গাজায় ইজরায়েলী হামলায় ৬১ জন প্যালেস্তিনী নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ জন ত্রাণপ্রার্থীও রয়েছেন। বুধবার ভোর থেকে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইজরায়েলী বাহিনীর হামলায় এই নিহতের ঘটনা ঘটে। এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায়  ইজরায়েলী হামলায় কমপক্ষে ১২০ জন প্যালেস্তিনী নিহত এবং ৪৭৪ জন আহত হয়েছেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের ধ্বংসস্তূপ থেকে পূর্ববর্তী ইজরায়েলী হামলায় নিহত তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলেও মন্ত্রক জানিয়েছে। বুধবার সকাল থেকে ইজরায়েলী হামলায় ৩৯ জন ত্রাণপ্রার্থী নিহত ও কমপক্ষে ৩৬৩ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এর ফলে ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে মোট নিহতের সংখ্যা ২২৪ জনে দাঁড়িয়েছে, আহত হয়েছে আরও ১ হাজার ৮৫৮ জন।
এদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে মোট নিহতের সংখ্যা ৫৫ হাজার ১০৪ জন। আহত হয়েছে ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৩৯৪ জন। চলতি বছরের মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইজরায়েল ৪ হাজার ৮২১ জন প্যালেস্তিনীকে হত্যা করেছে এবং ১৫ হাজার ৩৫৩ জন আহত হয়েছে।
বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে নিহতদের অর্ধেকেরই বেশি মহিলা এবং শিশু। সকাল থেকে উত্তর গাজার আল-শিফা হাসপাতালে ২৭ জন, নুসেইরতের আল-আওদা হাসপাতালে ৭ জন, দিয়ের আল-বালাহ হাসপাতালে ২ জন এবং দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ২৫ জনের দেহ আনা হয়।
দশকের দশক ধরে চলা জায়নবাদী আগ্রাসনের ফলস্বরূপ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজরায়েলে গাজার প্রশাসক হামাসের সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানের পালটা ইজরায়েলী সেনা গাজা হামলা শুরু করে। ক্রমে যা প্যালেস্তিনীয়দের সুপরিকল্পিত গণহত্যায় পরিণত হয়। ইতিমধ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদতে চলা ইজরায়েলী বর্বরতায় ৫৫,১০৪ জন প্যালেস্তিনীয়র মৃত্যু হয়েছে। আহত ১ লক্ষ ২৭ হাকার ৩৯৪ জন। এছাড়া নিখোঁজ ৬৭ হাজারের ওপর। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার মতে যাঁদের বেশির ভাগেরই মৃত্যু হয়েছে। ভেঙে পড়া ইমারত, বহুতল অথবা অন্যান্য বিধ্বস্ত পরিকাঠামোর তলায় চাপা পড়ে থাকায় আজ যাঁরা নিখোঁজ। ক্রমাগত আক্রমণের জেরে বর্তমানে গাজার মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত। শরণার্থী জীবনে অকুল পাথারে ভেসে চলেছেন। এরই মাঝে গত মার্চের শেষে হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি একতরফাভাবে ভেঙে ইজরায়েলের সরকার গণহত্যা অব্যাহত রাখার সঙ্গেই গাজায় চরম অমানবিক অবরোধ করে রেখেছে। গত মে মাসে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইজরায়েলের যুদ্ধবাজ ও দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধানমন্ত্রী নেতানেয়াহুর সরকার গাজায় পরিমিত মাত্রায় ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশের ব্যবস্থা করে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এবং সব সময় তা দেওয়া ও হচ্ছে না। এরই সঙ্গে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইজরায়েলের জান্তব সেনাদের শিকার হতে হচ্ছে অসহায় মহিলা ও শিশুদের।