‘শিলিগুড়ি আমাদের গর্বের শহর, রক্ষা করো এই শহরের ঐতিহ্য, শান্তি সম্প্রীতির পরিবেশ’। এই আহ্বান জানানো হলো বামপন্থী দল সমূহের মিছিল থেকে। 
সোমবার বিকেলে শিলিগুড়িতে বাঘাযতীন পার্কের সামনে থেকে বিভাজনের রাজনীতি রুখে দেবার স্লোগানে সোচ্চার হয়ে দার্জিলিঙ জেলার বামপন্থী দলসমূহের ডাকে মিছিল বের হয়। তীব্র দাবদাহকে উপেক্ষা করে সম্প্রীতির আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদিন বাঘাযতীন পার্ক থেকে অসংখ্য মানুষ মিছিলে পা মিলিয়েছেন।  
মিছিলে হেঁটেছেন সিপিআই(এম)’র প্রবীণ নেতা অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকার, দার্জিলিঙ জেলা সম্পাদক সমন পাঠক, আরএসপি’র তাপস গোস্বামী, সিপিআই(এমএল)’র অভিজিৎ মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লকের অনিরুদ্ধ বসু, সিপিআই’র পার্থ মৈত্র, সিপিআইএমএল (এনডি) পলান রায়, সিপিআই(এমএল)-কানু সান্যালের পক্ষে দীপু হালদার প্রমুখ। বাঘাযতীন পার্কের সামনে থেকে মিছিলটি বেরিয়ে কোর্টমোড়, হাসপাতাল মোড়, হাসমিচক হয়ে হিলকার্ট রোড ধরে এগিয়ে যায়। সেবক মোড় পাড় করে এলাকার বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে মিছিলের সমাপ্তি ঘটে। মিছিলে শিক্ষক, লেখক, শিল্পী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। 
সমন পাঠক বলেন, গত ৩০ মে মাটিগাড়ার মাংস বিক্রেতাকে মারধর করে তাঁর গাড়ি পুড়িয়ে দেবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ি শহর ও গ্রামাঞ্চলে সাম্প্রদায়িক শান্তি সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস। এই দুই দলের অশুভ আঁতাত শহরকে অশান্ত করার চেষ্টা করে। পুলিশ প্রশাসন উদাসীন ভূমিকা নিয়েছে। দার্জিলিঙ জেলার একটা ঐতিহ্য রয়েছে। কোনভাবেই এই জেলার শান্তি সম্প্রীতিকে নষ্ট হতে দেব না। সমস্ত অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমরা আজকে রাস্তায় নেমে সম্প্রীতি পক্ষে মিছিল করেছি। 
অশোক ভট্টাচার্য এদিন বলেন, শিলিগুড়িতে হিন্দু-মুসলমান সবাই মিলেমিশে বসবাস করেন। কখনও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। সম্প্রতি শিলিগুড়িতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নামে বিজেপি দুষ্কৃতীরাজ প্রতিষ্ঠা করেছিল। এটা শিলিগুড়ি শহরের অতীত ইতিহাস বিরুদ্ধ। সরকার-পুলিশ প্রয়োজনীয় ভূমিকা নেয়নি। তৃণমূল, বিজেপি, আরএসএস কার্যত এক অবস্থান নিয়েছে। এরা কোথাও প্রতিবাদ করেনি। বামপন্থীরাই রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছে, মানুষকে সচেতন করে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। জীবেশ সরকার বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসও গোপনে সমর্থন জোগাচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার পক্ষে। শিলিগুড়িতে ধর্মঘটের নাম করে সাম্প্রদায়িক উন্মাদনার পরিবেশ কায়েম করা হয়েছে। এটা শিলিগুড়ির ঐতিহ্য বিরোধী। ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা দিতেই আজকের মিছিলে হাঁটছি।