Chamoli Avalanche Global Warming

অসময়ে ভারী তুষারপাত, চামোলির বিপর্যয়েও উদ্বেগ হিমালয়ের উষ্ণায়ন ঘিরে

জাতীয়

আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করা হচ্ছে চামোলিতে।

বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বারবার হিমালয়ে অস্বাভাবিক মাত্রায় তুষারঝড় এবং ধস হচ্ছে। চামোলিতে ভয়াবহ তুষারধসের ঘটনায় এমনই মতামত জানাচ্ছেন পরিবেশবিদদের একাংশ। 
শুক্রবার উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় বড় মাত্রায় তুষারধসে মোট ৫৭ জন শ্রমিক চাপা পড়েন। বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন বা বিআরও’র প্রকল্পে কাজ করছিলেন এই শ্রমিকরা। যার মধ্যে শনিবারও ৫ শ্রমিক আটকে রয়েছেন তুষার স্তূপের তলায়। ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বাকিদের। তবে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই আবহাওয়ার খামখেয়ালি হওয়ার কারণ কী? বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, বিশ্ব উষ্ণায়নের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে এই বিপর্যয়ে। তাঁরা বলছেন, উত্তরাখণ্ড সহ উত্তর ভারত জুড়ে এই বছর শীত প্রায় শুষ্ক ছিল। কিছু জায়গায় এক বা দুই দিন ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছিল, তবে এই বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের মাত্র ৯ শতাংশ ছিল। সাধারণত, উত্তরাখণ্ডে ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু এই বছর, মাত্র ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
২৭ ফেব্রুয়ারি যখন বৃষ্টি শুরু হয়, চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে উত্তরাখণ্ডে প্রায় ৩৮ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছিল, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১৩৩৯ শতাংশ বেশি। পুরো মরশুমে বৃষ্টিপাতের পার্থক্য ৯১ শতাংশ থেকে ৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু এরপরও ২৮ ফেব্রুয়ারি দিনভর ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়।
উত্তরাখণ্ডের উদ্যানবিদ্যা ও বনায়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রধান এসপি সতী মনে করিয়েছেন যে আগে জানুয়ারি এবং ডিসেম্বরে হিমালয় অঞ্চলের এই অংশে প্রচুর তুষারপাত হতো। কিন্তু তার বদলে তুষারপাত হচ্ছে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে। এ সময় মাটি তুলনায় গরম থাকে। তুষারের ঘনত্বও কম হয়। ফলে বরফ জমিতে জমে থাকে না, গড়াতে শুরু করে। দ্রুত তুষারধস হতে থাকে। 
এর আগে ২০২১’র মার্চে তুষারধসে ধৌলিগঙ্গা নদীর কাছে ১০ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। ওই বছরই ৭ ফেব্রুয়ারি ঋষিগঙ্গার বিপর্যয়ে তপোবনে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে নিযুক্ত প্রায় একশো শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। 
সতী বলছেন, হিমালয় তো বেটই, গোটা বিশ্বেই উষ্ণায়নের ফলে তুষারধস বাড়ছে। দ্রুত গলছে হিমবাহ। 

Comments :0

Login to leave a comment