BILKIS BANO

বিলকিস কান্ডে কড়া প্রতিক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টের

জাতীয়

BILKIS BANO GUJRAT POGROM SUPREME COURT BENGALI NEWS

আজ এটা বিলকিস বানোর সঙ্গে হয়েছে। আগামী দিনে এটা আপনার কিংবা আমার সঙ্গে, বা আমাদের পরিবারের কারোর সঙ্গে হবে না সেটা কে বলতে পারে? 

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে বিলকিস বানোর ধর্ষক এবং তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যের খুনীদের মুক্তির বিরোধীতা করে দায়ের হওয়া পিটিশনের শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীন বিচারপতি কেএম জোসেফ এবং বিচারপতি বিভি নাগারাথনা’র তরফে উঠে এলো এমনই পর্যবেক্ষণ। একইসঙ্গে কেন ধর্ষকদের মুক্তি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যাবতীয় নথিও আদালত তলব করেছে। 

২০২২ সালের ১৫ আগস্ট বিলকিস বানোকে ধর্ষণ এবং তাঁর ৩ বছরের মেয়ে সহ তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১১ আরএসএস কর্মীকে মুক্তির নির্দেশ দেয় গুজরাট সরকার। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত তাদের সাজা ঘোষণা করেছিল। অপরাধীদের মুক্তি প্রসঙ্গে গুজরাট সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি ছিল, জেলে নাকি ভালো আচরণ করেছেন ওই ১১জন। তাই ১৪ বছর জেলে কাটানোর পরে তাঁদের মুক্তি দেওয়াই যেতে পারে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিলকিস বানো। নিজের পিটিশনে তিনি জানান, এই অপরাধীদের মুক্তির ফলে সমাজের বিবেকে আঘাত লেগেছে। 

সেই পিটিশনের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে প্রথম শুনানি হয়। মঙ্গলবার বিচারপতি জোসেফ এবং নাগারাথনার বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকার এবং গুজরাট সরকারকে ১১ অপরাধীর মুক্তি সম্পর্কিত সমস্ত নথি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। যদিও গুজরাট এবং কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই ‘প্রিভিলেজ’ বা বিশেষ সাংবিধানিক অধিকারকে হাতিয়ার করে সেই নথি দেখাতে অস্বীকার করার কথা ভাবছে। সরকারি আইনজীবীর বক্তব্যে এমনটাই উঠে এসেছে।

শুনানি চলাকালীন আদালত জানিয়েছে, একজন অন্ত্বসত্তা মহিলাকে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করা হয়েছিল। তাঁর চোখের সামনে তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়েছিল। এই গণহত্যাকে সাধারণ খুনের সঙ্গে এক করে দেখানোর চেষ্টা চলছে। এটা হতে পারে না। 

এরপরেই আদালাত জানায়, সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে, ঠিক কোন ভাবনা থেকে এমন জঘন্য ঘটনায় যুক্ত অপরাধীদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। আজ এটা বিলকিস বানোর সঙ্গে ঘটেছে। কাল এটা অন্য যে কারোর সঙ্গে ঘটতে পারে। সরকার কেন এই সিদ্ধান্ত নিল, তা যদি আদালতকে জানানো না হয়, তাহলে আদালত নিজেই এই বিষয়ে উপসংহার টানবে।

বিলকিস বানো ছাড়াও বহু সমাজকর্মী ওই ১১ ধর্ষক ও খুনীর মুক্তির বিরোধীতা করে পিটিশন দাখিল করেছেন। সেই পিটিশনগুলির শুনানি হবে ২ মে। 

Comments :0

Login to leave a comment