Fertilizer Black Market

সারের কালোবাজারি, দিশেহারা পূর্ব বর্ধমানের কৃষকরা

জেলা

Fertilizer Black Market

আলু বসানোর মুখে সার নিয়ে ফাটকা বাজি চলছে গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে। সারের জন্য আলু চাষ কম হবে বলে ধারণা করছেন কৃষকরা।
অজয় নদীর ধারে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে আউসগ্রাম মঙ্গলকোটের বিস্তীর্ণ এলাকা আলু চাষের জন্য বিখ্যাত। এখানে  ৯-১০ টি বেশী হিমঘর আছে। ভেদিয়া ,পালিগ্রাম ,চাণক, লাকুরিয়া প্রভৃতি মঙ্গলকোটের ব্যাপক অংশের  মানুষের আলু চাষ প্রধান জীবিকা। অর্ধেকভাবে সম্পন্ন কৃষক যারা তারা অনেক আগেই আলু চাষের জন্য ১০- ২৬-২৬ পটাশ ইউরিয়া টাকার জোরে তুলে রেখেছেন। তারা খুব মেজাজেই আছেন কিন্তু আর্থিকভাবে দুর্বল যারা তারা অসহায় বোধ করছেন।
এখন ধান কাটা শুরু হয়েছে। আলু বসানোর পক্ষে কার্তিকের শেষ উপযুক্ত সময়। এই সময় কৃষকরা হিমঘরে আলু রাখেন আলু বীজের জন্য। বাকিটা বেচে কিছু কাঁচা টাকা দিয়ে সার আলুবীজ কিনে রাখার জন্য। কিন্তু সেই আলু ৮০০ টাকা প্যাকেট এখন ৩০০ টাকাতেও নিতে চাইছেন না ব্যাপারীরা। আবার অন্যদিকে সরকারের কোন হেলদোল না থাকায় সার নিয়ে সব বিক্রেতারা ফাটকাবাজি শুরু করেছেন। ১৬০০ টাকার ১০-২৬-২৬ এখন ২২০০ - ২৩০০ টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে না। সার বিক্রেতারা অনেকেই গোপনে সার মজুদ করে রাখলেও বিক্রেতাদের কাছে 'কোন সার  নেই' বলে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। ফলে দিশেহারা কৃষকরা। 
মঙ্গলকোটের পালপাড়া এলাকার কৃষক অনিল পাল জানালেন, সারের অভাবে এবারে আলু চাষে টান  পড়বে। বাধ্য হয়ে গ্রামের আর্থিকভাবে দুর্বল কৃষকরা  আলু ঠিকা ভাগ দিয়ে রেহাই পেতে চাইছেন। 
অজয় নদীর ধারে ভেদিয়া গ্রামের আলু চাষী সাগর যশ নিমাই যশেরা জানালেন, টাকা দিয়েও সার পাওয়া যাচ্ছে না। এই সময় হিমঘরে অল্প আলু রেখে  যে পয়সা পাওয়া যেত তা হচ্ছে না। ৮০০ টাকার আলু ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যখন ব্যাপারীদের কাছে আলু থাকে তখন দাম নামে না। আর যখন আমরা বেচতে যাই তখন অর্ধেক দাম পাচ্ছি না। আলু চাষ কি করে করা যাবে ? ব্লক প্রশাসন, রাজ্য সরকারের এই সারের কালোবাজারি নিয়ে কোন হেলদোল নাই। তাদের অভিযোগ লুটেরাদের রাজ চলছে এই রাজ্যে।
নবগ্রামের আতাউর শাহেব জানালেন, একদিকে সারের টানাটানি অন্যদিকে দিনমজুরদের অভাব। তারা সব বাইরে অন্য রাজ্যে অন্য দেশে কাজ করতে চলে যাচ্ছে। আমাদের কঠিন অবস্থা।
কৃষক নেতা রাজেন ধীবর বলেন, নদীর ধারে এই গ্রামগুলিতে আলু চাষীদের ক্ষোভ বাড়ছে। সারের কালোবাজারির জন্য আলু চাষিরা ভেঙে পড়ছেন। আমরা গ্রামে গ্রামে পদযাত্রা করে সারের কালোবাজারির বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছি। চাষীদের ফসল তৈরির বিষয়ে সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

Comments :0

Login to leave a comment