STORY / PALLABI ADAK / GODHULIBERAR SWAPNA / MUKTADHARA / 16 NOVEMBER 2025 / 3rd YEAR

গল্প / পল্লবী আদক / গোধূলিবেলার স্বপ্ন / মুক্তধারা / ১৬ নভেম্বর ২০২৫, বর্ষ ৩

সাহিত্যের পাতা

STORY  PALLABI ADAK  GODHULIBERAR SWAPNA  MUKTADHARA  16 NOVEMBER 2025  3rd YEAR

মুক্তধারা

গল্প

গোধূলিবেলার স্বপ্ন

  ----------------------------- 
  পল্লবী আদক
  ----------------------------- 

 

৯ নভেম্বর ২০২৫, বর্ষ ৩

 

বিগত সংখ্যার পর

আজ বন্দিতার বিয়ে ।হলুদ শাড়ি পরিয়ে,গায়ে হলুদ মাখানো হচ্ছে।গোধূলিলগ্নেই ওদের বিয়ে হবে। সবাই আনন্দে মেতেছে।অথচ ওর মনের ভিতরের এই কষ্ট টা শুধু ওর মধ্যেই আছে।
বেনারসী শাড়ি,গা ভর্তি গয়নায় বন্দিতা আজ সন্ধ্যায় সেজে উঠেছে। বর এসে গেছে।গোধূলিলগ্ন হওয়ায় খুব তাড়াতাড়ি ই পাত্রপক্ষ এসে হাজির।
-"পান পাতাটা মুখ থেকে সরাও এবার"। বরের বন্ধুরা মজা করে এই কথা বলল।অনেক কষ্টে,ব্যথিত মন নিয়ে পান পাতা সরালো ও।কিন্তু একি!! বরের বেশে ও কাকে দেখছে!এ যে পার্থ!হাসি মুখে ওর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।কিছু বুঝে ওঠার আগেই পার্থ ওর গলায় মালা পরিয়ে দিল।বিবাহের সমস্ত আচার অনুষ্ঠান পালন হতে থাকলো। সবশেষে সিঁদুর দান ও হয়ে গেলো।বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার এই দীর্ঘ সময়ে বন্দিতা যেনো মনে মনে অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছে।
সমস্ত সম্পন্ন হওয়ার পরে ও জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে পার্থর দিকে তাকালো।পার্থর মুখের হাসি তখন ও বিরাজমান। বন্দিতার বাবা আর মা ওদের সামনে গেলো।ওর মা মেয়ের মুখে স্নেহের পরশ দিয়ে একজায়গায় বসালো।পার্থ ও বসলো তার পাশে।এবার ওর বাবা বলতে শুরু করলো "কলেজে জীবনে সবার থেকে লুকিয়ে তুই যখন প্রেম করতিস,তখন ই আমি পার্থর ব্যাপারটা জেনেছিলাম।ছেলে হিসেবে ও তো ভীষণ ভালো।তাই আমরাও মেনে নিয়েছিলাম।কিন্তু তুই আমাদের একবারও মুখ ফুটে কিছু বললি না!!এতটাই ভয় পাস আমাদের!!"
--"বাবা আসলে আমি ....."মেয়েকে থামিয়ে এবার মা বলতে শুরু করলো " আমাদের বাড়িতে আগে কেউ কখনও প্রেম করে বিয়ে করেনি এটা ঠিক।তবে সময় তো এখন বদলেছে। তুই বরাবর ই প্রেমের কথাটা বলতে ভয় পেয়েছিলি ।তাই পার্থই আমাদের কাছে এসে সবটা বলেছিল"।এবার যেনো বন্দিতা অবাক হয়ে গেলো।পার্থ!!! মনে মনে ভাবলো কই এতদিনে একবারও তো পার্থ আমায় এই কথাটা জানালো না! পার্থর দিকে তাকাতেই পার্থ বলল " তুমি ভাবলে কীকরে যে আমি তোমাকে ছাড়া থাকবো।পার্থ তার এই পাগলি টাকে ছেড়ে কোনোদিন ও থাকতে পারবে না।তুমি যে ধরনের শান্তশিষ্ট মেয়ে, তাতে করে প্রেমের এই কথাটা যে কোনোদিনই বাড়িতে বলতে পারতেনা সেটা আমি বুঝেছিলাম ।তাই আমি ই আংকেল কে আমাদের প্রেমের  শুরু থেকে সবটা একদিন জানাই।আংকেল ও আমার সম্পর্কে সবকিছু যাচাই করে রাজি হয়ে যান।উনি প্রথম থেকে সবটাই জানতেন।আর তোমার কলেজ শেষ হওয়ার পর অন্য ছেলের সাথে বিয়ের নামে,এই সারপ্রাইজ টা দিতে চেয়েছিলেন।"।
-"সরি বাবা, সরি মা। তোমরা আমার জন্য এত ভাবো।আর আমি কিনা ভয়ে সেই তোমাদেরই কিছু বলতে পারলাম না!" এই বলে বন্দিতা কাঁদতে থাকলো।
ওর বাবা মা ওর মাথায় হাত রেখে বলল -"খুব সুখে থাকিস রে মা!পার্থ খুব ভালো।ও তোকে খুব ভালো রাখবে"।
আজ যেনো বন্দিতার মন থেকে পাথর নামলো একটা। সত্যিই পার্থ আর ও একে অপরকে ভীষণ ভালবাসে।আজ যেনো ওর মনে হচ্ছে গোধূলিবেলার এই শুভদৃষ্টির মাধ্যমে ওর ভালোবাসাকে কাছে পাওয়ার এই স্বপ্ন যেনো পূরণ হলো ।এই গোধূলিবেলা সারা জীবন ওর মনে শ্রেষ্ঠ গোধূলিবেলা হয়ে থাকবে।
            

সমাপ্ত

Comments :0

Login to leave a comment