পাটনায় ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহা নিজে। বিজেপি নেতা হিসেবে নয়, সরকারি পদ ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করার সব রকম চেষ্টা চালানোর অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে তুলছে বিরোধী জোট মহাগঠবন্ধন।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার রাজনৈতিক মহলে পরিচিত অমিত শাহের একান্ত অনুগত আধিকারিক হিসেবে। এর মধ্যেই এসআইআর প্রক্রিয়ায় ৬৫ লক্ষের বেশি নাম বাদ পড়েছে। তার মধ্যে বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার ঘটনা ধরা পড়েছে।
মহাগঠবন্ধনের অভিযোগ, বিজেপি বিরোধী জোটের সমর্থক এমন বহু নাম বাদ পড়েছে।
মঙ্গলবার বিহারে দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ হচ্ছে এই আবহে। বিভিন্ন তর থেকে খবর আসছে যে বিজেপি বিরোধী মত জানানোর প্রবণতা বাড়ছে। যুব অংশের মধ্যে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
অভিযোগ রয়েছে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ ঘিরেও। হরিয়ানা থেকে বিশেষ ট্রেনে করে বিহারে পাঠানো হয়েছে অনেককে। কমিশনের নির্দেশিকা ভাঙার অভিযোগ রয়েছে রেল মন্ত্রকের বিরুদ্ধেই।
প্রথম দফার ভোটের সময়ই দেখা গিয়েছে বিজেপির পরিচিত অন্য রাজ্যের মুখ, তাদের নাম রয়েছে বিহারের ভোটার তালিকায়। উত্তরাখণ্ডে বিজেপির আইটি সেল এর প্রধান বিহারে এসে ভোট দিয়েছেন।
মহাকাঠ বন্ধন বলছে এমন দু-একজনের নাম সরাসরি সামনে আসছে। এমন বাইরের রাজ্য থেকে ভোটার তালিকায় নাম তুলিয়ে ভোটদান হয়েছে বিহারে।
২০২০ নির্বাচনে বিজেপি জোট এনডিএ এবং বিরোধী মহাগঠবন্ধনের মোট ভোটের ফারাক ছিল মাত্র ১৪ হাজার। অন্তত দশ শতাংশ আসনে জয় পরাজয়ের ফয়সালা হয়েছে অত্যন্ত কম ব্যবধানে।
আরজেডি নেতা এবং মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী পদের মুখ তেজস্বী যাদব কমিশন এবং অমিত শাহকে দায়ী করেছেন ভোট চুরির অভিযোগে। পাটনায় তিনি বলেছেন, অমিত শাহ বসে রয়েছেন কমিশনকে চাপ দিয়ে ভোটে কারচুপি করার জন্য। ভোটচুরির ব্যবস্থা করছে কমিশন।
প্রথম দফার ভোটে রেকর্ড ভোটদানের হিসেব দিয়েছে কমিশন। মহিলাদের ভোটদানের উল্লেখযোগ্য হারের দাবি করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যভিত্তিক তথ্য দিলেও প্রথম দফার ভোট শেষ হওয়ার চারদিন পরেও বিধানসভা কেন্দ্র ভিত্তিক মহিলা পুরুষ ভোটদানের হিসেব নেই।
তেজস্বীর অভিযোগ, ভেঙে ভেঙে হিসাব দিলেই কারচুপি ধরা পড়ে যাবে। মহিলাদের ভোটদানের দাবি প্রশ্নের মুখে পড়বে। হরিয়ানায় ভোট শেষ হওয়ার তবু দুদিন বাদে মহিলা পুরুষ ভোটের কেন্দ্রভিত্তিক হিসেব দিয়েছিল কমিশন। বিহারে চারদিন পরে ও দিতে পারছে না কেন?
মহিলাদের ভোটদানের হিসেব সামনে আসতেই প্রচার শুরু হয়েছে সুবিধা পাবেন নীতীশ। তবে বিজেপির অতি বড় সমর্থক ও দাবি করতে পারছেন না যে নীতীশের পক্ষে ভোট মানেই বিজেপির ফল ভালো হবে। নীতিশ কে কোণঠাসা করার কৌশল বিজেপি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। এনডিএ শিবিরেই।
দ্বিতীয় দফায় কুড়ি জেলায় ১২২ কেন্দ্রে ভোট হবে। কমিশন এবং বিহারের ডিজিপি কড়া নজরদারি এবং বড় সুরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছেন। বিরোধীরা বলছেন এটা কোন বড় কথাই নয়। প্রতিবারই হয়। আসল কথা হলো সুরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে।
তেজস্বী বলছেন, পাশের রাজ্য ঝাড়খন্ড থেকে বাহিনী আনা হলো না। কেননা সে রাজ্যে সরকারে বিজেপি নেই। অথচ বাহিনী আনা হচ্ছে উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ এমন কি মেঘালয় বা ত্রিপুরা থেকেও। বিরোধী সরকার রয়েছে এমন রাজ্য কেরালা বা তামিলনাড়ু থেকেও সুরক্ষা বাহিনী আনা হয়নি।
কমিশনকে জিরে প্রশ্ন উঠেছে আইএএস অফিসার নিয়োগ নিযেও। দেখা গিয়েছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় আনা হয়েছে আধিকারিকদের।
তেজস্বী বলছেন, বিহারকে উপনিবেশ বানাতে চাইছেন অমিত শাহ। তবে ‘বাহারিদের’ (বাইরের) এই মতলব রুখে দেবে বিহার।
Bihar Assembly elections
তীব্র ক্ষোভ কমিশনের ভূমিকায়, ভোট চলছে বিহারে
×
Comments :0