JOURNEY — AVIK CHATARJEE — AMTA AMTA KARE HAMTA — MUKTADHARA — 2 AUGHST 2025, 3rd YEAR

ভ্রমণ — অভীক চ্যাটার্জী — আমতা আমতা করে হামতা... — মুক্তধারা — ২ আগস্ট ২০২৫, বর্ষ ৩

সাহিত্যের পাতা

JOURNEY  AVIK CHATARJEE  AMTA AMTA KARE HAMTA  MUKTADHARA  2 AUGHST 2025 3rd YEAR

ভ্রমণ মুক্তধারা, বর্ষ ৩

 

আমতা আমতা করে হামতা...


অভীক চ্যাটার্জী

উমাপ্রশাদ মুখোপাধ্যায়ের মতে, "সাদা মেঘ দেখলে আমার হিমালয়ের কথা মনে পড়ে।" তবে আমার এ ভ্রমণ কাহিনী সাদা মেঘ নয়, কালো মেঘ থেকে শুরু, যে মেঘে বর্ষা আসে। আমাদের এবারের মূল উদ্দেশ্য ছিল বর্ষাতে হিমালয়ের অনির্বচনীয় সৌন্দর্যকে প্রত্যক্ষ করা।তাই আবার খোঁজ শুরু হলো। হিমালয়ের বহুল প্রচলিত monsoon trek এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো দুটি ট্রেক, প্রথমত ভ্যালী অফ ফ্লাওয়ার আর দ্বিতীয়ত হামতা পাস। আমরা এবার চলেছি হামতা পাসের উদ্দেশ্যে। এক অনিশ্চিত যাত্রাপথে কালো মেঘ মাথায় নিয়ে।তবে জানা ছিল না যে কত অপ্রত্যাশিত চমক আমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে আমাদের জন্যে। সে কথায় ধীরে ধীরে ঘটনার সাথে প্রকাশ পাবে।

হাম্পটা পাস, উচ্চতায় ১৪১০০ ফুট,হিমাচল প্রদেশের এক অত্যাশ্চর্য পাস ট্রেক, যা কুল্লু উপত্যকা সবুজ সতেজতা থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় স্পিতি উপত্যকার কঠিন ধূসরতায়। ৩০ কিলোমিটারের এই ট্রেকে আপনি প্রত্যক্ষ করবেন বহু অন্যন্য সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যের। দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ উপত্যকা, অসংখ্য নাম না জানা ফুল, অজস্র খরস্রোতা নদী, তুষার শুভ্র গিরিশৃঙ্গ আর প্রাণ জুড়ানো ঝর্না।

লোককথায় বলা হয়, প্রাচীন কালে এই হামটা পাসই ছিল আত্মার পরপারের পথে যাত্রার এক গোপন দরজা। যমরাজের দূতেরা নাকি এখান দিয়ে আত্মাকে লাহৌলের দুর্গম উপত্যকার দিকে নিয়ে যেত। স্থানীয় ভাষায় “হাম্টা” শব্দটি “হম্টি” বা “হামটান” শব্দের পরিবর্তিত রূপ, যার অর্থ আত্মার পথ বা গিরিপথ।
এ কারণেই স্থানীয় গ্রামবাসীরা হামটা পাস পার হওয়ার আগে দেবতাদের পূজা করে, যাতে তারা নিরাপদে অতিক্রম করতে পারেন।

আমাদের যাত্রা শুরু হয় দিল্লী থেকে। সঙ্গী বলতে সেই একজনই, শ্রীমান প্রতীক। আমরা ওর দিল্লির বাসভবন থেকে যখন বেরোলাম, তখন প্রায় রাত নটা। আমাদের গন্তব্য কাশ্মীরি গেট বাস স্ট্যান্ড হয়ে কুলুর অরণ্যগর্ভ শহর মানালি। আমাদের বাস ছাড়ল প্রায় রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ। দিল্লী শহরের যানজট ছড়িয়ে বাস ছুটলো এক প্রকৃতির কোলে।যেখানে শ্বেত শুভ্র গিরিশৃঙ্গরাজি পরম মমতায় আগলে রেখেছে তার আদরের গ্রামগুলোকে সবুজ গালিচার উপর।

সকালে ঘুম যখন ভাঙলো, আমরা পাহাড়ের রাজ্যে ঢুকে পড়েছি। সাড়ে এগারোটা নাগাদ আমরা পা রাখলাম শৈলশহর মানালির বুকে। আমাদের পরিকল্পনা ছিল, পৌঁছে একটু বিশ্রাম নিয়ে আমরা মানালি ঘুরতে বেরোবো পায় হেঁটে। কারণ মানালি শহরটি খুব একটা বড় নয়, আর যে কোনো শহরকে পায় হেঁটে দেখার মজাই আলাদা।

Comments :0

Login to leave a comment