পাঁচদিন পরও স্বাভাবিক হয়নি লস এঞ্জেলস। অভিবাসীদের ধরপাকড়ের জেরে বিক্ষোভ সামলাতে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বুধবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার জন্য দায়ী করেছেন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
অভিবাসীদের ধরপাকড়ের নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়াচ্ছে আমেরিকার অন্য শহরেও। নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, এমনকি ওয়াশিংটনে বিক্ষোভের খবর দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমই।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর বা লস এঞ্জেলসের মেয়রের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্রীয় বাহিনী বা ন্যাশনাল গার্ড শহরে মোতায়েন করেছেন ট্রাম্প। মোতায়েন করা হয়েছে ইউএস মেরিনের বিশাল বাহিনীকে। ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ডের সঙ্গে যোগ দিয়েছে প্রায় সাতশো নৌসেনা।
বিভিন্ন অংশই বলেছে যে আসলে অভিবাসন রোধ ট্রাম্পের মাথ্যাব্থা নয়। তাঁর আসল উদ্দেশ্য কর্তৃত্ববাদ কায়েম করা। ট্রাম্পের নিজের দল রিপাবলিকান পার্টিরও সব অংশ এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করবে কিনা তোলা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্নও।
নিউসম মঙ্গলবার বলেছেন, বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে পুলিশই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ড্রোনাল ট্রাম্প কয়েক হাজার ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোয় বিক্ষোভ তীব্র হয়েছে।
নিউসম ফের বলেছেন যে ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে কথা না বলেই কয়েক হাজার জাতীয় সুরক্ষা বাহিনী অবৈধ ভাবে মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন। যার ফলে সাধারণ মানুষ, পুলিশ এমনকি সুরক্ষা বাহিনীকেও বিপদের মুখে পড়তে হয়েছে।
নিউসম এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। আবার ট্রাম্প নিউসমকে গ্রেপ্তারির হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। আমেরিকার রাজনৈতিক মহলে এই আলোচনা জোরালো হয়েছে যে চরম কর্তৃত্ববাদী আস্ফালন দেখিয়ে বিরোধিতা ধামাচাপা দিতে চাইছেন রাষ্ট্রপতি।
ট্রাম্পের আমদানি শুল্ক বাড়ানোর নীতিতে আমেরিকায় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। এর মধ্যে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাশ বিলে নিম্নবিত্ত এবং শ্রমজীবীদের স্বাস্থ্যের জন্য সরকারি বরাদ্দে বিশাল কাটছাঁটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। উলটোদিকে কর্পোরেট এবং বিপুল ধনীদের কর ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার আগে থেকেই সরকারি কর্মী ছাঁটাইয়ে নেমেছেন ট্রাম্প। ফলে ক্ষোভ গত একমাসে কয়েকদফায় আছড়ে পড়েছে রাস্তায়।
অভিবাসীদের একতরফা অবৈধ ঘোষণা করে নিজের দেশে পাঠাতে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’ বা ‘আইস’ চালু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। অভিবাসন বিপুল বেড়ে গিয়েছিল পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের শাসনে, এমন তথ্য দেখাতে পারেননি ট্রাম্প।
লস এঞ্জেলসে বিক্ষোভের সময় আগুন লাগানো, সম্পত্তি ভাঙচুরের দায়ে ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে ট্রাম্পের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি বলেছেন ‘আরও এগোতে ভয় পাবে না প্রশাসন।’
Los Angeles Protest
কারফিউ লস এঞ্জেলসে, ট্রাম্প সেনা নামালেও বিক্ষোভ ছড়াচ্ছে আমেরিকায়

×
Comments :0