PROBANDHA \ MADAM CURIE — TAPAN KUMAR BAIRAGAYA \ MUKTADHARA | 6 NOVEMBER 2024

প্রবন্ধ \ মাদাম ক্যুরি এক উৎসর্গীকৃত প্রাণ : তপন কুমার বৈরাগ্য \ মুক্তধারা \ ৬ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যের পাতা

PROBANDHA  MADAM CURIE  TAPAN KUMAR BAIRAGAYA  MUKTADHARA  6 NOVEMBER 2024

প্রবন্ধ

মাদাম ক্যুরি এক উৎসর্গীকৃত প্রাণ
তপন কুমার বৈরাগ্য

মুক্তধারা 

তোমরা সকলে মাদাম ক্যুরির নাম জানো।যিনি জীবনে দু'বার
নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।১৯০৩খ্রিস্টাব্দে পদার্থবিদ্যায়
এবং ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে রসায়ন বিদ্যায়।যা নোবেলের ইতিহাসে
এক বিরল দৃষ্টান্ত।বড্ড জেদি ছিলেন মাদাম ক্যুরি।
যা সংকল্প করতেন তাই তিনি করে ছাড়তেন।
১৮৬৭খ্রিস্টাব্দের ৭ই নভেম্বর তিনি পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁরা
পাঁচ ভাইবোন ছিলো।তিনি ছিলেন সবার ছোট।তাঁর সম্পূর্ণ
নাম ছিলো মার্জা ক্লোডোস্কা। যক্ষ্মা রোগের কোনো প্রতিষেধক
না থাকায় তাঁর মা যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
তখন মার্জারের বয়েস মাত্র এগারো বছর। দিদি ব্রনিয়ায়
ইচ্ছা লেখাপড়া করে ডাক্তার হবেন।অথচ তাঁরও ইচ্ছা
ডাক্তার হবার।কিন্তু সংসার সামলাবে কে? বাবা ছিলেন
সামান্য মাইনের একজন স্কুল শিক্ষক।বাড়িতে কাজের
লোক রাখার সামর্থ্য ছিলো না।বাড়ির সকল কাজকর্ম
তাকেই করে স্কুলে যেতে হতো।দিদি পড়াশুনার জন্য
বাড়ির কোনো কাজকর্ম করতেন না।দুজনে একই ক্লাসে
পড়তেন।কিন্তু স্কুলের শেষ পরীক্ষায় দিদির চেয়ে ভালো
ফল করলেন মার্জার।তবুও দুই বোনই প্যারিসে গিয়ে ডাক্তারী
পড়তে চান।বাবা দুই বোনকে বললেন--আমার সামান্য আয়।
এই আয় দিয়ে আমার ক্ষমতা নেই একজনাকেও ডাক্তারী
পড়াই।তোমাদের একজনাকে পরের বাড়িতে কাজ করে
অপরকে ডাক্তার করার দায়িত্ব নিতে হবে।বলো তোমরা
কে রাজি আছো?দিদি ব্রনিয়া কিছুতেই রাজি হলেন না।
তখন অগত্যা সেই দায়িত্ব মার্জার নিজের কাঁধে তুলে নেন।
পরের বাড়িতে অপমান অত্যাচার সহ্য করে দিদিকে
এই জেদি মেয়েটা ডাক্তার করে ছাড়লেন।দিদি তাঁদের
ভুলে গেলেন।সেখানকার হাসপাতালে চাকরী পেয়ে দেশে
ফিরে এলেন না।যে বোন তাঁকে ডাক্তার করলেন তাঁর
দায়িত্ব পর্যন্ত নিলেন না।এই জেদি মেয়েটা থেমে থাকলে না।
সরবনে এসে সরবন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন। পরের বাড়িতে
কাজ করে পদার্থবিজ্ঞানী হলেন।তারপরে হলেন রসায়ন বিজ্ঞানী।
১৯০২খ্রিস্টাব্দে তিনি আবিষ্কার করলেন রেডিয়াম।এই 
রেডিয়ামই তাঁর মৃত্যুর কারণ হলো।রেডিয়ামের অদৃশ্য তেজে
তাঁর দেহের ক্ষয় হতে লাগল এবং ১৯৩৪খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা জুলাই
এই দূরন্ত সংগ্রামী নারী আমদের ছেড়ে পরলোকে যাত্রা করলেন।
তিনি ছিলেন নিজের দিদির জন্য,নিজের সংসারের জন্য,
দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গীকৃত প্রাণ। আসুন ৭ই নভেম্বর তাঁর জন্মদিনে এই দূরন্ত সংগ্রামী নারীকে যথাযথ শ্রদ্ধা জানাই। 


 

Comments :0

Login to leave a comment