গুজরাটের নির্বাচনে বিজেপি’র হয়ে প্রচারে নেমে বাঙালি-বিদ্বেষী মন্তব্যের জন্য অভিনেতা পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বৃহস্পতিবারই তিনি কলকাতা পুলিশের তালতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বলেছেন, ‘‘বাঙালিদের বিরুদ্ধে দাঙ্গায় উসকানি দিতে এবং বাঙালিদের সঙ্গে সমাজের অন্যান্য অংশের সম্প্রীতির সম্পর্কে নষ্ট করতে পরেশ রাওয়াল ইচ্ছাকৃতভাবে ঘৃণা প্রচার করেছেন। আমি আশঙ্কা করছি পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থাকা বহু বাঙালি এই মন্তব্যের জন্য আক্রান্ত হতে পারেন।’’
মহম্মদ সেলিম তাঁর অভিযোগপত্রকে এফআইআর হিসাবে গণ্য করার দাবি করেছেন এবং পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ১৫৩এ, ১৫৩বি, ৫০৪ এবং ৫০৫ ধারায় ইচ্ছাকৃত ঘৃণা বিদ্বেষ প্রচার, দাঙ্গায় উসকানি, প্রকাশ্যে অভব্যতার মাধ্যমে সামাজিক শান্তি বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টার জন্য ব্যবস্থাগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের কাছে।
গুজরাটের ভালসাদে বিজেপি’র পক্ষে নির্বাচনী প্রচারের সময় অভিনেতা পরেশ রাওয়াল বলেছেন, ‘‘গ্যাসের দাম বাড়লে কাল কমে যাবে। একসময়ে লোকে চাকরিও পাবে। কিন্তু রোহিঙ্গারা অন্য দেশ থেকে ঢুকে আপনার চারপাশে ডেরা বাঁধবে। যেমন দিল্লিতে হচ্ছে। তখন গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে কী করবেন? বাঙালিদের মাছ রেঁধে খাওয়াবেন?’’ সোশাল মিডিয়াতে পরেশ রাওয়ালের ভাষণের ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে। মহম্মদ সেলিম কলকাতা পুলিশের কাছে এই ভিডিও লিঙ্ক পাঠিয়ে অভিযোগ করেছেন, সোশাল মিডিয়াতে এই বিদ্বেষমূলক ভাষণ ছড়িয়ে পড়েছে।
সেলিম লিখিত অভিযোগে বলেছেন, বাঙালি ও সমাজের অন্যান্য অংশের মধ্যে সম্পর্ক বিষিয়ে দিতে অভব্য মন্তব্য করা হয়েছে বাঙালিদের বিরুদ্ধে দাঙ্গায় উসকানি দিতে। পরেশ রাওয়াল তাঁর মন্তব্যে এমন ইঙ্গিত করেছেন যেন সব বাঙালিই বিদেশি অথবা বেআইনি অনুপ্রবেশকারী। এভাবে সব বাঙালির বিরুদ্ধেই ঘৃণা সঞ্চার করা হয়েছে। ভিডিও’টির কমেন্ট অংশে পোস্টগুলি লক্ষ্য করলেই বোঝা যাচ্ছে যে, এই মন্তব্য কতখানি বাঙালি-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। এরাজ্যের বাইরে বহু বাঙালি বসবাস করেন, আমার আশঙ্কা তাঁদের অনেকেই এই মন্তব্যের কারণে আক্রমণের শিকার হতে পারেন।
Comments :0