তপন বিশ্বাস, ইসলামপুর
প্রবল বর্ষণের জেরে ডাঙ্গাপাড়ার দলঞ্চা নদীতে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে জল প্রবাহিত হচ্ছে। জলের স্রোতে বাঁশের সাঁকোটি দুলছে। যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। ইসলামপুরে প্রায় এক লক্ষের বেশি মানুষের ভরসা এই সাঁকো।
নদী পারাপার করতে হচ্ছে বিপদ মাথায় নিয়ে। ইসলামপুর থানার একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের এভাবেই পারাপার করতে হচ্ছে। ইসলামপুর থানার মাটিকুন্ডা-১ ও ২ অঞ্চলের ডাঙ্গাপাড়া, চাঁদমনি, আশ্রম, ফনবাড়ি, কামারভিটা, মন্ডল টোলা, কুরিলাবারি জগতাগা, বারোঢালী সহ প্রায় ৪০টি গ্রামে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের ভরসা এই বাঁশের সাঁকো। ওই বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে ইসলামপুর সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন তাঁরা।
এলাকায় রয়েছে একাধিক প্রাথমিক ও জুনিয়ার হাই ও হাই স্কুল সহ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ফলে নদীর ওপার থেকে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসতে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। দলঞ্চা নদীর এই সাঁকোর উপর দিয়ে প্রতিদিন ইসলামপুর ব্লকের মাটিকুন্ডা-১ ও ২, আগডিমটিখন্তি ও পন্ডিতপোতা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করেন। এর মধ্যে পড়ুয়ার সংখ্যাও কম নয়।
এছাড়াও প্রচুর সংখ্যায় স্কুল শিক্ষক ও সরকারি কর্মীরা সাঁকো পার করে কাজে যান। ব্যবসায়িক লোকজনের আনাগোনাও রয়েছে। কেবল বাঁশের সেতু পারাপারে ভরসা হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন রোগী ও তাঁদের পরিজনরা। বহুবার স্থায়ী পাকা সেতুর আবেদন জানালেও বিশেষ লাভ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হক, মাঞ্জার ইমাম, মেসের আলিরা বলেন নির্বাচন এলেই নেতারা আমাদের আশ্বাস দেন আর চলে যান। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও একদল তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা এসে মাপজোক করে চলে গেলেন আর গাল ভরা আশ্বাস দিয়ে গেলেন। আর আমরা ভাবলাম এবার হয়তো সেতু হয়ে যাবে। এই ভাবেই আমরা আমাদের বোকা বানিয়ে নেতারা ভোট নিয়ে যায়। আর কাজের কাজ কিছুই হলো না। এখন সাঁকো ভেসে গেলে মাত্র ৪ কিলোমিটার রাস্তা আমাদের ১৬ কিলোমিটার ঘুরপথে পার হতে হবে। ইসলামপুর শহরে বাসিন্দাদের পৌঁছতে হবে এতটাই দীর্ঘ পথ পেরিয়ে।
বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা আব্দুল করিম জানান, ‘‘পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে নদীর দুই দিকে পাকা রাস্তা তৈরি হয়। ওই সেতু নির্মাণের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়। কিন্ত তারপর আমাদের সরকার পড়ে যায়।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস ওই ঘাট নিয়ে শুধু রাজনীতি করে গেল, উন্নয়নের বুলি আওড়ালেও কাজের কাজ কিছু করেনি।’’
Comments :0