Biman Bose at Barrackpore

দুই শক্তিকে হারিয়ে মানুষের কন্ঠস্বর পৌঁছাতে হবে সংসদে: বিমান বসু

রাজ্য লোকসভা ২০২৪

ছবি অভিজিত বসু।

বিশ্বজিৎ রায়- বারাকপুর 

তৃণমূল ও বিজেপি’র গোপন বোঝাপড়ার খেলাকে বানচাল করতে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এই দুই শক্তিকে এবারের নির্বাচনে পরাস্ত করে মানুষের কন্ঠস্বর সংসদে পৌছে দিতে বামফ্রন্ট ও কং প্রার্থীদের বিপুলভাবে জয়ী আহ্বান জানান বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট মনোনিত সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবদূত ঘোষের সমর্থনে খড়দা সুরক্ষা মোড় থেকে এক বিশাল মহামিছিল টিটাগড়, বারাকপুর,পলতা, ইছাপুর, শ্যামনগর, জগদ্দল, কাকিনাড়া, নৈহাটি হয়ে হালিশহর বাগমোড়ে শেষ হয়। ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ মহামিছিলঅতিক্রম করে। খড়দা সুরক্ষা মোড়, শ্যামনগর পোস্ট অফিস মোড় ও হালিশহর বাগমোড়ে বক্তব্য রাখেন বিমান বসু।
এই মহামিছিলে তিনি বলেন, ‘‘মোদী কা গ্যারান্টী প্রচার হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা এই বিজ্ঞাপনের জন্য খরচ করছে। কিন্তু মোদীর গ্যারান্টী হচ্ছে গত দশ বছরে সারা বিশ্বে আমাদের দেশ ৫৫ তম স্থান থেকে ১১১ তম স্থানে পৌঁছেছে। এটা হচ্ছে মোদীর গ্যারান্টী’’। মোদী বলেছিল সব কা সাথ, সব কা বিকাশ। দশ বছরে দেশের মানুষের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। গরিব মানুষ আরো গরিব হয়েছে। মোদীর রাজত্বে কর্পোরেটদের সম্পদ বেড়েছে। মোদী মিথ্যা প্রচার করছে। মনুবাদী দর্শনের মাধ্যমে মোদী দেশ পরিচালনা করছে। আরএসএস, বিজেপি ও তৃণমূল বোঝাপড়া করে চলছে। আরএসএস,বিজেপি তাদের ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের চরিত্র প্রকাশ করেছে। এই আরএসএস তৃণমূলকে তৈরি করেছে। তৃণমূল ও বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণ তৈরি করে নির্বাচনে জেতার চেষ্টা করছে। বামেদের শক্তিবৃদ্ধি রুখতে বিজেপি’র লোকজন তৃণমূল হয়ে যাচ্ছে। আবার তৃণমূলের লোকজন বিজেপি হয়ে যাচ্ছে। এবারের নির্বাচনে তৃণমূল ও বিজেপি’র প্রার্থী তালিকায় এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। এবারের নির্বাচনে এই দুই শক্তির মধ্যে পার্থক্য নেই। বামপন্থীদের ঠেকাতে ধর্ম ও জাতের নামে ভোট ভাগাভাগি করে বিভাজনের রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছে বিজেপি,আরএসএস। এই শক্তির ভয়ঙ্কর বোঝাপড়ায় লিপ্ত হয়েছে তৃণমূল। দেশ ও রাজ্যের মানুষকে রক্ষা করতে এই দুই শক্তিকে এবারের নির্বাচনে পরাস্ত করতে হবে। 


 

বসু বলেন, মোদী গত দশ বছরে জনবিরোধী নীতি নিয়ে দেশ শাসন করেছে। এই সরকার গরিব মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। কর্পোরেটদের স্বার্থে এই সরকার কাজ করছে। দেশের সম্পদ বেঁচে দিচ্ছে। গত দশ বছরে জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। গরিব মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের সংবিধান পাল্টে দেবে। এরা দেশের সংবিধান মানে না। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। বামপন্থীরা যাহাতে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারে তার জন্য বিরোধী কন্ঠস্বর ভয় দেখিয়ে আক্রমণ চালিয়ে এরা স্তব্ধ করে দিতে চাইছে। গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থাকে এরা ভেঙে দিতে চাইছে। এই রাজ্যে তৃণমূল বিজেপি’র দেখানো পথেই হাঁটছে। এই দুই অশুভ শক্তিকে এবারের নির্বাচনে পরাস্ত করে মানুষের কন্ঠস্বর সংসদে পৌছে দিতে হবে।
এই সভায় সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য গার্গী চ্যাটার্জী বলেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। শ্রমিকদের স্বার্থে মোদী ও মমতা কেউ কথা বলছে না। এরা কর্পোরেটদের স্বার্থে কাজ করছে। এই দুই শক্তিকে এবারের নির্বাচনে পরাস্ত করতে হবে।
প্রাক্তন সাংসদ ও প্রবীণ পার্টি নেতা তড়িত বরণ তোপদার বলেন, মোদী ও মমতা মানুষের জন্য কাজ করছে না। বামেদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটলে মানুষের কথা সংসদে পৌছাবে। 
এই মহা মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। ছিলেন প্রার্থী দেবদূত ঘোষ, অভিনেতা বিমল চক্রবর্তী, সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য গার্গী চ্যাটার্জী, সোমনাথ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সাংসদ তড়িত বরণ তোপদার সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। 

Comments :0

Login to leave a comment