Villagers protest

বঁটি -ঝাঁটা -কাটারি হাতে ভোট লুট রুখলেন মহিলারা

রাজ্য পঞ্চায়েত ২০২৩

Villagers protest কাঁথি ২ ব্লকে ভোট বয়কট দুষ্কৃতীদের রুখতে বঁটি ঝাঁটা কাটারি হাতে বিক্ষোভ


মায়ের পেটে লাথি। শিশুদের ছুড়ে ফেলা, বাড়ির ভিতরে ঢুকে তৈরি খাওয়ারে জল ঢেলে দেওয়া। বাসনপত্র ভাঙচুর। একের পর এক বাড়ি, গাড়ি, মটর বাইক ভেঙে পুকুরে ফেলে দিয়েছে শনিবার ভোট গ্রহণ চলাকালীন। গ্রামবাসীদের অপরাধ ছিল একটাই ছাপ্পা ভোট দিতে দেয়নি তৃণমূল বিজেপি’র ভোট লুটেরাদের। ব্যালট বাক্স আটকে রেখে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৫৫ আমতলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৯ নম্বর বুথের গ্রামবাসীরা। ছাপ্পা ব্যালট বাক্স জলে ফেলে দেওয়া হয়।

গত শনিবার হার নিশ্চিত জেনেই ভোট লুটের জন্য লোক পাঠিয়েছিল তৃণমূলের নেতা শেখ আনসার। গ্রামের মানুষ ব্যালট বাক্স আটকে রেখে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। ছাপ্পা ব্যালট বাক্স জলে ফেলে দেওয়া হয়। ধরে ফেলে শেখ আয়ুখ কে। তার বাড়ি অন্য এলাকায়। বাড় চন্ডীভেটি গ্রামে। আয়ুখ বলেছিল, শেখ আনসার তাদের ছাপ্পা দেয়ার জন্য পাঠিয়েছি। তৃণমূল, বিজেপি, সিপিআই(এম) প্রার্থী এবং তাদের এজেন্টরা জানান, একদল দুষ্কৃতী হাতে লাঠি, রড, পিস্তল নিয়ে বুথে তাদের উপর চড়াও হয় ৮ জুলাই ভোট গ্রহণের দিন। অভিযোগ তাঁদের মারতে মারতে বুথ থেকে বের করে দেয়। তারপর ছাপ্পা চলে ছাপ্পা ভোট। গ্রামের মানুষ প্রতিরোধ করে। ব্যালট বাক্স জলে ফেলে দেয়। মানুষ জোটবদ্ধ হয়ে তাড়া করে দুষ্কৃতীদের। 
ভোট লুটের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার খবর পেয়েই আনসার শেখ ৪০ থেকে ৫০ জনের দুষ্কৃতী বাহিনী পাঠিয়ে দেয় ঘটনাস্থলে। তারা এসে বাড়ি গাড়ি বাইক ভাঙচুর চালায়। মেয়েদের পেটে লাথি মারে।  চুরমার করে দেয় একের পর এক ঘর বাড়ি। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি গরীবঅসহায় পঞ্চানন দাস, কানাই মন্ডলের চায়ের দোকান ভেঙ্গে চুরমার করে দেয় তৃণমূলের জহ্লাদবাহিনী। 



ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়ায়নি প্রশাসন বা বর্তমান ক্ষমতাসীন তৃণমূলের বিদায়ী সহ-সভাপতি, বর্তমান জেলে পরিষদের প্রার্থী। সকলেই নীরব ছিল। সেই ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তার অভাব বোধ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। জোটবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধের অঙ্গীকার করেন। 
রবিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশন ওই কেন্দ্রে পুনঃনির্বাচন ঘোষণা করেন। সকালে পাঁচটায় আটজন সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী সহ ভোট কর্মীরা পৌঁছে যান পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দেশপ্রাণ ব্লকে ৫৫ নং আমতলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ,আমতলী অঞ্চলের ১৯ নম্বর বুথে। শনিবারের ঘটনার পরিপেক্ষিতে গ্রামের মানুষ ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে একটি আবেদনপত্র প্রিজাইডিং অফিসার কমল বেরার হাতে তুলে দেন। গ্রামের রাস্তার মোড়ে মোড়ে মহিলারা ঝাঁটা ,বটি হাতে কেউ বসে কেউ দাঁড়িয়ে। পুরুষ যুবকেরা হাতের রড কাটারি তলোয়ার নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন ,যাতে ফের কোন ছাপ্পা বাহিনী ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ  করতে না পারে। দুপুর সড়ে বারোটা নাগাদ দেশপ্রাণ ব্লকের বিডিও আসেন ঘটনাস্থলে এসে ভোট দেওয়ার আবেদন করেন গ্রামবাসীদের। কিন্তু গ্রামের মানুষ এককাট্টা, অনড়। সকলেই এক বাক্যে বলেন গ্রামের শান্তি চাই। দুষ্কৃতীদের আটক করে শাস্তি দিতে হবে এবং গাড়ি বাড়ি ঘর বাইক ভাঙচুর করে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি করেছে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। পাশাপাশি রাস্তা আটকে শান্তি চাই ,শাস্তি চাই, ক্ষতিপূরণের দাবি তুলে শ্লোগান তুলেন শিখা সাউ, রাধারানী পাত্র ,গৌরী গিরি ,শেফালী সাউ, প্রতিমা মন্ডল এর মত শত শত মহিলা, বটি কাটারি ঝাঁটা উঁচিয়ে। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কেউ ভোট কেন্দ্রের ধারেপাশে যেতে পারেনি। 

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৩১ টি বুথে পুনঃনির্বাচন ঘোষণা করেছেন নির্বাচন কমিশন তার মধ্যে কাঁথি ২ দেশপ্রাণ  ব্লকে দশটি বুথে পুণ:নির্বাচন।

 

Comments :0

Login to leave a comment