সেচ দপ্তর।

দীপশুভ্র সান্যাল

বর্ষার শুরুতে সিকিমে অতি বৃষ্টির জেরে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে তিস্তা। গত দুই বছর ধরে ঘনঘন বদলাচ্ছে তার গতিপথ। ফলে বাড়ছে ভাঙন, বিপন্ন জনপদ। 
তিস্তার গতিপথ জানতে এবার ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্যের সেচ দপ্তর। ইসরোর কাছ থেকে তিস্তার স্যাটেলাইট ইমেজ পেতে চাইছে তারা। ইতিমধ্যে দপ্তর তিস্তা নিয়ে ইতিমধ্যে সমীক্ষা করেছে। তাতে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। তিস্তার স্যাটেলাইট ইমেজও পাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। 
পরিবেশ প্রেমীদের মতে তিস্তায় বাঁধ দিয়ে অবৈজ্ঞানিকভাবে সিকিমে ছ’টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। তার জেরেই আগ্রাসী হয়ে উঠেছে নদী। পাহাড় থেকে বিপুল জলরাশির সঙ্গে বোল্ডার, মাটি নিয়ে এসে সমতলে ফেলছে তিস্তা। ফলে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের চার জেলাকে ভুগতে হচ্ছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে সিকিমের লোনক হ্রদ বিপর্যয়ের পর থেকে তিস্তার অবস্থা ‘বিপজ্জনক’ হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন সেচ দপ্তরের উত্তর পূর্বের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক। 
তিনি বলেন, আমাদের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, সিকিমের বিপর্যয়ের জেরে সমতলে তিস্তার তলদেশ ৩-৫ ফুট উঁচু হয়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও নদীখাত এতটা উঁচু হয়ে গিয়েছে যে, নীচে চলে গিয়েছে জনপদ। দীর্ঘ গতিপথে তিস্তার বর্তমান অবস্থা জানতে স্যাটেলাইট ইমেজের প্রয়োজন। এনিয়ে রাজ্যে প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। 
তিনি বলেন, আগে যেখানে কয়েক দশক পর তিস্তার গতিপথের বদল হতো, ২০২৩ সালে সিকিমে বিপর্যয়ের পর দেখা যাচ্ছে, প্রতি বছরই ওই নদীর গতিপথ বদলাচ্ছে।
তিস্তা নদী সিকিম থেকে আসছে। ফলে এটা শুধু বাংলার বিষয় নয়। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার এনিয়ে টুঁ শব্দ করছে না। নদীখাতের গভীরতা বাড়াতে ড্রেজিং এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেচ দপ্তর। 
জানা গেছে ইতিমধ্যে সেবকের কাছে গতিপথ বদলে তিস্তা ঢুকে পড়েছে ডানদিকে। ফলে চমকডাঙি ও লালটং বস্তির মতো দীর্ঘদিনের দু’টি জনপদ কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য। ক্রান্তির চ্যাংমারি এলাকায় এসে আবার বাঁদিকে বাঁক নিয়েছে তিস্তা। ফলে সেখানেও বিপন্ন গ্রাম। নদীর জল ঢুকে পড়ায় এবারও চ্যাংমারির পশ্চিম দলাইগাঁও এলাকার প্রায় শ’খানেক পরিবারকে ঘর ছাড়তে হয়েছে। ঠাঁই নিতে হয়েছে বাঁধে। গজলডোবার কাছে তিস্তা ডানদিকে ঘুরে যাওয়ায় বিপদের আশঙ্কায় দিন গুনছেন স্থানীয় মিলনপল্লির বাসিন্দারা। 

Comments :0

Login to leave a comment