তৃণমূলের লাগামহীন সন্ত্রাস ও গোষ্ঠী কোন্দলে অশান্ত দিনহাটা। সীমাহীন আতঙ্কে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর এই বিধানসভা এলাকার সাধারণ মানুষ। তার অঙ্গুলি হেলোনেই সন্ত্রাস প্রতিদিন প্রতিনিয়ত ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ নীরবতার পর অবশেষে অশান্ত দিনহাটা শান্ত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হলো পুলিশ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ২৬ জন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে সুয়োমোটো মামলা করলেন দিনহাটা পুলিশ স্টেশনের এসআই বিমল সিং।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহের ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার দিনহাটার ভিলেজ-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আমবাড়ি বাজারে মহামিছিল করে তৃণমূল কংগ্রেস। মিছিল করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা, এই মিছিল থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বাড়ি বাড়ি হামলা ও ভাঙচুর লুট চালায় এই মিছিলে অংশ নেওয়া তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। তৃণমূল বিরোধী বলে এলাকায় পরিচিত বিদ্যুৎ সরকার সহ এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়িতে কার্যত লুটতরাজ চালায় এই দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। ঘরের আসবাব থেকে শুরু করে আলমারি, রান্নার সামগ্রী, বাসন কোন কিছুই ভাঙচুর করতে বাকি রাখেনি তারা। এমনকি ঘরে থাকা গহনা সহ টাকাও ছিনতাই করেছে এই তৃণমূল দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ আর এই সব ঘটনাই ঘটেছে পুলিশের চোখের সামনে পুলিশ বাধা দিতে গেলে তাদের ওপর চড়াও হয় শাসকদলের এই দুষ্কৃতীরা, এছাড়াও পুলিশকে লক্ষণ রেখা টেনে দেওয়া হয়।
আর এরপরই সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় পুলিশকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বাহিনী নিয়ে এলাকায় ছুটে যান কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। রবিবার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত ১৩ জনকে।
এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ২৬ জনের নামে সুয়মোটো মামলা করে পুলিশ। এই মামলায় যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তারা অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক বলেও উল্লেখ্য করেছে পুলিশ। সোমবার ধৃত ১৩ জন দুষ্কৃতীকে দিনহাটা সিজিএম আদালতে পেশ করা হলে তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
এই প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় এদিন বলেন, কোচবিহার জেলা শান্তিপ্রিয় জেলা, আর এই জেলার শান্তি বিঘ্নিত করে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর দিনহাটায় প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসের বাতাবরণ, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ, গণতন্ত্র হরণ, ভোট লুট নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে সেখানে রাজ্যের এক মন্ত্রী রয়েছেন, তাই তার বিধানসভা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব তারও। কিন্তু তিনি দাঁড়িয়ে থেকে সন্ত্রাসকে মদত দিচ্ছেন। আসলে কোচবিহার জেলায় দ্বিতীয় অনুব্রত মণ্ডল তৈরি হয়েছে। এই সন্ত্রাস সাধারণ মানুষ মেনে নেবেন না।
তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন শাসক দলের দলদাসে পরিণত হলে তার অনিবার্য পরিনিতি হচ্ছে আক্রমণের মুখে পড়তে হয় তাদেরকেও, এই ঘটনা তার প্রমাণ। আর পুলিশ এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, এটা ভালো বিষয়। পুলিশের বিলম্বিত বোধয় হয়েছে। পুলিশ ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে তৃণমূল আসলে গুন্ডাদের দল।
Comments :0