ই-শ্রম পোর্টালে নথিভুক্ত পরিযায়ী এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের তালিকা তলব করল সুপ্রিম কোর্ট। খাদ্যের অধিকার আইনের অধিকার সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলায় সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে বিচারপতি এম আর শাহ এবং হিমা কোহলির মন্তব্য, কাউকে ক্ষুধার্ত রাখা আমাদের সংস্কৃতি নয়।
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন বা এনএফএসএ অনুযায়ী শহরে ৫০ শতাংশ এবং গ্রামে সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ ভরতুকিতে বেঁধে দেওয়া পরিমানে শস্য পেতে পারেন। কিন্তু এই তালিকা তৈরি হয়েছিল ২০১১’র জনগণনার ভিত্তিতে। জনস্বার্থ মামলায় বলা হয়েছে, পরের প্রায় দশ বছরে জনসংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু খাদ্য সুরক্ষা আইনে উপভোক্তা সেই হারে বাড়ানোর বন্দোবস্ত হচ্ছে না।
এদিন শুনানিতে কেন্দ্রের পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলঐশ্বর্য ভাটি বলেন, খাদ্য সুরক্ষা আইনে উপভোক্তার তালিকায় নতুন নাম যোগ করায় কেন্দ্র কোনও রাজ্যকে বারণ করেনি। দেশে ৮১.৩৫ কোটি মানুষ এই প্রকল্পে উপভোক্তার তালিকায় আছেন। তাঁর বক্তব্যে প্রশ্ন তোলেন আবেদনকারীদের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তিনি বলেন, চোদ্দটি রাজ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পের জন্য তাদের বরাদ্দ নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে।
শুনানির মাঝেই দুই বিচারপতি বলেন, কাউকে ক্ষুধার্ত রাখা আমাদের সংস্কৃতি নয়। পরিযায়ী এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের খাদ্য পেতে অসুবিধা যাতে না হয় আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। প্রান্তিকতম মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছানো সরকারের দায়িত্ব।’’
বিচারপতিরা বলেন, ‘‘সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী খাদ্যের অধিকার নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। কোভিড পরিস্থিতিতে সরকারি স্তর থেকে খাদ্য পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যতক্ষণ কেউ ক্ষুধার্ত, এই প্রয়াস বজায় রাখা জরুরি।’’
কেন্দ্র এই মামলায় আদালতে বলেছে যে ২০১১’র জনগণনার পর দেশে মাথাপিছু আয় ৩৩.৪ শতাংশ বেড়েছে। অত্যন্ত দরিদ্রদের একাংশ আগের অবস্থায় নেই। হয়ত খাদ্য সুরক্ষা আইনে ভরতুকিতে খাদ্যের প্রয়োজন এই অংশের কমেছে।’’
সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয় ই-শ্রম পোর্টালে নথিভুক্ত অসংগঠিত এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের নামের তালিকা দিতে হবে। বাস্তব অবস্থা খতিয়ে দেখা দরকার। কারও রেশন কার্ড নেই বলে রেশনে খাদ্য পাচ্ছেন না, এমন যেন না হয়।’’
সমাজকর্মী অঞ্জলি ভরদ্বাজ, হর্ষ মান্দের এবং জগদীপ চোক্কর সুপ্রিম কোর্টে এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক ই-শ্রম পোর্টাল চালু করে। কিন্তু নথিভুক্তি থাকলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সুবিধা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
Comments :0