QATAR WORLD CUP

নজরে দশ

খেলা

FIFA WORLD CUP QATAR FOOTBALL 2022 WORLD CUP

কাতারে আজ থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে ফুটবল মহাযজ্ঞ। ২০২২ বিশ্বকাপই হয়তো শেষ বিশ্বকাপ হতে চলেছে দুই মহাতারকার। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিওনেল মেসির। তারসঙ্গে হয়তো ম্যানুয়েল ন্যুয়েরও। এঁদের দিকে তো চোখ থাকবেই। আর বিশ্বকাপ তো ভবিষ্যতের তারকা চিনিয়ে দেয়, ‘এমার্জিং ফুটবলার’ কারা হতে পারেন, দশজন ফুটবলারের একটা তালিকায় করা হলো, যারা প্রতিভার ছ’টায় বিশ্বকাপ কাঁপিয়ে দিতে পারেন। 

ভিনসিয়াস জুনিয়র (ব্রাজিল/রিয়াল মাদ্রিদ) -সেলেকাওদের জার্সি গায়ে প্রথম বিশ্বকাপে খেলতে নামবেন তিনি। বয়স অল্প হলেও ভীষণ পরিণত। তেকাঠিটা চেনেন ভালো। গতিতেও পোড় খাওয়া ডিফেন্ডারদের হিমশিম খাওয়াতে যার জুড়ি মেলা ভার যার। বিগত এক দেড় বছর ধরে দুরন্ত ছন্দে আছেন। প্রচুর গোল করেছেন। এখনই ভিনসিয়াসের নামের পাশে বড় ম্যাচের ফুটবলারের ট্যাগ বসে গিয়েছে। কারণ, তিনি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এল ক্লাসিকো ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল ও সেমিফাইনালে গোল করার নজির রয়েছে। তাই, এবারের বিশ্বকাপে তাঁর দিকে নজর থাকবে। 

পেড্রি (স্পেন/বার্সেলোনা)—  পেড্রিরও প্রথম বিশ্বকাপ এটি। লা রোজাদের মাঝমাঠের দায়িত্ব তাঁর কাধে। তাঁকে শুধু মিডফিল্ডার বললে ভুল বলা হবে, পেড্রি হলেন ইতালীয় ভাষায় ‘মেজ্জালা’। যার চোখ থাকে সর্বদা গোলের দিকে। সুনিপুণভাবে আক্রমণ তৈরি করতে দক্ষ যিনি। পেড্রি ডিস্ট্রিবিউশনেই পটু নন, বক্সের বাইরে-মধ্যে ডিফেন্ডারদের ডিব্রল করে গোল করতে ভালোবাসেন।

লাউটারো মার্টিনেজ (আর্জেন্টিনা/ইন্টার মিলান)—  তিনি ফুটবল মহলে পরিচিত ‘এল টোরো’ নামে। মার্টিনেজের খেলার স্টাইল অনেকটা গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার মতো। পারফেক্ট নাম্বার নাইন। যিনি বক্সের মধ্যে ডিফেন্ডারদের ব্যস্ত রাখতে পারেন। সতীর্থদের ফাঁকা স্পেস তৈরি করতেও । বক্সের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকেন না, প্রয়োজনে মাঝমাঠে নেমে সাহায্য করতে দেখা যায় মার্টিনেজকে। উপরন্তু নিজে গোল করতে দক্ষ। লিওনেল স্কোলানির সিস্টেমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। ক্লাবে ফুটবলে সফল, নীল সাদা জার্সি গায়েও। এবার বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করা বাকি।

ফিল ফোডেন (ইংল্যান্ড/ম্যাঞ্চেস্টার সিটি)— তাঁকে যখন পেপ গুয়ার্দিওলা প্রথম দেখে মন্তব্য করেছিলেন, ‘ফোডেনের চেয়ে বড় প্রতিভা এর আগে কখনো দেখিনি। ফোডেন নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন মাত্র সতেরো বছর বয়সে। দেশকে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ জিতিয়ে। এবার সিনিয়র দলের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ খেলবেন তিনি। বড় দায়িত্ব তাঁর কাঁধে।

অরিলিয়েন চুয়োমেনি (ফ্রান্স/রিয়াল মাদ্রিদ)— লিগ ওয়ানে মোনাকোর জার্সিতে দুর্ধর্ষ ফুটবল খেলে নজর কেড়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ। এবারই তাঁকে দলে নিয়েছে লস ব্যাঙ্কোসরা। কার জায়গায় খেলছেন তিনি? ক্যাসেমিরোর। রিয়ালের জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচ থেকে ক্যাসিমিরোর অভাব বুঝতে দেননি। ফ্রান্সের হয়ে এবারের বিশ্বকাপে পল পোগবা, এনগোলো কান্তের অনুপস্থিতিতে মাঝমাঠের দায়িত্ব নিতে হবে। কাজটা খুবই শক্ত। কিন্তু চুয়োমেনি প্রস্তুত। লোড নিতে। দিদিয়ের দেশঁর ভরসা রয়েছে তাঁর উপর। জানিয়ে দিয়েছেন, শুরু থেকেই খেলবে চুয়োমেনি।

