দিল্লি পৌরনিগমের ভোটে হার বিজেপির। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একচ্ছত্রভাবে পৌর নিগম বিজেপির দখলে ছিল। যা হাতছাড়া হল এবার। দিল্লি পৌর নিগমের (MCD) নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আম আদমি পার্টি। ২৫০ সদস্যের এমসিডি’তে আপ ১৩৪টি, বিজেপি ১০৪টি, কংগ্রেস ৯টি এবং অন্যান্যরা ৩টি আসন জিতেছে। পৌর নির্বাচন হলেও বিজেপি’র জাতীয় স্তর থেকে জোর দেওয়া হয়েছিল এই ভোটে। একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা তো বটেই, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা প্রচার চালিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে ভোট চেয়েছিল বিজেপি, সেই আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে জনতার রায়ে।
বিধানসভার তুলনায় প্রাপ্ত ভোট কমলেও পাঁচ বছর আগের তুলনায় ভোট বেড়েছে আম আদমি পার্টির। ২০১৭’তে তিনটি পৌরনিগম ছিল দিল্লিতে। মোট ২৭২ আসনে ভোট হয়েছিল। এবার ভোটের আগে তিনটিকে জুড়ে একটি পৌরনিগম করা হয়। মোট আসন হয় ২৫০। ‘আপ’ পেয়েছে ১৩৪ আসন, বিজেপি, ১০৪ আসন। কংগ্রেস জয়ী হয়েছে ৯টি ওয়ার্ডে। পাঁচ বছর আগে বিজেপি পেয়েছিল ১৮১টি ওয়ার্ড, আপ ৪৮টি এবং কংগ্রেস ৯টি। ওয়ার্ড এবং ভোট দুই-ই কমেছে কংগ্রেসের। প্রাথমিক অনুমান কংগ্রেসের ভোট বেশিরভাগ গিয়েছে আপ-এ।
২০১৭’তে ভোট শতাংশে আপ’র ছিল ২৬.২৩ শতাংশ সমর্থন। এবার হয়েছে ৪২.০৫ শতাংশ। বিজেপি’র ৩৯.০৯ শতাংশ থেকে এবার ৩৬.০৮ শতাংশ। কংগ্রেসের জনমসর্থন ২১.০৯ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১১.৬৮ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, ১৫ বছর পর কর্পোরেশন খুইয়েছে বিজেপি। দিল্লির প্রেক্ষিতে নিশ্চয় বড় ঘটনা। নির্বাচনে প্রধান বিষয় ছিল জঞ্জাল সাফাই থেকে বিভিন্ন নাগরিক পরিষেবা। দিল্লির তিনটি কর্পোরেশনই চালিয়েছে বিজেপি। তিন কর্পোরেশনেই পৌর পরিষেবা নিয়ে গুরুতর ক্ষোভ ছিল, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত এবং গরিব মানুষের বসবাস বেশি এমন এলাকায়। তবে মোদীকে সামনে রেখে ভোটের ডাক দিয়ে, মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দিয়ে প্রচার করিয়ে নির্বাচনকে অন্য মাত্রা দিয়েছিল বিজেপি’ই। তাতে জনসমর্থন যদিও বাড়েনি।
দিল্লিতে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক হিংসা হয়েছিল ২০২০’তে। দিল্লির ‘আপ’ সরকার নিষ্ক্রিয় থেকেছে। বিজেপি এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী বাহিনী দাপিয়েছে। সংখ্যালঘু মুসলিমরা কেবল আক্রমণের শিকার হননি, নাগরিক সমাজ ক্ষোভ জানিয়েছে এই অংশের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা চাপানোয়। দিল্লির পুলিশ যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হাতে। কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে আপ হাত গুটিয়ে কেন, মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল চুপ কেন- এমন প্রশ্ন বারবার উঠেছে। সেই ঘটনার পর এবারই প্রথম পৌর নির্বাচন হয়েছে।
Comments :0