সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি ভাঙার দায় ইরান এবং ইজরায়েল দু’দেশের ওপরই চাপালেন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার গভীর রাতে ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষ বিরতি হচ্ছে বলে ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প।
মঙ্গলবার ইজরায়েল চুক্তি ভাঙার অভিযোগ তুলে ইরানে বোমা ফেলে ইজরায়েল। কিন্তু ইরান আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে পরিষ্কার জানিয়েছে যে চুক্তি তারা ভাঙেনি। এদিন সকালেই ইরানের বিদেশ মন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়ে দেন যে সংঘর্ষ বিরতি মানতে দেশ তৈরি। সেই সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র তৈরির মিথ্যা অভিযোগ তুলে ইরানের ওপর ইজরায়েল এবং পরে আমেরিকার আক্রমণের কড়া বিরোধিতাও করেছে ইরান। 
ট্রাম্প এদিন ইজরায়েলকে বলেছেন ইরানের ওপর বোমা না ফেলতে। নিজের মালিকানাধীন সোশাল মিডিয়া ‘ট্রুথ সোশাল’-এ ট্রাম্প পোস্টে বলেছেন, ‘‘ইজরায়েল পাইলটদের ফেরাও। এরপরও ইরানে বোমা ফেললে সংঘর্ষবিরতি চুক্তির গুরুতর লঙ্ঘন হবে।’’
আন্তর্জাতিক স্তরে মধ্য প্রাচ্যে ট্রাম্প নিজের কর্তৃত্ব দেখানোর না কৌশল নিলেও ঘটনাক্রম আমেরিকার দুর্বলতা স্পষ্ট করেছে। পুরোপুরি আমেরিকার মদতেই গত ১৩ জুন ইরানের ওপর হামলা চালায় ইজরায়েল। পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ তুললেও আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থা আইএইএ পর্যন্ত নির্দিষ্ট তথ্য হাজির করতে পারেনি। এরপর ইরান পালটা হানা শুরু করে। ইজরায়েলের রাজধানী তেল আভিভ এবং হাফিয়া শহর সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়ে ইরানের হানায়। ইজরায়েলের বহু প্রচারিত আকাশ সুরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁপা আওয়াজ ধরা পড়ে যায়। ইজরায়েলের হামলায় ইরানেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৬শো নাগরিক নিহত হয়েছে।
আমেরিকা গত রবিবার যুদ্ধে যোগ দিয়ে ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্র নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার দাবি জানায়। তবে দু’দিন পরও আমেরিকা সেই দাবির পক্ষে প্রমাণ দিতে পারেনি। উলটে সোমবার রাতে মদ্য প্রাচ্যের কাতারে আমেরিকার সবচেয়ে বড় সেনা ঘাঁটিতে জবাবী হামলা চালায় ইরান। 
তার কয়েক ঘন্টা পর, গভীর রাতে সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা করেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস জানাচ্ছে মঙ্গলবার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ট্রাম্প। গাজা এবং পরে ইরানে ইজরায়েলের সেনা অভিযান নেতানিয়াহুর পক্ষে নোটেই সুখকর হয়নি। দেশেই বিক্ষোভের মুখে তিনি।  
নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথার পর ট্রাম্প আবার লিখেছেন, ‘‘ইজরায়েল ইরানে আর আক্রমণ চালাবে না। সব যুদ্ধ বিমান মুখ ঘুরিয়ে দেশে ফিরছে। সংঘর্ষবিরতি জারি আছে।’’