বানার্ডো সিলভা (পর্তুগাল/ম্যাঞ্চেস্টার সিটি)— বিশ্ব ফুটবলে অন্যতম একজন বহুমুখী ফুটবলার। তাঁর অ্যাটাকিং মিডিও, উইঙ্গার ও ফরওয়ার্ড তিনটি পজিশনে খেলার ক্ষমতা রয়েছে, ফলত, দলে সিলভার মতো একজন ফুটবলার থাকা মানে অনেকাংশে লাভ। রাশিয়া বিশ্বকাপে খেললেও সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি। এবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর জন্য নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিতে চান, সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির দেড়-দু’বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে চলেছেন।

রিচার্লিসন (ব্রাজিল/টটেনহ্যাম হটস্পার্স)— রোনাল্ডো লিমাকে নিজের আইডল মানেন। চুলের ছাঁটও দিয়েছিলেন রোনাল্ডোর মতোই। শেষবার ২০০২’তে এশিয়ার মাঠে বিশ্বকাপের আসর বসেছিল, সেবার ‘আর নাইন’ কার্যত একাই ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। রিচার্লিসনও নাম্বার নাইন। এবারও বিশ্বকাপ এশিয়ার মাটিতে। কাতারে রিচার্লিসন কি পারবেন রোনাল্ডো লিমা হয়ে উঠতে? কোচ তিতের ভিসন ভরসার পাত্র তিনি। বাকিটা সময় বলবে।

জোয়াকিম মাহেলে (ডেনমার্ক/আটালান্টা)— ফুটবল বিশ্ব ইউরো কাপে তাঁর ঝলক দেখেছিল। ফুল ব্যাক হিসাবে খেলে সর্বাধিক অ্যাসিস্ট করেছিলেন। দুই প্রান্তেই সচল। উইং থেকে মাপা ক্রস তুলতে পারেন। ওভারল্যাপে উঠে গিয়ে যেমন আক্রমণ শানাতে পারেন, তেমনই রক্ষণ সামলাতে জানেন। ডেনমার্ক কোচ দলকে কোন ছকে খেলাবেন  অনেকটাই নির্ভর করে মাহেলের উপর। ইউরোতে জাত চিনিয়েছেন বলে, বিশ্বকাপেও তাঁর দিকে নজর থাকবে।

জামাল মুসিয়ালা (জার্মানি/বেয়ার্ন মিউনিখ)— বয়স উনিশ হলেও খুব পরিণত। উইং, মাঝমাঠের যে কোনও পজিশনে খেলতে পারেন। বল পায়ে দুর্ধর্ষ। ভিসনও প্রশংসনীয়। প্রতিভা চিনতে পেরেই হ্যান্সি ফ্লিক বেয়ার্নের সিনিয়র জার্সিতে সুযোগ দিয়েছিলেন। ফ্লিকের অধীনেই জার্মানির হয়ে খেলবেন। বেয়ার্নের হয়ে প্রায় প্রতিটি ম্যাচে প্রথম একাদশে খেলছেন। সমস্ত প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২২ ম্যাচে গোল করেছেন ১২টি। ক্লোজে, টমাস মুলার, মেসুট ওজিল থেকে মারিও গোৎজে প্রত্যেকেই তরুণ ফুটবলার হিসাবে বিশ্বকাপে নজর কেড়েছিলেন। এবার পালা মুসিয়ালার!

রায়ান গ্রাভেনবার্চ (নেদারল্যান্ডস/ বেয়ার্ন মিউনিখ)—  জিনেজিন জিদানকে দেখে বড় হয়েছেন, মাঠে নিজেকে সেভাবেই উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বয়সে তাঁর মতো একজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার পাওয়া দুষ্কর। যেমন বল কন্ট্রোল, নিখুঁতভাবে ফাইনাল ট্যাকেল করতে পারেন। পায়ে গোলার মতো শট রয়েছে। ডিফেন্স চেরা পাসও বাড়াতে পারেন। গিনি উইজনালডাম খেলতে না পারলে ডাচদের মাঝমাঠের দায়িত্ব থাকবে তাঁর কাঁধে।

 

 

Comments :0

Login to leave a comment