Kaliaganj North Dinajpur

অ্যাম্বুলেন্সের টাকা নেই, মৃত সন্তানের দেহ ব্যাগে ভরে বাড়ি ফিরলেন বাবা

রাজ্য

North Dinajpur

বিশ্বনাথ সিংহ

এম্বুলেন্সের টাকা জোগার করা সম্বব হয়নি।  অভাবি বাবা টাকার অভাবে ছেলের  মৃতদেহ ব্যাগে ভরে বাড়িতে পৌছালেন। মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ। এই খবর জানা জানি হতেই ফের শোরগোল কালিয়াগঞ্জে। 
অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার টাকা জোগাতে না পেরে সদ্য মৃত সন্তানের দেহ ব্যাগে ঢুকিয়ে বেসরকারি বাসে করে আনতে বাধ্য হলেন বাবা। যমজ দুই শিশু সন্তান গুরুতর অসুস্থ। বুধবার রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের চিকিৎসার জন্যে আনা হয়। এক শিশুর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বাবা অসীম দেবশর্মা ছেলেকে চিকিৎসার জন্যে নিয়ে যান উত্তর বঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অপর এক শিশু সন্তানকে নিয়ে রায়গঞ্জ হাসপাতালে থাকেন মা। শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ মাসের শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়। প্রায় এক সপ্তাহ পর চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই শনিবার রাতে শিশুটির মৃত্যু হয়। পরিবারে অভাব নিত্যসঙ্গী। যে টাকা সম্বল তা চিকিৎসা করাতেই শেষ হয়। দুশ্চিন্তায় বাবা। ৫ মাসের শিশু সন্তানের দেহ নিয়ে কি ভাবে বাড়ি ফিরবেন?

এরপরেই সন্তানের মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসতে গিয়ে বিপাকে পড়েন বাবা অসীম দেবশর্মা। প্রথমে ভেবেছিলেন অ্যাম্বুলেন্স করে ছেলের দেহ ফিরিয়ে আনবেন বাড়িতেই। কিন্তু নিরুপায়। অভিযোগ অ্যাম্বুলেন্স চালকরা আট হাজার টাকা ভাড়া দাবি করে। সেই টাকা জোগার করা তো তাঁর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই পুত্রহারা বাবা ছেলের দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কোনও কাজের কাজ হয়নি। এমনকি কেউ পাত্তাই দেয়নি এমনটাই অভিযোগ।  অবশেষে রবিবার ভোরে জামাকাপড়ের ব্যাগে ঢুকিয়ে মৃত সন্তানের দেহ নিয়ে বাসে উঠে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। 

 
অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার টাকা জোগাতে না পেরে সদ্য মৃত সন্তানের দেহ ব্যাগে ঢুকিয়ে বেসরকারি বাসে করে বাধ্য হয়েই নিথর শিশুর দেহ নিয়ে কালিয়াগঞ্জে পৌছান বাবা। অমানবিক এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে। 
পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক বাবা অসীম দেবশর্মা। যদিও কালিয়াগঞ্জ পৌঁছানোর পর অবশ্য ঘটনার কথা জানতে পেরে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে কালিয়াগঞ্জ  শহরের এক সহৃদয় ব্যক্তি। অসীম দেবশর্মা বলেন, যাতায়াত ও চিকিৎসার জন্যই ১৬০০০ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সের জন্য আরও আট হাজার টাকা জোগার করতে পারিনি। শিলিগুড়িতে কোথায় টাকা পাব ? বাধ্য হয়েই ব্যাগে ভরে বাসে করে শিশুর দেহ নিয়ে এসেছি।


এই খবর সংবাদমাধ্যমে জানতে পারেন কাজল সাহা রীপন পাল, বুবাই চাটার্জীরা।  বিষয়টি জানতে পারার মোস্তাফানগর ডাঙিপাড়ার বাড়িতে অসীম দেবশর্মার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। সিপিআই(এম) নেতা দেবাশীষ পাট্টাদার জানান,  মর্মান্তিক ঘটনা জানা ছিলো না। জানা থাকলে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হত। এই রাজ্যে অসহায় মানুষদের জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের কোনও ব্যবস্থা নেই। গরীব মানুষের বেচে থাকাটা এখন দুষ্কর। তিনি বলেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। মৃত শিশুকে নিয়ে আসার বিষয়ে যে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে সেটা আমরা জানতাম না।

Comments :0

Login to leave a comment