'Garbha Sanskar'

দেশপ্রেমিক বাচ্চার জন্ম দিতে কর্মসূচি শুরু করলো সঙ্ঘ!

জাতীয়

Garbha Sanskar


সংস্কারি এবং দেশপ্রেমিক বাচ্চার জন্ম দিতে ‘গর্ভ সংস্কার’ কর্মসূচির সূচনা করলো আরএসএস। সঙ্ঘ নিয়ন্ত্রিত সংগঠন সংবর্ধিনী ন্যাস এই কর্মসূচি রূপায়ণের দায়িত্বে। তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলিসাই সৌন্দর্যরাজন ভার্চুয়ালি রবিবার এই কর্মসূচির সূচনা করেছেন। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সৌন্দর্যরাজন দেশপ্রেমিক বাচ্চা পয়দা করার এই কর্মসূচির উদ্বেধন করতে গিয়ে বলেছেন, গর্ভবতী মহিলারা রামায়ণের সুন্দরকাণ্ড জপ করলেই শারীরিক এবং মানসিকভাবে মজবুত বাচ্চা জন্ম নেবে। আরএসএস’র মহিলা শাখা রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতির মতই সংবর্ধিনী ন্যাসও মূলত মহিলাদের মধ্যে কাজ করার জন্য আরএসএস’র একটি শাখা। তারা ভারতীয় মহিলাদের শারীরিক, মানসিক, বৌদ্ধিক এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য তারা কাজ করে বলে সংবর্ধিনী ন্যাস দাবি করে।

এ হেন সংবর্ধিনী ন্যাস বলেছে, টানা সংস্কৃত মন্ত্র জপ করা এবং ভগবত গীতা পাঠ করলে গর্ভস্থ ভ্রুণের মস্তিষ্কের বিকাশ এবং উন্নতিতে গভীর প্রভাব পড়বে এবং তা সন্তানের জন্মের পরেও অব্যাহত থাকবে। সংস্কৃত শ্লোক আওড়ালে নাকি একটি সদর্থক কম্পন গর্ভস্থ ভ্রুণের মস্তিষ্কে পৌঁছাবে। এটাকে বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা বলেও দাবি করেছে তারা! গর্ভধারণ থেকে সন্তানের জন্ম দেওয়া পর্যন্ত মায়েরা ৯ মাস ধরে এই প্রক্রিয়া চালাতে পারলে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের দাবি, আগামী প্রজন্মের সংস্কারি এবং দেশপ্রেমিক বাচ্চার জন্ম দিতে পারবে। গর্ভে থাকাকালীন সময়েই এই ‘গর্ভ সংস্কার’ কর্মসূচির মাধ্যমে সন্তান সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধ সম্পর্কে শিখে যাবে বলেও জানিয়েছে সংবর্ধিনী ন্যাস। ছেলে বা মেয়ে যে সন্তানই জন্ম নিক, তারা ভালো সংস্কার, ভালো ধারণা এবং দেশভক্ত হয়ে আসুক! আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দুনিয়ায় আসুক এবং বেড়ে উঠুক সেবা, মূল্যবোধ, সংস্কার এবং মহিলাদের সম্মান করার ভাবনা থেকেই! বলেছেন সংবর্ধিনী ন্যাসের এক নেত্রী। ন্যাসের দাবি মানলে, যা কিছু একটি শিশু বেড়ে ওঠার সময় থেকে আত্মস্থ করে তার পরিবার, প্রতিবেশী, পরিবেশ, শিক্ষা- তার আর কোনও প্রয়োজন থাকবে না। কারণ সমস্ত সৎ গুণ নিয়েই ওই শিশু জন্মাবে তার মা আরএসএস’র ‘গর্ভ সংস্কার’ কর্মসূচি পালন করলেই।

সঙ্ঘ এই কাজের জন্য ইতিমধ্যে তাদের সঙ্গে যুক্ত হিন্দুত্ববাদী চিকিৎসকদের নিযুক্ত করে ফেলেছে। কিছুদিন আগে গোটা দেশ থেকে আসা চিকিৎসকদের নিয়ে জেএনইউ-তে এই সংক্রান্ত কর্মশালাও করা হয়েছে। চিকিৎসকদের এই কাজে নামালে মানুষের কাছে তা বিশ্বাসযোগ্য হবে, এটাই হলো সঙ্ঘের ভাবনা। সঙ্ঘের এক পদাধিকারী জানিয়েছে, ‘গর্ভ সংস্কার’ কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য দেশকে পাঁচটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি অঞ্চলে ১০ জন করে ডাক্তার নিয়ে একটি করে টিম তৈরি করা হয়েছে। প্রতি জন ডাক্তার ২০ জন গর্ভবতী মহিলাকে গর্ভ সংস্কারের কাজ করাবেন তাঁর অঞ্চলে। ‘গর্ভ সংস্কার’ কর্মসূচির জন্য সঙ্ঘ ৮ সদস্যের একটি কেন্দ্রীয় টিম তৈরি করেছে যারা পুরো কর্মসূচিটি গাইড করবে। অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের যুক্ত করা হয়েছে এই কর্মসূচিতে। সংবর্ধিনী ন্যাসের এক সদস্য জানিয়েছেন, ‘গর্ভ সংস্কার’ কর্মসূচি ভারত নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

সঙ্ঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গর্ভে থাকা ভ্রূণ চার মাস থেকে সব শুনতে পায়। এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত বলেও দাবি করেছে সঙ্ঘ। ফলে বাবা-মা গর্ভে থাকা সন্তানের সঙ্গে কথা বলবেন। তারা গর্ভে থাকা সন্তানকে ওই সময় থেকে ভারত এবং ভারতের বিশিষ্ট মানুষদের সম্পর্কে জানাবেন! 
এদিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করতে গিয়ে রাজ্যপাল সৌন্দর্যরাজন সংবর্ধিনী ন্যাসের এই ‘গর্ভ সংস্কার’ পরিকল্পনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এই ‘বৈজ্ঞানিক এবং সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি’ নিশ্চিতভাবেই গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সদর্থক ফল দেবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি গ্রামের গর্ভবতী মহিলারা রামায়ণ, মহাভারত এবং অন্যান্য গ্রন্থ জপ করেন। তিনি আরও নির্দিষ্ট করে বলেছেন, গর্ভবতী মহিলারা রামায়ণের সুন্দরকাণ্ড জপ করলে খুবই ভালো ফল পাবেন। শিশুদের জন্য খুবই উপকারী! সুন্দরকাণ্ডে হনুমানের বিষয়ে বলা আছে। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতির যুগ্ম প্রধান লীনা গাহানে বলেছেন, শিবাজী মহারাজের মা জীজাবাঈয়ের ৩৫০ তম জন্মদিবসে ‘গর্ভ সংস্কার’ কর্মসূচি শুরু করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

Comments :0

Login to leave a comment