ANTI SUPERSTITION ACT

কুসংস্কার বিরোধী আইনের দাবিতে হাইকোর্টে বিজ্ঞান মঞ্চ

রাজ্য

superstition black magic bengal maharashtra bengali news

অনিন্দ্য হাজরা 
 

পশ্চিমবঙ্গেও চালু হোক কুসংস্কার বিরোধী আইন। এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানাল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।

বিজ্ঞান মঞ্চের অন্যতম সংগঠক এবং নেতা সৌরভ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, রাজ্যে কুসংস্কার রোধের জন্য ২০২০ সালে একটি মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বন্ডেল গেট কান্ড এবং বীরভূম কান্ডের পরে সেই মামলার সঙ্গেই কুসংস্কার রোধ আইন প্রণয়নের দাবি যুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হয়। 
প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে বলা হয়, সারা দেশে প্রায় ১২টি রাজ্যে ডাইনি সন্দেহে অত্যাচার বিরোধী আইন এবং মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটকে কুসংস্কার এবং কালাজাদু বিরোধী আইন প্রণয়ন হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এই জাতীয় কোনও আইন নেই। তারফলে ক্রমাগত বেড়ে চলা এই জাতীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। বন্ডেল গেট এবং বীরভূমের দুবরাজপুরের মতো মর্মান্তিক ঘটনার সুযোগ বাড়ছে।


আদালতে বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, এ রাজ্যে একটি আইন প্রণয়ন করা হোক, যার মাধ্যমে কুসংস্কার, কালাজাদু এবং ডাইনি সন্দেহে অত্যাচারের অভিযোগের বিচার করা সম্ভব হবে। আদালতের তরফে পুরনো মামলার সঙ্গে এই দাবিগুলি যুক্ত করার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। 

প্রসঙ্গত, কালাজাদু বিরোধী আন্দোলন করার মাশুল নিজের প্রাণ দিয়ে দিয়েছেন সমাজকর্মী নরেন্দ্র দাভোলকর। তাঁর মৃত্যুর পরের দিনই মহারাষ্ট্র সরকার অর্ডিন্যান্স জারি করে কালাজাদু বিরোধী আইন বিধানসভায় পাশ করে। পরবর্তীকালে সেই অর্ডিন্যান্স আইনে পরিণত হয়েছে। মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি এই আইন কর্ণাটকেও চালু হয়েছে। অপরদিকে বাংলার প্রতিবেশি রাজ্য ঝাড়খন্ড, ওডিশা, ছত্তিশগড়, রাজস্থান সহ দেশের ১২টি রাজ্যে ডাইনি অববাদ দিয়ে অত্যাচারের ঘটনার বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।


বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মীরা জানাচ্ছেন, ‘ম্যাজিক রেমেডিস অ্যান্ড অবজেকশনেবল অ্যাডভার্টাইজমেন্ট অ্যাক্ট’ সহ বেশ কিছু কেন্দ্রীয় আইনের সাহায্যে কুসংস্কার এবং কালাজাদুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সেগুলির তেমন প্রচলন নেই। সেই সুযোগেই সমাজে বৃদ্ধি পাচ্ছে কুসংষ্কারের প্রকোপ। 

বিজ্ঞান আন্দোলনের সংগঠক সৌরভ চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘রাষ্ট্র চায় সমাজে কুসংস্কার, পশ্চাৎপদতা এবং উগ্র ধর্মীয় বিশ্বাস জল হাওয়া পাক। সেই ‘ককটেল’ কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে পিছিয়ে রাখতে চাইছে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্মের আশ্রয় নিতে পেরেছে কুসংস্কার। বর্তমানে ফাটকা পুঁজিবাদ বা ক্রোনি ক্যাপিটালইজমও ধর্মের নামে ব্যবসা চালাচ্ছে। তাঁরা কুসংস্কারের অবশেষ গুলিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসাধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।’’ 

সৌরভ চক্রবর্তীর যোগ করেন, রাষ্ট্র যতদিন এই বিষয়গুলিকে ব্যবহার করবে ততদিন সমাজ থেকে কুসংস্কার নির্মুল করা কঠিন।

গ্রাফিক্সঃ মনীষ দেব

Comments :0

Login to leave a comment