recruitment corruption

নিয়োগ দুর্নীতির ‘মাথা’ পার্থ চ্যাটার্জি, সিবিআই জানালো আদালতে

রাজ্য

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মূল মাথা প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি। বৃহস্পতিবার সিবিআই বলেছে, বিভিন্ন স্তর থেকে তাঁর কাছে নিয়োগের জন্য অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তির সুপারিশ আসত। সেই সুপারিশ অনুযায়ী বেশ কিছু নিয়োগও হয়েছে। যাঁরা এই সুপারিশ করেছেন তাঁদের নাম হাতে এসেছে। এখন তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার পার্থ চ্যাটার্জির জামিন মামলায় একথা বলেছে সিবিআই। 
এদিন সিবিআই বলেছে, নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি। তাঁর জামাই সম্প্রতি জানিয়েছেন কীভাবে টাকা তোলা হতো। শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে পার্থ চ্যাটার্জির ওএসডি তাঁর গোপন জবানবন্দিতে বলেছেন, দুর্নীতি হয়েছে মন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে। কোথায় কী কাগজ যাবে, কার কাছে কোন কাগজ যাবে তার সবটাই নিয়ন্ত্রণ করতেন মন্ত্রী নিজেই। ওএমআর শিট নষ্ট করে ফেলার নির্দেশও মন্ত্রী দিয়েছিলেন। ফলে এই মামলায় পার্থ চ্যাটার্জিকে তদন্তের জন্য প্রয়োজন রয়েছে। 
সিবিআই জানিয়েছে, বিধাননগরে শিক্ষা দপ্তরের গুদামঘর থেকে বেশকিছু নথি উদ্ধার হয়েছে। সেখানে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি এবং তৎকালীন পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত তালিকা বিনিময় হয়েছিল। সেই তালিকাতে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম আছে যাঁরা নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছেন। সেই নথি থেকেই ৩২১ জন প্রার্থীর তালিকা পাওয়া গেছে। তাদের নাম রোল নম্বরও পাওয়া গিয়েছে। এই প্রার্থী বিনিময় হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকেই চাকরি করছেন। এই প্রার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রার্থীদের জেরা করে অনেক নতুন তথ্যও হাতে এসেছে। 
যে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম পাওয়া গিয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী, বিজেপি নেত্রী, আইপিএস ভারতী ঘোষ, তৃণমূলের মমতা বালা ঠাকুর, তৃণমূলের বিধায়ক শওকত মোল্লা। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। ফলে এখনই পার্থ চ্যাটার্জির জামিন হলে বহু তথ্য লোপাট হয়ে যাবে। এদিন পার্থ চ্যাটার্জির আইনজীবী বলেন, এই মামলায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁদের অধিকাংশই জামিন পেয়েছেন। আমার মক্কেল ২ বছর ৮ মাস জেলে রয়েছেন। তাঁর বয়স এখন ৭০ পেরিয়ে গিয়েছে। তিনি অসুস্থ। ফলে তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া প্রয়োজন।
২০২২ সালের ২২ জুলাই কলকাতার নাকতলার বাড়িতে ইডি’র তল্লাশির পর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে দীর্ঘ জেরা করে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এই সময়েই পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখার্জির বিভিন্ন আবাসনে তল্লাশি চালায় ইডি। টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার অর্পিতার আবাসনে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্য জামিন পেয়েছেন। কিন্তু মানিক ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গাঙ্গুলি, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের নামে যে চার্জশিট জমা পড়েছে তা থেকে জনমানসে প্রতিফলিত হয়েছে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় একটি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment